ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কর্মরত বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের (বিজিএফসিএল) চার কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিজিএফসিএলের এক কর্মকর্তাকে শারীরিক লাঞ্ছনার ঘটনায় অসদাচরণের অভিযোগে মঙ্গলবার তাঁদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

বরখাস্ত হওয়া চারজনই বিজিএফসিএলের শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) পদধারী নেতা। তাঁরা হলেন বিজিএফসিএলের তিতাস গ্যাসক্ষেত্রের (দক্ষিণ) বিভাগের অপারেটর-১ (প্ল্যান্ট) মো.

জামাল হোসেন, তিতাস গ্যাসক্ষেত্রের অপারেটর-১ (প্ল্যান্ট) মো. শাহনুর আলম, পুরকৌশল বিভাগের মো. মমিনুল ইসলাম, তিতাস গ্যাসক্ষেত্রের তিনটি মূল্যায়ন-কাম উন্নয়ন প্রকল্পের ফোরম্যান (চালক) মো. মোস্তাক আহমেদ। এঁদের মধ্যে মোস্তাক বিজিএফসিএলের সিবিএর সহসাংগঠনিক সম্পাদক, মমিনুল সমাজকল্যাণ সম্পাদক, জামাল মহিলাবিষয়ক সম্পাদক এবং শাহনুর তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক।

বিজিএফসিএল সূত্রে জানা যায়, ১৩ এপ্রিল বিজিএফসিএলের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. মনজিল হাসানকে সিবিএর নেতারা লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনায় মনজিল হাসান বিজিএফসিএলের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মো. হাবীবুর রহমানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় জিএম (প্রশাসন) স্বাক্ষরিত পৃথক চিঠির মাধ্যমে ওই চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
বরখাস্তের পর থেকে মনজিল হাসান নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে উল্লেখ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

জিডি ও লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ১৩ এপ্রিল সকালে দাপ্তরিক কাজে বিজিএফসিএলের কম্প্রেসর বিভাগে ছিলেন সহকারী ব্যবস্থাপক মনজিল হাসান। সকাল পৌনে ১০টার দিকে পাঁচ থেকে ছয়জন কর্মচারীর একটি দল সেখানে প্রবেশ করেন। তাঁদের মধ্যে সিবিএর নেতা মোস্তাক, মমিনুল, জামাল ও শাহানুর ছিলেন। তাঁরা মনজিলকে ঘিরে ধরে আসন গ্রহণ করেন। সিবিএ নেতা মোস্তাক মেকানিকদের খসড়া টাইম শিট দেখিয়ে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ওভারটাইম ১০ ঘণ্টা কেটে ৮ ঘণ্টা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তাঁকে (মনজিলকে) জেরা করেন। বিষয়টি নিয়ে সেখানে মনজিলের সঙ্গে কর্মচারীসহ সিবিএর নেতাদের কথা-কাটাকাটি হয়। মমিনুল ও জামাল একপর্যায়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের গালাগাল করেন। ওভারটাইম কেটে দেওয়ার বিষয় নিয়ে কথা-কাটাকাটি ও বিজিএফসিএলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের গালাগালির একপর্যায়ে সিবিএর ওই চার নেতা মনজিলের গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধের চেষ্টা করেন। সেখানে আরও কর্মচারী জড়ো হন। উচ্চবাচ্য শুনে উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মোহাম্মদ আরিফুল হক গিয়ে মনজিলকে উদ্ধার করেন। কর্মচারীরা দ্বিতীয় দফায় এসে মনজিলকে হুমকি দিয়ে যান এবং বলেন, মেকানিকেরা প্লান্ট বা ওয়ার্কশপে উপস্থিত না থাকলেও দৈনিক ৪ ঘণ্টা ও মাসিক ১০৪ ঘণ্টা ওভারটাইম দিতে হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুই কর্মকর্তা বলেন, কর্মচারী ও সিবিএর নেতারা কাজ না করেও কর্মঘণ্টায় ওভারটাইম উল্লেখ করতে যান। নিয়ম মানতে বললেও তাঁরা শোনেন না। প্রতিবাদ করলে দপ্তরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে কর্মকর্তাদের গায়ে হাত দেওয়াসহ শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। তাঁদের দাপটে কর্মকর্তারা এখনো অসহায়।

অভিযোগের বিষয়ে সিবিএর সহসাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। অবৈধ কোনো দাবি উত্থাপন করিনি। শুক্রবার অফিস বন্ধ থাকে। ওভারটাইম করলে আগে আমরা একবার স্বাক্ষর করতাম, কিন্তু তাঁর বক্তব্য তিনবার স্বাক্ষর করতে হবে। বিষয়টি নিয়ে ডিজিএমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের নেতার সঙ্গে তিনি খারাপ আচরণ করেছেন। এখন আমাদের ফাঁসানোর জন্য মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন।’

এ বিষয়ে বিজিএফসিএলের মহাব্যবস্থাপক মো. হাবীবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযোগের পূর্ণ তদন্ত হবে। এটি প্রাথমিক শাস্তি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মনজ ল হ স ন স ব এর ন ত কর মকর ত বরখ স ত

এছাড়াও পড়ুন:

সমতায় শেষ বার্সেলোনা-ইন্টারের ৬ গোলের রোমাঞ্চকর থ্রিলার

স্পোর্টস ডেস্ক
ছয় বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে ফিরেছে বার্সেলোনা। প্রতিপক্ষ এমন একটি দল, যারা শেষ তিন ম্যাচে হেরে কিছুটা কোণঠাসা। কিন্তু তারপরও ম্যাচটি হলো ড্র, জয় আসেনি। দারুণ দৃঢ়তা দেখিয়ে বার্সেলোনার মাঠ থেকে সমতা নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ইন্টার মিলান। বুধবার রাতে মন্তুজুইকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালের প্রথম লেগের ম্যাচে ইন্টার মিলানের সঙ্গে ৩-৩ গোলে ড্র করেছে বার্সেলোনা।

বিস্তারিত আসছে..

সম্পর্কিত নিবন্ধ