মাকে আর ফোন করা হয়নি ‘যুদ্ধক্লান্ত’ তরুণের
Published: 19th, April 2025 GMT
‘ছেলে বলেছিল সে ক্লান্ত, এখন ঘুমাবে। কখন রাশিয়ার সেনারা ডাক দেয় বলা যায় না। ঘুম থেকে উঠে সকালে ফোন দিবে। কিন্তু ছেলে আর ফোন দেয়নি।’ বলছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের মোমেনা বেগম।
মোমেনা বেগমের ছেলে মোহাম্মদ আকরাম মিয়া (২২) রাশিয়ার পক্ষে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েছিলেন। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশি এক সহযোদ্ধা ফোন করে জানান, ইউক্রেন বাহিনীর হামলায় আকরাম নিহত হয়েছেন। এর পর থেকে কান্না থামছে না এই তরুণের মা–বাবার।
মোমেনা বেগম জানান, সর্বশেষ ১৩ এপ্রিল ছেলের সঙ্গে তাঁদের কথা হয়। আর ১৪ এপ্রিল তাঁর ছেলে মারা গেছেন। তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ কথা বলার সময় ছেলে বলেছিল পালাবার কোনো সুযোগ নেই। পালালে গুলি কইরা মেরে ফেলবে। ছেলে সেখান থেকে ফিরতে পারবে না বুঝতে পেরেছিল।’
মোহাম্মদ আকরাম মিয়ার বাড়ি আশুগঞ্জের লালপুর ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে আকরাম ছিলেন সবার বড়। পরিবারের আর্থিক সংকটে তাঁর পড়াশোনা দশম শ্রেণির পর আর এগোয়নি। ছোট বোন মারিয়া বেগমের (১৮) বিয়ে হয়েছে। ছোট ভাই মোহাম্মদ ফয়সাল (১৩) পঞ্চম শ্রেণিতে, বোন মারুফা আক্তার (৯) চতুর্থ শ্রেণিতে আর সবার ছোট ফাহিম মিয়া (৮) পড়ে দ্বিতীয় শ্রেণীতে। তাদের বাবা মোরশেদ মিয়া কৃষিকাজসহ গরু লালন পালন করেন।
মোহাম্মদ আকরাম হোসেন.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত
আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।
আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।
আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।
ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫