ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেওয়া আশুগঞ্জের আকরাম যেভাবে রাশিয়া যান
Published: 20th, April 2025 GMT
রুশ বাহিনীর হয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার এক তরুণের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তার এক সহযোদ্ধা মুঠোফোনে পরিবারকে এ তথ্য জানিয়েছেন। সহযোদ্ধার বরাত দিয়ে ওই যুবকের পরিবার জানিয়েছে, যে স্থানে সেখানে নিহত হয়েছে, সেখানে যাওয়া সম্ভব নয়।
জানা যায়, রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধে অংশ নিয়ে ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হন হোসেনপুর গ্রামের মো.
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার মো. আকরাম হোসেন কীভাবে রাশিয়ায় গিয়েছিলেন সে বিষয়ে বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিবারের খরচে নরসিংদীর একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে ওয়েল্ডারের কাজ শেখেন ২৫ বছর বয়সী আকরাম। পরে স্বজনের কাছ থেকে ঋণ করে প্রায় ৯ মাস আগে আকরামকে রাশিয়া পাঠান তার বাবা মোরশেদ মিয়া।
মোরশেদ মিয়া বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ, কৃষি কাজ করি। ছেলেকে ভালো ওয়েল্ডিংয়ের কাজ শিখিয়ে বিদেশ পাঠাইতে চাইছি, শিখছেও। পরে চায়না কোম্পানিতে জয়েন করার কথা। রাশিয়ায় যাওয়ার পর চায়না কোম্পানিতে চার মাস আমার পুতে কাজ করছে। সেখানে ওয়েল্ডার হিসেবে গেছে। কিন্তু ওয়েল্ডার হিসেবে না দিয়া তাকে হেলপার হিসাবে ছয়শো টাকা বেতনে কাজ দেওয়া হয়েছে।’
পরিবারের দাবি, যে চার মাস রাশিয়ায় চীনা একটি কোম্পানিতে কাজ করতেন আকরাম, সেখান থেকে নিয়মিত বেতনভাতা দেওয়া হতো না। খাওয়া নিয়েও ছিল সংকট।
নিহত আকরামের বাবা জানান, মূলত ওয়েল্ডার হিসেবে যাওয়ার পর সহযোগী হিসেবে কাজ করতে দেওয়া এবং বেতন কম দেওয়ার কারণে ওই চাকরিতে অনীহা তৈরি হয় তার। তিনি বলেন, ‘ঠান্ডা ও বরফের মধ্যে কাজ করতে দেওয়া হতো। ঠিকমতো বেতন দিতো না, ভাত দিতো না, রাশিয়ান খাবার দিতো।’
রাশিয়ায় চীনা কোম্পানিতে কাজ করার পর সেখানকার একটি গ্রুপের সঙ্গে আকরামের পরিচয় হয় বলে তার বাবা মোরশেদ মিয়া জানান। তিনি বলেন, ‘ওই গ্রুপের একজন লোক আকরামসহ সাতজন বাঙালি ছেলেকে রাশিয়ার মস্কো নিয়ে যায়। সেখানকার সেনাবাহিনীর মাধ্যমে কিছুদিন ট্রেনিংও দেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাদেরকে যুদ্ধের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় ইউক্রেন।’
আকরামের বাবা আরও বলেন, ‘আমি যখন জানতে পারলাম, ছেলেরে জিগাইলাম কেমনে কী গেলি ইউক্রেন? তখন ছেলে আমারে জানাইলো আমারে এদেশের নাগরিকত্ব দিবে এবং দুই বিলিয়ন টাকাও দিবে রাশিয়া সরকার। আমার ছেলেডারে লোভ-লালসা দেখাইয়া ইউক্রেনের যুদ্ধে নিয়া গেছে দালাল চক্র।’
গত দুই মাসে বেশ কিছুদিন পরপর অল্প সময়ের জন্য পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলতেন আকরাম। তখন সেখানকার ভীতিকর পরিবেশে থাকা ও যুদ্ধের সেই অভিজ্ঞতার কথাও পরিবারকে জানাতেন তিনি। এ সময় যুদ্ধের পোশাক পরা নিজের কিছু ছবিও পরিবারের কাছে পাঠান তিনি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র শ য় ইউক র ন য দ ধ আকর ম হ স ন ইউক র ন র পর ব র র আকর ম র ক জ কর
এছাড়াও পড়ুন:
শেরপুরে কৃষককে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ
শেরপুরের শ্রীবরদীতে সুদের টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে এক কৃষককে বেঁধে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে দহেরপাড় গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। ভুক্তভোগী মো. আকবর আলী রবিবার (২ নভেম্বর) শ্রীবরদী থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ পাওয়ার তথ্য গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন শ্রীবরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনোয়ার জাহিদ।
আরো পড়ুন:
নামাজরত বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, ৩ পুলিশ আহত
মুন্সীগঞ্জে ড্রেনের ভেতরে মিলল ২৩টি ককটেল, আটক ১
অভিযুক্তরা হলেন, দহেরপার গ্রামের মৃত নুজ বাউনের ছেলে আবু সামা ওরফে বুইজে (৬০), মৃত তরি মিয়ার ছেলে বনিজ উদ্দিন (৫০) ও মৃত ডায়ে শেখের ছেলে আব্দুল বারেক (৩০)।
ভুক্তভোগী আকবর আলীর বলেন, “প্রায় এক বছর আগে তিনি বারেকের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা সুদে নেন। চুক্তি অনুযায়ী তিনি প্রতি মাসে চার হাজার টাকা করে সুদও পরিশোধ করে আসছেন। সম্প্রতি মূল টাকা ফেরত দিলেও অতিরিক্ত আরো দুই হাজার টাকা দাবি করেন বারেক। এ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে অভিযুক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।”
তিনি বলেন, “গত বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পরিকল্পিতভাবে তারা আমার বাড়িতে প্রবেশ করে। তারা আমাকে লাঠিপেটা করে গুরুতর আহত করে। একপর্যায়ে আমাকে রশি দিয়ে বেঁধে টেনে-হিঁচড়ে আবু সামার বাড়িতে নিয়ে যায়। তার বাড়ির সামনের রাস্তার সিমেন্টের খুঁটির সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে নির্যাতন করে। পরে স্থানীয়রা আমাকে শ্রীবরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।”
শ্রীবরদী থানার ওসি আনোয়ার জাহিদ বলেন, “আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঢাকা/তারিকুল/মাসুদ