ছোট পিঁপড়ার দল দেখতে দারুণ লাগে। সারিবদ্ধ ও দলবদ্ধভাবে ঘুরে বেড়ায় পিঁপড়া। খুদে এই প্রাণী দিনরাত পরিশ্রম করে চলে। আর তাই তো যেখানেই মিষ্টি বা চিনিযুক্ত খাবার রাখুন না কেন, পিঁপড়া সেদিকে যাবেই। আপাতদৃষ্টে ক্ষুদ্র ও সাধারণ মনে হলেও পিঁপড়ার সমাজব্যবস্থা, যোগাযোগ ও সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা বিজ্ঞানীদের বিস্মিত করছে অনেক বছর ধরেই।
পিঁপড়াকে মানুষের চেয়েও সামাজিক জীব বলা হয়ে থাকে। কারণ, কঠিন পরিশ্রমের পাশাপাশি সুসংগঠিত একটি কলোনিতে বাস করে পিঁপড়া। প্রতিটি কলোনিতে একটি ‘রানি পিঁপড়া’ থাকে। রানি পিঁপড়াকে ঘিরে গড়ে ওঠে একেকটি কলোনি। আর শ্রমিক পিঁপড়া খাবার সংগ্রহ, বাসা তৈরি, রক্ষণাবেক্ষণসহ বাচ্চার যত্ন করে। সৈনিক পিঁপড়া কলোনিকে শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করে। শ্রম বিভাজনের মধ্য দিয়ে পিঁপড়ার কলোনিতে স্থিতিশীলতা দেখা যায়। পিঁপড়া একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ফেরোমন নামের রাসায়নিক সংকেত ব্যবহার করে। খাবারের সন্ধান, বিপৎসংকেত বা কলোনির সদস্যদের মধ্যে বার্তা প্রেরণের জন্য তারা বিভিন্ন ধরনের ফেরোমন নিঃসরণ করে। এই রাসায়নিক সংকেত এতটাই সুনির্দিষ্ট যে অন্যান্য পিঁপড়া সহজেই বার্তাটি বুঝতে পারে ও সেই অনুযায়ী কাজ করে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, পিঁপড়ার এই রাসায়নিক যোগাযোগব্যবস্থা তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে বেশ উন্নত রূপ।
পিঁপড়া তাদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে। খাবারের সন্ধানে যাওয়ার সময় বাধার সম্মুখীন হলে নতুন পথ তৈরি করার মতো কাজ খুব সহজে করতে পারে পিঁপড়ার দল। গবেষণায় দেখা গেছে, পিঁপড়ার স্মৃতিশক্তি বেশ উন্নত। তারা একবার খাদ্যের উৎসের সন্ধান পেলে সেই পথের তথ্য দীর্ঘ সময় মনে রাখতে পারে ও আবার সেখানে ফিরে যেতে পারে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, পিঁপড়ার মস্তিষ্কের গঠন ছোট হলেও তাদের নিউরনের সংযোগ অত্যন্ত কার্যকর। এর ফলে পিঁপড়া সহজেই শেখার পাশাপাশি মনে রাখতে পারে।
পৃথিবীর প্রায় সব পরিবেশেই পিঁপড়ার অস্তিত্ব দেখা যায়। মরুভূমির তীব্র তাপ থেকে শুরু করে শীতল বনভূমির প্রতিকূল পরিবেশেও নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে পিঁপড়া। এই অভিযোজনক্ষমতা পিঁপড়ার বুদ্ধিমত্তার আরেকটি প্রমাণ বলে মনে করা হয়।
সূত্র: ইএল পেইস ডটকম, সায়েন্স ডট অর্গ, সায়েন্টিফিক আমেরিকান
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘মাস্তান’কে ছাড়া রিয়ালের অ্যানফিল্ড–অভিযান এবং সালাহর রেকর্ডের হাতছানি
অ্যানফিল্ডে যাওয়ার ঠিক আগে হঠাৎ দুঃসংবাদ পেল রিয়াল মাদ্রিদ। লিভারপুলের বিপক্ষে আজ রাতে খেলতে পারবেন না ফ্রাঙ্কো মাস্তানতুয়োনো। দলের মেডিকেল বিভাগ জানিয়েছে, আর্জেন্টাইন এই মিডফিল্ডার ভুগছেন ‘স্পোর্টস হার্নিয়া’-তে। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কা লিখেছে, মাস্তানতুয়োনো কবে ফিরতে পারবেন, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে আজকের ম্যাচে তাঁর না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত।
গতকাল অনুশীলনেও ছিলেন না মাস্তানতুয়োনো। সাধারণত প্রতিপক্ষের মাঠে গিয়ে ম্যাচের আগের দিন অনুশীলন করে রিয়াল। কিন্তু এবার কোচ জাবি আলোনসো একটু ভিন্ন পথ বেছে নিয়েছেন। অ্যানফিল্ডে সাংবাদিকদের সামনে কৌশল প্রকাশ না করে তিনি শেষ অনুশীলন সেরেছেন ক্লাবের নিজস্ব মাঠ ভালদেবাসে। মার্কার বিশ্লেষণ, প্রতিপক্ষ যেন শেষ মুহূর্তে কিছু বুঝে না ফেলে, সে জন্যই আলোনসোর এ সিদ্ধান্ত।
রিয়ালের বর্তমান ফর্ম অবশ্য কোনোভাবেই লুকানো যাচ্ছে না। লা লিগায় গত পরশু রাতে ভ্যালেন্সিয়াকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে তারা। এ মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১৪ ম্যাচে এটি তাদের ১৩তম জয়। একমাত্র হারের স্বাদ লিগে। ১২৬ বছরের ইতিহাসে রিয়ালের এর চেয়ে ভালো সূচনা হয়েছে মাত্র দুবার, সর্বশেষ ১৯৬১-৬২ মৌসুমে।