রোদ–বৃষ্টির খেলার মধ্যে সিলেট টেস্টে তৃতীয় দিনে হতে পেরেছে শুধু ৪৪ ওভার। দিন শেষে ৬ উইকেট হাতে নিয়েও খুব একটা স্বস্তিতে নেই বাংলাদেশ। লিডটা এখনো মাত্র ১১২ রানের। মেহেদী হাসান মিরাজের ৩৫০–৪০০ রানের চাওয়া থেকে যা অনেকটাই দূরে।

তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে রানের লক্ষ্যটা তাই নামিয়ে আনতে হচ্ছে। দিন শেষের সংবাদ সম্মেলনে দলের প্রতিনিধি হয়ে আসা মুমিনুল হকও সে রকমই বলে গেছেন। তাঁর দৃষ্টিতে এখন ৩০০ রান করা গেলেও সেটা ‘খুব ভালো’।

জিম্বাবুয়েকে শেষ পর্যন্ত কত রানের লক্ষ্য দিতে চায় বাংলাদেশ—এমন প্রশ্নেই কথাটা বলেছেন মুমিনুল, ‘৩০০ হলে খুব ভালো। সেটা না হলে ২৭০ থেকে ২৮০–এর ওপরে। ৩০০ হলে আমরা ভালো জায়গায় থাকব।’

মুমিনুলের বিশ্বাস, ৩০০ করাটা সম্ভব। আজ দিন শেষে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন ৬০ ও জাকের আলী অপরাজিত আছেন ২১ রানে। এরপরও যাঁরা আছেন, মুমিনুলের আস্থা আছে তাঁদের ওপরও, ‘শান্ত (নাজমুল হোসেন) জাকেরের পরে আমাদের টেলএন্ডে যারা রয়েছে, তাইজুল এরপর হাসান তারাও ব্যাটিং করতে পারে। এ জন্যই বিশ্বাসটা বেশি।’

মুমিনুলের এমন বক্তব্যে মনে হতেই পারে—টপ অর্ডারদের ব্যর্থতা কারণে বাংলাদেশ দলকে এখন টেলএন্ডারদের ওপর ভরসা করতে হচ্ছে। কিন্তু মুমিনুলের ব্যাখ্যা ভিন্ন, ‘এই অর্থে কথাটা বলছি যে টেলএন্ডাররাও ভালো ব্যাটিং করতে পারে। তার অর্থ এই নয় যে টেলএন্ডারদের ওপরে নির্ভরশীল। তবে যখন খেলবেন, তখন টেলএন্ডারদের ওপরও নির্ভর করতে হবে। যখন ব্যাটিং করা দরকার, তারাও ব্যাটিং করতে পারে, এটা আমাদের প্লাস পয়েন্ট।’

তবে শুধু ব্যাটিং করতে জানলেই তো হবে না, পরিস্থিতি অনুযায়ী সেটা করে দেখাতে হবে। মুমিনুলের ভাষায় যা ‘ক্যালকুলেটিভ ব্যাটিং’। তিনি বলেছেন, ‘অনেক ক্যালকুলেটিভ ব্যাটিং করতে হবে, কালকে সকালে খেলা হয়তো খুব কঠিন হয়ে আসবে। সে সময়ে ক্যালকুলেটিভ ব্যাটিং করা লাগবে, একটা সময় খেলাটা একটু ছাড়বে। সে সময়ে আমরা খেলাটা ধরতে পারব। লম্বা সময় মনোযোগ দিয়ে ব্যাটিং করতে হবে।’

প্রথম ইনিংসে ১৯১ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ দলের হাল ধরেছিলেন মুমিনুল। মাহমুদুলের সঙ্গে ৬০ রানের জুটি গড়েন, নাজমুলের সঙ্গে ৬৫ রানের। কিন্তু নিজের ইনিংসটাকে বড় করতে পারেননি, ৮৪ বলে ৪৭ রান করে আউট হয়ে গেছেন তিনি। মাহমুদুলও সেট হওয়ার পর ৬৫ বলে ৩৩ রান করে আউট হয়েছেন। দিন শেষে নিজেদের কাঁধেই দায়টা দিয়েছেন মুমিনুল।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়ায় ফুটপাত দখল করে দোকানের পসরা, কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ

বগুড়া শহরের সার্কিট হাউস-কালীবাড়ি মোড় সড়কে সারি সারি ভ্যানে হরেক খাবারের পসরা। পিৎজা, বার্গার, স্যান্ডউইচ, চিকেন শর্মা, মিটবক্স—সবই মিলছে রাস্তার পাশের এসব দোকানে। ক্রেতারা মূলত কিশোর ও তরুণ-তরুণী।

দোকানগুলোতে নেই কোনো আলাদা শেফ। বিক্রেতারাই নিজের হাতে খাবার তৈরি করছেন, পরিবেশনও করছেন। কারও হাতে গ্লাভস নেই, শরীরে নেই অ্যাপ্রোন। বিকেল গড়াতেই এসব ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানে ভিড় জমছে। কোর্ট হাউস স্ট্রিটের পাশেই আছে ‘পিজ অ্যান্ড বার্গ’, ‘পদ্মা ফুডস’ ও ‘হিলিয়াম রেস্টুরেন্ট’-এর মতো নামীদামি খাবারের দোকান। একসময় সন্ধ্যায় এসব প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার ঢল নামত। এখন সে ভিড় চলে গেছে রাস্তার পাশে বসা দোকানগুলোর দিকে।

পদ্মা ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমদাদ আহমেদ বলেন, ‘অভিজাত এ এলাকায় একটি খাবারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। অন্তত ১৪টি প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিতে হয়। এসব নবায়নে প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয়। ভবন ভাড়া, দামি শেফ ও কর্মচারীর বেতন—সব মিলিয়ে খরচ বিপুল। অথচ রাস্তার পাশে ভ্যানে বসা দোকানে বিনিয়োগ মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কোনো সনদ নেই, দোকানভাড়া নেই, কর্মচারীও নেই। শুধু দামে সস্তা বলে ক্রেতারা ঝুঁকছেন ওদিকে। সড়ক দখল করে দোকান বসায় যানজটও বাড়ছে। অভিযোগ করেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার মিলছে না।

বগুড়া হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলেশ্বরীতলা অভিজাত এলাকা। এখানে দোকান দিতে বিপুল বিনিয়োগ লাগে। নামীদামি দোকানে একটি পিৎজার দাম ৫০০ টাকা হলে ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলেও ক্রেতারা সস্তা পেয়ে সেখান থেকেই কিনছেন। এতে অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলো লোকসানে পড়ছে। এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘আমরা স্ট্রিট ফুড ব্যবসার বিরোধী নই। তবে সেটা অভিজাত এলাকা থেকে সরিয়ে পৌর পার্ক, অ্যাডওয়ার্ড পার্কসংলগ্ন সড়ক কিংবা সরকারি আজিজুল হক কলেজের পাশের এলাকায় নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি।’

সড়কজুড়ে দোকান, ভোগান্তিতে শহরবাসী

সম্প্রতি দেখা যায়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে সড়কের এক পাশে ২০-২৫টি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান বসেছে। অন্য পাশে ফলের দোকান। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আদালত প্রাঙ্গণের সামনে যানজট লেগেই থাকে।

এ ছাড়া পৌরসভা লেন, জেলা খানা মোড়, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়ক, মহিলা ক্লাব মোড়, শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, সাতমাথা-সার্কিট হাউস সড়কসহ শহরের নানা সড়কেই বসছে ফুচকা, চটপটি, জুস, ফাস্ট ফুড ও ফলের দোকান।

সাতমাথায় প্রতিদিন বসছে অর্ধশতাধিক দোকান। জিলা স্কুলের সামনে চটপটি ও কাবাবের দোকানগুলোর চেয়ার বসানো হয়েছে ফুটপাত দখল করে। কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, বড়গোলা, দত্তবাড়ি, কালিতলা—সবখানেই দুই পাশে দোকান।

রাস্তা দখল করে দোকান বসানোয় বেশির ভাগ সময় যানজটে থাকে শহরে। সম্প্রতি তোলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ