ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় সোনিয়া ও রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
Published: 16th, April 2025 GMT
ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় কংগ্রেস নেতা সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। বিস্তারিত পর্যালোচনার পর আজ মঙ্গলবার বিশেষ আদালত এই অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন।
সোনিয়া ও রাহুলের নাম অভিযোগপত্রের এক ও দুই নম্বরে রয়েছে। তাঁদের পাশাপাশি বেআইনি অর্থ পাচারের অভিযোগে এতে আসামি হিসেবে নাম রয়েছে ওভারশিজ কংগ্রেস নেতা শ্যাম পিত্রোদা ও সুমন দুবের।
কংগ্রেস নেতাদের বিরুদ্ধে ইডি এই অভিযোগপত্র দাখিল করেছিল ৯ এপ্রিল। বিশেষ বিচারক পর্যালোচনার পর আজ তা গ্রহণ করেন।
বেআইনি আর্থিক লেনদেন প্রতিরোধ আইনে (পিএমএলএ) আনা এই মামলায় এই প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল করা হলো। দিল্লির রাউজ অ্যাভিনিউয়ের বিশেষ পিএমএলএ আদালতে এই মামলার শুনানি হবে ২৫ এপ্রিল। বিশেষ আদালতের বিচারপতি বিশাল গগনে এ কথা জানিয়েছেন।
গত সপ্তাহের শুক্রবার ইডি এই মামলায় ন্যাশনাল হেরাল্ডের ৬৬১ কোটি স্থাবর সম্পত্তি দখলের জন্য নোটিশ জারি করেছিল। দিল্লি ও লক্ষ্ণৌয়ে অবস্থিত ন্যাশনাল হেরাল্ড ও অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেডের (এজেএল) দপ্তরগুলো খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দেয় ইডি। মুম্বাই অফিসের ভাড়াটেদের নির্দেশ দেয় ভাড়ার টাকা ইডিতে জমা দিতে। ওই নোটিশ জারির তিন দিনের মধ্যেই সোনিয়া, রাহুলসহ অন্য কংগ্রেস নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হলো।
স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, গান্ধী পরিবারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ইডি আটঘাট বেঁধে নেমেছে। আজ সকালেই হরিয়ানায় এক জমি কেনাবেচা মামলায় কংগ্রেস সংসদ সদস্য প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর স্বামী রবার্ট ভদ্রকে জেরার জন্য ডেকে পাঠিয়েছিল ইডি। টানা ছয় ঘণ্টা জেরা করার পর আগামীকাল বুধবারও তাঁকে জেরার জন্য হাজির হতে বলা হয়েছে।
একই দিনে বিশেষ পিএমএলএ আদালতের বিচারক সোনিয়া ও রাহুলের বিরুদ্ধে দাখিল করা অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। ২৫ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন কেস ডায়েরি দাখিল করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে ইডির তদন্ত কর্মকর্তা ও আইনজীবীদের।
জওহরলাল নেহরু প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল হেরাল্ড পত্রিকা আগাগোড়াই কংগ্রেস পরিচালিত। ২০০৮ সালে ওই ইংরেজি দৈনিকের প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৬ সালে এটির ডিজিটাল সংস্করণ শুরু হয়।
বিজেপি নেতা সুব্রামানিয়াম স্বামী ন্যাশনাল হেরাল্ডের আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ এনে মামলা করেছিলেন ২০১২ সালে। তাঁর অভিযোগ ছিল, গান্ধী পরিবার কংগ্রেস দলের তহবিল ব্যবহার করে এজেএল সংস্থার (যারা ওই পত্রিকার মালিক) কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি দখল করেছে।
স্বামীর অভিযোগ, এজেএলের ৫ হাজার কোটি টাকার স্থাবর সম্পত্তি ইয়ং ইন্ডিয়ান নামের এক সংস্থা কিনে নেয় মাত্র ৫০ লাখ টাকায়। সেই ইয়ং ইন্ডিয়ান সংস্থার মোট শেয়ারের ৭৬ শতাংশের মালিক সোনিয়া ও রাহুল। দুজনেরই শেয়ার ৩৮ শতাংশ করে। বাকি ২৪ শতাংশ শেয়ার ছিল তৎকালীন কংগ্রেস কোষাধ্যক্ষ মোতিলাল ভোরা, অস্কার ফার্নান্দেজ, সুমন দুবে ও শ্যাম পিত্রোদার নামে।
অধিগ্রহণের ফলে এজেএলের ৯০ কোটির দেনা যেমন ইয়ং ইন্ডিয়ানের ওপর বর্তায়, তেমনই দিল্লি, মুম্বাই, লক্ষ্ণৌ, পাটনা, ভোপাল, ইন্দোরসহ বিভিন্ন শহরে থাকা স্থাবর সম্পত্তির অধিকারও চলে আসে তাদের হাতে। অধিগ্রহণের পরই কংগ্রেস এজেএলের অনাদায়ী ৯০ কোটি ঋণ মওকুফ করে দেয়।
স্বামীর অভিযোগ, বিনিময়ে সোনিয়া–রাহুলের কাছে চলে আসে পাঁচ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি।
এই মামলায় ২০১৪ সাল থেকে সোনিয়া ও রাহুল জামিনে রয়েছেন। অভিযোগপত্র দাখিলের পর এবার শুরু হবে বিচারপ্রক্রিয়া।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ রহণ
এছাড়াও পড়ুন:
নোয়াখালীতে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাকে আশ্রয় দেওয়ায় তাঁতী দলের নেতা বহিষ্কার
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আলাউদ্দিনকে নিজ বাড়িতে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের এক নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কৃত মোহাম্মদ সৈকত উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়ন তাঁতী দলের সভাপতি ছিলেন। আজ শুক্রবার বিকেলে জেলা তাঁতী দলের সদস্যসচিব মোরশেদ আলম প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে জেলা তাঁতী দলের আহ্বায়ক ইকবাল করিম সোহেল ও সদস্যসচিব মোরশেদ আলমের যৌথ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বহিষ্কারের আদেশ দেওয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মোহাম্মদ সৈকতকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি মূল্যায়নে ব্যর্থ হওয়ায় হাতিয়া উপজেলা তাঁতী দলের দক্ষিণ কমিটিকে সতর্ক করা হয়েছে।
দলীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে হাতিয়া উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের জোড়খালী গ্রামে সৈকতের বাড়ি থেকে সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে হাতিয়া থানা–পুলিশ। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ১০টি ককটেল উদ্ধার করা হয়। আলাউদ্দিন ও মোহাম্মদ সৈকত সম্পর্কে ফুফা–ভাগনে।
এ বিষয়ে মোহাম্মদ সৈকত প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে অনেকগুলো পরিবার থাকে। আমি ব্যবসার কাজে দিনের বেশির ভাগ সময় বাইরে থাকি। আলাউদ্দিন কখন বাড়িতে এসেছেন, তা আমার জানা নেই। আমাদের ঘর থেকে তাঁর শ্বশুরদের ঘর অনেক দূরে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাকে জড়ানো হয়েছে।’
নোয়াখালী জেলা তাঁতী দলের সদস্যসচিব মোরশেদ আলম বলেন, আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাকে আত্মগোপনে থাকার সুযোগ করে দেওয়ায় মোহাম্মদ সৈকতকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের তাঁতী দল কমিটিকেও সতর্ক করা হয়েছে।
আরও পড়ুনহাতিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে পালিয়ে থাকা সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গ্রেপ্তার৩১ জুলাই ২০২৫