Prothomalo:
2025-06-16@05:57:36 GMT

পিঁপড়া কতটা বুদ্ধিমান

Published: 20th, April 2025 GMT

ছোট পিঁপড়ার দল দেখতে দারুণ লাগে। সারিবদ্ধ ও দলবদ্ধভাবে ঘুরে বেড়ায় পিঁপড়া। খুদে এই প্রাণী দিনরাত পরিশ্রম করে চলে। আর তাই তো যেখানেই মিষ্টি বা চিনিযুক্ত খাবার রাখুন না কেন, পিঁপড়া সেদিকে যাবেই। আপাতদৃষ্টে ক্ষুদ্র ও সাধারণ মনে হলেও পিঁপড়ার সমাজব্যবস্থা, যোগাযোগ ও সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা বিজ্ঞানীদের বিস্মিত করছে অনেক বছর ধরেই।

পিঁপড়াকে মানুষের চেয়েও সামাজিক জীব বলা হয়ে থাকে। কারণ, কঠিন পরিশ্রমের পাশাপাশি সুসংগঠিত একটি কলোনিতে বাস করে পিঁপড়া। প্রতিটি কলোনিতে একটি ‘রানি পিঁপড়া’ থাকে। রানি পিঁপড়াকে ঘিরে গড়ে ওঠে একেকটি কলোনি। আর শ্রমিক পিঁপড়া খাবার সংগ্রহ, বাসা তৈরি, রক্ষণাবেক্ষণসহ বাচ্চার যত্ন করে। সৈনিক পিঁপড়া কলোনিকে শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করে। শ্রম বিভাজনের মধ্য দিয়ে পিঁপড়ার কলোনিতে স্থিতিশীলতা দেখা যায়। পিঁপড়া একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ফেরোমন নামের রাসায়নিক সংকেত ব্যবহার করে। খাবারের সন্ধান, বিপৎসংকেত বা কলোনির সদস্যদের মধ্যে বার্তা প্রেরণের জন্য তারা বিভিন্ন ধরনের ফেরোমন নিঃসরণ করে। এই রাসায়নিক সংকেত এতটাই সুনির্দিষ্ট যে অন্যান্য পিঁপড়া সহজেই বার্তাটি বুঝতে পারে ও সেই অনুযায়ী কাজ করে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, পিঁপড়ার এই রাসায়নিক যোগাযোগব্যবস্থা তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে বেশ উন্নত রূপ।

পিঁপড়া তাদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে। খাবারের সন্ধানে যাওয়ার সময় বাধার সম্মুখীন হলে নতুন পথ তৈরি করার মতো কাজ খুব সহজে করতে পারে পিঁপড়ার দল। গবেষণায় দেখা গেছে, পিঁপড়ার স্মৃতিশক্তি বেশ উন্নত। তারা একবার খাদ্যের উৎসের সন্ধান পেলে সেই পথের তথ্য দীর্ঘ সময় মনে রাখতে পারে ও আবার সেখানে ফিরে যেতে পারে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, পিঁপড়ার মস্তিষ্কের গঠন ছোট হলেও তাদের নিউরনের সংযোগ অত্যন্ত কার্যকর। এর ফলে পিঁপড়া সহজেই শেখার পাশাপাশি মনে রাখতে পারে।

পৃথিবীর প্রায় সব পরিবেশেই পিঁপড়ার অস্তিত্ব দেখা যায়। মরুভূমির তীব্র তাপ থেকে শুরু করে শীতল বনভূমির প্রতিকূল পরিবেশেও নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে পিঁপড়া। এই অভিযোজনক্ষমতা পিঁপড়ার বুদ্ধিমত্তার আরেকটি প্রমাণ বলে মনে করা হয়।

সূত্র: ইএল পেইস ডটকম, সায়েন্স ডট অর্গ, সায়েন্টিফিক আমেরিকান

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের হামলায় ২০ ইসরায়েলি নিহত: বিবিসি

ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলা চারদিন ধরে চলছে। এসব হামলায় উভয় দেশের মধ্যে নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। ইসরায়েলের জাতীয় পরিষেবা জানিয়েছে, আজ সোমবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। ফলে গত শুক্রবার থেকে আজ সোমবার পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ২০ জনে পৌঁছেছে। আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা বিবিসি।

অন্যদিকে আল জাজিরা বলছে, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

আজ সোমবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স ও ব্লাড ব্যাংক সংস্থাগুলো বলছে, এসব হামলায় ২৯ জন আহত হয়েছেন।

বিবিসির খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম জানান, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী, একজন পুরুষ। 

এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে হামলায় একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়াও বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও সেখান আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।

এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছিল, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।

এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ