খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টায় শিক্ষার্থীদের একটি মিছিল ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিলে কুয়েট ভিসির অপসারণ চেয়ে নানা স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। মিছিল শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সমাবেশ করেন তারা। 

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, “স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারকে উৎখাত করে যে প্রতিশ্রুতি নিয়ে অন্তর্বর্তীক সরকার দায়িত্ব নিয়েছে তা পালনে ব্যর্থ হয়েছে। যে শিক্ষার্থীদের লাশের ওপর এই বিপ্লব, আজ তাদেরকে আবার মৃত্যু পথযাত্রী করা হয়েছে। কুয়েটের ঘটনা আমাদের সেই বার্তায় দেয়।”

বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে শিক্ষার্থী মুজতবা ফয়সাল নাঈম বলেন, “রাজনীতিমুক্ত কুয়েট ক্যাম্পাসে একটি দল রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনায় বাধাপ্রাপ্ত হয়ে স্থানীয় সন্ত্রাস এবং অঙ্গসংগঠন নিয়ে নিরাপরাধ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। কুয়েট প্রশাসন শিক্ষার্থীদের পাশে না দাঁড়িয়ে উল্টো নিরাপদ শিক্ষার্থীদের মামলা দিয়েছে ও বহিষ্কার করেছে। জুলাই বিপ্লবে দু'হাজার শহীদের রক্তের পিচ্ছিল পথ পেরিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করলেও আজ শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবিগুলো ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের মতো হ্যান্ডেল করছে। এই ভিসি পদত্যাগ করার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে, অতিসত্বর তাকে বহিষ্কার করতে হবে।”

পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী তৌকি আনসারী বলেন, “জুলাই বিপ্লবে আমরা রক্ত দেওয়ার প্রধান কারণ ছিল মানুষের অধিকার আদায়। ইন্টেরিম যদি আমাদের অধিকার আদায়ে ব্যর্থ হয়, তবে আমরা ইন্টেরিমকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে বাধ্য হবো। প্রশাসন যদি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রহসন করে তাহলে আমরা আবারও জুলাই বিপ্লব সূচনা করতে বাধ্য হবো। টেকনাফ থেকে তেতুঁলিয়া, রুপসা থেকে পাটুরিয়া ছাত্রদের গণআন্দোলন গড়ে উঠবে।"

সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান সীমান্ত বলেন, “জুলাই বিপ্লব পরবর্তী শিক্ষার্থীদের ওপর এমন বর্বর হামলা আমাদের কাছে কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে। দালাল ভিসিকে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি অনুযায়ী পদত্যাগ করতে হবে। আমরা কুয়েট শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একত্মতা প্রকাশ করে বলতে চাই প্রয়োজনে লং মার্চ টু কুয়েট দিতে বাধ্য হবো।”

ঢাকা/ফাহিম/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ