মোদি সরকারকে চাপ সৃষ্টির আহ্বান মুসলিম ল বোর্ডের
Published: 24th, April 2025 GMT
বিতর্কিত ওয়াক্ফ আইন বাতিল করতে মোদি সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য বিজেপির মিত্রদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে অল ইন্ডিয়া মুসলিম ল বোর্ড (এআইএমপিএলবি)। তা না হলে মুসলিমদের পক্ষ থেকে তাদের তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।
মঙ্গলবার দিল্লির তালকাটোরা স্টেডিয়ামে ‘ওয়াকফ বাঁচাও’ শীর্ষক সম্মেলনের আয়োজন করে এআইএমপিএলবি। এতে বেশ কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় মুসলিম সংগঠনের পাশাপাশি বিরোধী দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এমনকি বিজেপির সমর্থক শিয়া ধর্মগুরু কালবে জাওয়াদও সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের (এআইএমআইএম) প্রধান ও হায়দরাবাদের সংসদ সদস্য আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বলেন, গণতন্ত্র বা রাজতন্ত্র হোক– প্রতিটি মুসলিম দেশে ওয়াক্ফ পদ্ধতি রয়েছে। তিনি সৌদি আরব সফরে থাকা নরেন্দ্র মোদিকে আহ্বান জানান, প্রয়োজনে যুবরাজ সালমানের কাছ থেকে বিষয়টি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নিন। বিজেপি মুসলিম দেশগুলোতে ওয়াক্ফের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলায় এই জবাব দেন ওয়াইসি। যদিও কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার পর সফর সংক্ষিপ্ত করে ভারতে ফিরেছেন মোদি। সম্মেলনে জেডি (ইউ) সভাপতি ও বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার, টিডিপি-প্রধান ও অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু, এলজেপি (আরভি) প্রধান চিরাগ পাসওয়ান, এনসিপি সভাপতি অজিত পাওয়ার ও এইচএএম (এস) নেতা জিতন রাম মাঞ্জি বক্তব্য দেন। নেতারা বলেন, দেশপ্রেমিক নাগরিকদের উচিত সরকারকে বিতর্কিত ওয়ক্ফ আইন প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা, তা না হলে সর্বত্র সরকারের বিরোধিতার মুখে আমাদের পড়তে হবে। সরকার মুসলমানদের মধ্যে মীরজাফর (বিশ্বাসঘাতক) তৈরির প্রচেষ্টায় লিপ্ত বলে নেতারা সতর্ক করেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশাপাশি অন্য অমুসলিমদের একত্রিত হয়ে বৈষম্যমূলক আইনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান তারা।
ওয়াক্ফ আইনের সাংবিধানিক বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে শতাধিক মামলা হয়েছে। শুনানির দ্বিতীয় দিনেই কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টকে জানায়, পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত নতুন আইনের দুটি বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে না। এক, ওয়াক্ফ সম্পত্তি বলে যা কিছু পরিচিত, তার কোনোটি তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে না। দুই, কেন্দ্রীয় ওয়াক্ফ কাউন্সিল ও রাজ্য ওয়াক্ফ বোর্ডে নতুন কোনো সদস্য নিযুক্তি হবে না। তালকাটোরা স্টেডিয়ামে সমবেত নেতারা অবশ্য জানিয়েছেন, আইন খারিজ না হওয়া পর্যন্ত তাদের লড়াই চলবে। গত সোমবার ভারতে ওয়াক্ফ সংশোধনী আইন বাতিলের দাবিতে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে সহিংসতার ঘটনায় করা মামলা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
নোয়াখালীতে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাকে আশ্রয় দেওয়ায় তাঁতী দলের নেতা বহিষ্কার
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আলাউদ্দিনকে নিজ বাড়িতে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের এক নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কৃত মোহাম্মদ সৈকত উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়ন তাঁতী দলের সভাপতি ছিলেন। আজ শুক্রবার বিকেলে জেলা তাঁতী দলের সদস্যসচিব মোরশেদ আলম প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে জেলা তাঁতী দলের আহ্বায়ক ইকবাল করিম সোহেল ও সদস্যসচিব মোরশেদ আলমের যৌথ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বহিষ্কারের আদেশ দেওয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মোহাম্মদ সৈকতকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি মূল্যায়নে ব্যর্থ হওয়ায় হাতিয়া উপজেলা তাঁতী দলের দক্ষিণ কমিটিকে সতর্ক করা হয়েছে।
দলীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে হাতিয়া উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের জোড়খালী গ্রামে সৈকতের বাড়ি থেকে সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে হাতিয়া থানা–পুলিশ। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ১০টি ককটেল উদ্ধার করা হয়। আলাউদ্দিন ও মোহাম্মদ সৈকত সম্পর্কে ফুফা–ভাগনে।
এ বিষয়ে মোহাম্মদ সৈকত প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে অনেকগুলো পরিবার থাকে। আমি ব্যবসার কাজে দিনের বেশির ভাগ সময় বাইরে থাকি। আলাউদ্দিন কখন বাড়িতে এসেছেন, তা আমার জানা নেই। আমাদের ঘর থেকে তাঁর শ্বশুরদের ঘর অনেক দূরে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাকে জড়ানো হয়েছে।’
নোয়াখালী জেলা তাঁতী দলের সদস্যসচিব মোরশেদ আলম বলেন, আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাকে আত্মগোপনে থাকার সুযোগ করে দেওয়ায় মোহাম্মদ সৈকতকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের তাঁতী দল কমিটিকেও সতর্ক করা হয়েছে।
আরও পড়ুনহাতিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে পালিয়ে থাকা সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গ্রেপ্তার৩১ জুলাই ২০২৫