ইতালিতে চাকরির কথা বলে অর্থ আত্মসাৎ, দিশেহারা ১০ যুবক
Published: 18th, April 2025 GMT
নবীগঞ্জ উপজেলার করগাওঁ ইউনিয়নের পুরুষোত্তমপুর গ্রামের নোহেল আহমেদসহ ১০ যুবকের কাছ থেকে ইতালিতে ভালো চাকরির লোভ দেখিয়ে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে একই ইউনিয়নের গুমগুমিয়া গ্রামের নাজিম উল্লার ছেলে ইতালি প্রবাসী আক্কাছ মিয়া ও তার ভাই এবং স্ত্রীর বিরুদ্ধে।
উচ্চ সুদে ঋণের টাকা দিয়েও ইতালি যেতে না পেরে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগী নোহেল আহমেদসহ ১০টি পরিবার। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় একাধিকবার গ্রাম্য সালিশের মুরুব্বি, স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের দ্বারস্থ হয়েও কোনো সুরাহা হয়নি বলে জানান ভুক্তভোগীরা। তবে আক্কাছের ভাইয়ের মাধ্যমে ৭ লাখ টাকা ফেরত দিলে বাকি ১ কোটি ৯ লাখ টাকা উদ্ধার করা যায়নি।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন নোহেল আহমেদ।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার করগাওঁ ইউনিয়নের গুমগুমিয়া গ্রামের নাজিম উল্লার ইতালি প্রবাসী ছেলে আক্কাছ মিয়া, তার ভাই রফিক মিয়া, নাসির মিয়া, বশির মিয়া, সফিক মিয়া ও তার স্ত্রী আলপিনা বেগম পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে একই ইউনিয়নের পুরুষোত্তমপুর গ্রামের মৃত তোফাজ্জল হকের ছেলে নোহেল আহমেদকে ইতালিতে ভালো চাকরির সুযোগ-সুবিধা আছে, জনপ্রতি ১২ লাখ টাকায় ভিসা দেওয়া যাবে, সেই সাথে ভালো কোম্পানিতে চাকরির সুযোগের লোভ দেখিয়ে নোহেল আহমদের মাধ্যমে সে নিজেসহ ১০ জনের ইতালির ভিসার জন্য ১ কোটি ২০ লাখ টাকা পর্যায়ক্রমে প্রবাসী আক্কাছ মিয়াসহ তার পরিবারের কাছে প্রদান করেন। কিছু দিন পর আক্কাছ মিয়া তাদের নামে ইতালির ভিসা পাঠান। ওই ভিসাগুলো যাচাই-বাছাই করে অনলাইনে চেকিং করে দেখা যায় সব ভিসা জাল। জাল ভিসা পেয়ে অসহায় ওই যুবকেরা ও তাদের পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়ে। ভেস্তে যায় স্বপ্নের দেশ ইতালি যাওয়া। ভুক্তভোগীরা বারবার প্রতারক আক্কাছ মিয়া ও তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে সঠিক ভিসা বা টাকা ফেরত না পেয়ে সমাজপতিদের দ্বারে দ্বারে ধরনা দিচ্ছেন। এক পর্যায়ে ৭ লাখ টাকা উদ্ধার করলেও প্রায় ২/৩ বছর ধরে দেই দিচ্ছি বলে বাকি টাকা দেওয়া হচ্ছে না। এদিকে উচ্চ সুদে ঋণ করে এবং কেউ কেউ জায়গা জমি বিক্রি করে টাকা দেওয়ায় পথে বসেছেন।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী নোহেল আহমেদ বলেন, পূর্ব পরিচয়ের সূত্রে আক্কাছ মিয়া, তার ভাইয়েরা ও তার স্ত্রী মিলে আমাকে ভালো চাকরির লোভ দেখিয়ে ইতালি নেওয়ার স্বপ্ন দেখান। ফলে আমিসহ ১০ জনের পাসপোর্ট ও জনপ্রতি ১২ লাখ করে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা আমার মাধ্যমে প্রদান করি। টাকাগুলো আক্কাছ মিয়া, তার ভাইয়েরা ও তার স্ত্রী আলপিনা বেগমের কাছে পর্যায়ক্রমে দেওয়া হয়। টাকাগুলো নিয়ে ৩ মাসের মধ্যে ভিসা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ৬ মাস পরে ভিসা দিলেও তা জাল ভিসা। আমিসহ ১০টি পরিবার বর্তমানে ঋণের বোঝা নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
এ ব্যাপারে করগাওঁ ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহিদ বলেন, ইতালি যাওয়ার জন্য উল্লিখিত টাকা আক্কাছ মিয়া ও তার পরিবারের কাছে প্রদানের ঘটনা সত্য। আমরা অনেক চেষ্টা করে ৭ লাখ টাকা উদ্ধার করলেও বাকি টাকা উদ্ধার করতে পারিনি।
ভুক্তভোগীরা প্রবাসী প্রতারক আক্কাছ মিয়া ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ত র পর ব র র ন হ ল আহম দ প রব স চ কর র
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় গোলের থ্রিলারে জমজমাট ড্র বার্সেলোনা-ইন্টারের
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল মানেই উত্তেজনার পারদ চড়া—আর বার্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মিলে সেটিকে নিয়ে গেল অন্য উচ্চতায়। কাতালানদের ঘরের মাঠ অলিম্পিক স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে দর্শকরা উপভোগ করলেন এক দুর্দান্ত গোলবন্যার ম্যাচ। ম্যাচ শেষে ফল—৩-৩ গোলে ড্র।
মৌসুমের রেকর্ড ৫০ হাজার ৩১৪ দর্শকের সামনে ইউরোপীয় ফুটবলের এই মহারণে উভয় দলই তুলে ধরেছে আক্রমণাত্মক ফুটবল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের ইতিহাসে ১৯৯৯ সালের পর এটিই প্রথম ম্যাচ যেখানে ছয়টি গোল হয়েছে এবং শেষ হয়েছে ড্রয়ে।
ম্যাচ শুরু হতে না হতেই চমকে দেয় ইন্টার মিলান। ম্যাচের মাত্র প্রথম মিনিটেই ডেনজেল ডামফ্রিজের ব্যাকহিল গোল দলকে এগিয়ে দেন মার্কাস থুরাম। এরপর ২১ মিনিটে আবারও দিমারকোর কর্নার থেকে ফ্রান্সেসকো আকেরবির সহায়তায় শ্বাসরুদ্ধকর অ্যাক্রোব্যাটিকে ব্যবধান বাড়ান ডামফ্রিজ।
তবে ঘুরে দাঁড়াতে দেরি করেনি বার্সা। দুই মিনিট পরই ইয়ামাল ডান দিক থেকে একক নৈপুণ্যে দুর্দান্ত গোল করে ব্যবধান কমান। প্রথমার্ধ শেষের আগে পেদ্রির ফ্লিকে রাফিনিয়ার নিয়ন্ত্রণ এবং তাতে ফেরান তোরেসের শটে গোল করে ২-২ সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয়ার্ধে লাউতারো মার্টিনেজের ইনজুরির পর মাঠে নামেন মেহেদি তারেমি। ৬০ মিনিটে কর্নার থেকে হেড করে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ডামফ্রিজ। কিন্তু দ্রুতই গোল শোধ করে বার্সা—ছোট কর্নার থেকে রাফিনিয়ার শট লাগে পোস্টে, সেখান থেকে গোলরক্ষক সোমারের পিঠে লেগে ঢুকে পড়ে জালে—ফলাফল ৩-৩। ৭৫ মিনিটে হেনরিখ মিখিতারিয়ান গোল করে ইন্টারকে আবারও এগিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু ভিএআরের চোখে পড়ে সামান্য অফসাইড, বাতিল হয় সেই গোল।
এখন সবকিছু নির্ভর করছে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচের ওপর, যা হবে ৬ মে, মঙ্গলবার, ইন্টারের ঘরের মাঠ জিউসেপ্পে মিয়াজ্জায়। ওই ম্যাচেই জানা যাবে ফাইনালে কারা প্যারিস সেইন্ট জার্মেই ও আর্সেনালের মধ্যকার বিজয়ীর মুখোমুখি হবে।