ফিলিস্তিনের গাজা। একে আপনি যেভাবেই ডাকুন না কেন–গণহত্যা কেন্দ্র, রক্ত ঝরানোর এক অনন্ত চক্র, যন্ত্রণা ও মৃত্যুকূপ, বিশ্বের সবচেয়ে বড় বন্দিশিবির কিংবা ইসরায়েলের বড় অংশ একে যেভাবে দেখছে অর্থাৎ একে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষাও করতে পারেন। তেল আবিবের অ্যাশকেনাজি ইহুদিরা পশ্চিমা বুদ্বুদে বাস করে, সকালে ক্যাপুচিনোতে চুমুক দেয় আর তাদের যোগব্যায়ামের শিক্ষকের কথা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকে। অথচ অদূরেই ঘটছে পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা, যা স্রেব্রেনিৎসা বা রুয়ান্ডার পর বিশ্বে দেখা যায়নি। একটা বিষয় তারা কেউই যেন বুঝতে পারছে না–হামাস আত্মসমর্পণ করবে না। হয়তো ধারণা করা হয়েছিল, গাজা থেকে হামাসের নেতারা এক সময়ের ফাতাহর মতো অর্থ নিয়ে পালাবেন। কিন্তু ১৮ মাসের পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ এবং দুই মাসের অনাহারের পরও তা না ঘটায় এটি স্পষ্ট–ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তাঁর শত্রুকে কতটা কম বোঝেন!
ইসরায়েলের সর্বশেষ ‘প্রস্তাব’ ছিল মূলত আত্মসমর্পণের আহ্বান। সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে ৪৫ দিনের জন্য খাদ্য ও পানি সরবরাহ এবং হামাসকে নিরস্ত্র করার দাবি জানিয়েছিল ইসরায়েল। হামাসের জবাব ছিল: তারা সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে প্রস্তুত, যদি বিনিময়ে কিছু ফিলিস্তিনি বন্দিকে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং একটি দীর্ঘমেয়াদি হুদনা বা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয়। মানে তারা আর নতুন টানেল খনন করবে না, অস্ত্র উন্নত করবে না এবং গাজার শাসনব্যবস্থা অন্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর কাছে হস্তান্তর করবে। হামাস শুরুতেই তারা যে দুটি শর্ত দিয়েছিল, সেগুলো থেকে একচুলও সরেনি: তারা নিরস্ত্র হবে না এবং তাদের দাবি, ইসরায়েলি বাহিনী গাজা থেকে সম্পূর্ণরূপে সরে যাক এবং এই যুদ্ধের পুরোপুরি অবসান ঘটুক।
আত্মসমর্পণ করবে না হামাস
হামাস কেন আত্মসমর্পণ করবে না, তার অনেক কারণ রয়েছে। দিনরাত তারা এবং গাজার জনগণ যে দুর্দশা ভোগ করছে, তারপরও তারা পিছু হটছে না। মার্চে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ভেঙে দেওয়ার পর দেড় হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। হামাসের প্রথম সারির নেতৃত্ব, বেসামরিক সরকার, পুলিশ বাহিনী এবং প্রায় সব হাসপাতাল শেষ হয়ে গেছে। রাফাহ শহর ধ্বংস করা হচ্ছে। তবুও নির্বাসনে যাওয়ার জন্য তাদের বিপুল অর্থ প্রস্তাব করলেও, তা প্রত্যাখ্যান করে প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রয়াত ফিলিস্তিনি নেতা ইয়াসির আরাফাত হয়তো অনেক আগেই নির্বাসনে চলে যেতেন, যেমনটা তিনি করেছিলেন ১৯৮২ সালে পশ্চিম বৈরুতে পিএলও বাহিনী ঘেরাও হওয়ার পর। ফাতাহও এতক্ষণে বিদেশে পাড়ি জমাত। কিন্তু এই উদাহরণ হামাসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। কেন?
প্রথমত এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের হামলায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ব্যর্থতা এবং সহিংসতা দেশটিকে যেমন চিরতরে পাল্টে দিয়েছে, তেমনি গাজার ধ্বংসস্তূপ ফিলিস্তিনি সংগ্রামকেও ভিন্ন রূপ দিয়েছে। গাজা এখন সব ফিলিস্তিনির কাছে পবিত্র ভূমিতে পরিণত হয়েছে।
এই যুদ্ধে গাজার এমন কোনো পরিবার নেই, যাদের স্বজন শহীদ হয়নি বা যাদের বাড়িঘর ধ্বংস হয়নি। হামাস বা অন্য কোনো প্রতিরোধ গোষ্ঠীকে এই জনগণ থেকে আলাদা করা সম্ভব নয়। সমষ্টিগত কষ্ট যত বাড়ছে ততই তাদের নিজেদের ভূমিতে টিকে থাকার ইচ্ছাশক্তিও বাড়ছে; যেমনটা নিরস্ত্র দক্ষিণ হেবরনের কৃষকরা প্রমাণ করে দিয়েছেন। আরও একটি বিষয়, ইসরায়েলের নির্দয় আচরণের কারণেই দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রেরণা জন্মেছে। 
ইসরায়েলের ‘চূড়ান্ত লক্ষ্য’
ইসরায়েল শুধু জমি বা নিয়ন্ত্রণই চায় না। তারা সব সময় আরও বেশি চায়। তাদের ধর্ম অঞ্চলের অন্য সব ধর্মের ওপর আধিপত্য বিস্তার না করা পর্যন্ত তারা থামে না। এমনকি ইস্টার সানডেতে খ্রিষ্টানরাও মুসলমানদের মতোই এই আচরণের শিকার হয়। তাদের বসতি স্থাপনের কাজ যুদ্ধের সময়ের তুলনায় শান্তির সময়েই আরও বাড়ে। যেমন অসলো চুক্তির পর তারা পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপন করে।  
বস্তুত ইসরায়েল কখনোই দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানে বিশ্বাসী ছিল না, কারণ এর প্রতিষ্ঠাতা এবং তাদের উত্তরসূরিদের মনে সব সময় শুধু একটি রাষ্ট্রের ধারণাই ছিল। ইতামার বেন গভির, বেজালেল স্মোত্রিচ এবং নেতানিয়াহু মিলে যা করছেন, তা হচ্ছে ‘চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জন করা’; অর্থাৎ ডেভিড বেন গুরিয়ন যে ফিলিস্তিনিদের ‘ইসরায়েলের ভূমি’ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু করেছিলেন, সেটা সম্পন্ন করা।
আজ যদি হামাস আত্মসমর্পণ করে, গাজাও আত্মসমর্পণ করে, সেটি হবে পুরো ফিলিস্তিনি আন্দোলনের আত্মসমর্পণ। এটি এ কারণে নয় যে, সব ফিলিস্তিনি ধর্মপ্রাণ বা ফাতাহ অজনপ্রিয়। বরং এ কারণে যে, প্রতিরোধই এখন দখলদারিত্ব অবসানের একমাত্র পথ হয়ে উঠেছে। ইসরায়েল গাজা, পশ্চিম তীর, জেরুজালেম এবং নিজ দেশের ভেতরের সব ফিলিস্তিনির ওপর যে দুর্ভোগ চাপিয়ে দিয়েছে, তার ব্যাপকতা এমন যে এখন হামাসের ভাগ্যই ফিলিস্তিনের ভাগ্য হয়ে গেছে।
তবে হামাস থেকে ফাতাহ আলাদা এ কারণে যে, হামাস একটি ধর্মীয় সংগঠন। এই যুদ্ধের সূচনা তারা করেছিল আল-আকসা মসজিদে ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের অনুপ্রবেশের প্রতিক্রিয়ায়। গাজার ফিলিস্তিনিরা যে নির্মম হত্যাযজ্ঞের শিকার হচ্ছে, সেটার অর্থ খোঁজার জন্য তারা নিজেদের ধর্মের দিকেই ফিরে যাচ্ছে।
কৌশলগত কারণ
হামাস যে লক্ষ্যে স্থির, এ সংগঠন যে দুর্নীতির বাইরে, তার পেছনের কারণ তাদের সম্মিলিত শৃঙ্খলা ও ইমান। বিষয়টি সবার ওপরই প্রভাব ফেলেছে।
রিফাত রাদওয়ান। ২৩ বছর বয়সী একজন প্যারামেডিক পেশাজীবী, যাঁর মৃত্যুর মুহূর্তের কথা তিনি রেকর্ড করেছেন। মৃত্যুর আগে আল্লাহর কাছে তিনি দোয়া করছিলেন যেন তিনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ নিয়মিত না পড়ার জন্য ক্ষমা পান। তিনি হয়তো খুব ধার্মিক ছিলেন না এবং স্পষ্টতই হামাসের সদস্যও ছিলেন না, কিন্তু মৃত্যুর শেষ মুহূর্তে ক্ষমা প্রার্থনার মধ্য দিয়ে বোঝা যায়, তাঁর ধর্মীয় বিশ্বাস কতটা গভীর ছিল। যদি কখনও গাজার ফিলিস্তিনিদের সাহস ও আত্মত্যাগের কোনো প্রতীক খোঁজা হয়, রাদওয়ানই ছিলেন সেই প্রতীক। মৃত্যুশয্যাতেও তিনি ইমানের পরিচয় দিয়েছেন। গাজার ইমানও তদ্রূপ ধ্বংস হবে না। হামাস কেন আত্মসমর্পণ করবে না, তার আরও কিছু কৌশলগত কারণও রয়েছে। একটি সংগঠন হিসেবে তাদের ভবিষ্যৎ যাই হোক, যেমন তামিল টাইগার বা চেচেন বিদ্রোহীদের মতো অনেক বিদ্রোহী দল বড় সামরিক শক্তির দ্বারা নির্মূল হয়েছে আবার ইটিএর মতো দলও লক্ষ্য অর্জন না করেই নিঃশেষ হয়ে গেছে। তারপরও হামাস বিশ্বাস করে, তারা ইতোমধ্যে তাদের কৌশলগত লক্ষ্য অর্জন করেছে। সেই লক্ষ্য ছিল–ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের দাবি এবং একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের সংগ্রামকে আবারও বিশ্বের মানবাধিকার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসা।
পিউ রিসার্চের তথ্য অনুযায়ী গত তিন বছরে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের মধ্যে ইসরায়েল সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা বেড়েছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাপ্তবয়স্কদের ৫৩ শতাংশ ইসরায়েল সম্পর্কে নেতিবাচক মত পোষণ করে, যা ৭ অক্টোবরের আগের তুলনায় ৯ শতাংশ বেশি।
জনমতও হামাসের পক্ষে, যেখানে হেরেছে ইসরায়েল। বিশেষ করে সেই সব দেশে, যেখানে হামাস নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত, মানুষকে বলা হয়েছে তারা যেন হামাসকে সন্ত্রাসী হিসেবে ভাবে। কিন্তু মানুষ ক্রমেই সেই ধারণা থেকে সরে আসছে। এমনকি যদিও তারা ৭ অক্টোবরের ঘটনাকে ভয়ংকর অপরাধ হিসেবেই দেখে।
যদি ইসরায়েল চায় এই যুদ্ধকে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে শেষ করতে, তবে তারা নিশ্চিত থাকতে পারে–একই লক্ষ্য প্রতিটি ফিলিস্তিনির মনেও স্থায়ীভাবে গেঁথে গেছে। নেতানিয়াহু যতদিন এই ব্যর্থ অভিযানে গাজায় এগিয়ে যাবেন, ততদিন ইউরোপের বড় দেশগুলো বাধা হয়ে দাঁড়াবে। যেমন ফ্রান্স ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার দিকে আরও এগিয়ে যাবে। v

ডেভিড হার্স্ট: মিডল ইস্ট আইয়ের প্রধান সম্পাদক; মিডল ইস্ট আই থেকে ঈষৎ সংক্ষেপিত

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র এই য দ ধ লক ষ য প রস ত র জন য স গঠন

এছাড়াও পড়ুন:

জামায়া‌তের তিন‌ দি‌নের কর্মসূচি ঘোষণা

পিআর পদ্ধ‌তি‌তে জাতীয় নির্বাচন, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন, জাপা ও চৌদ্দ দ‌লের রাজনী‌তি নি‌ষিদ্ধ করাসহ ৫ দফা দা‌বি‌তে তিন‌ দি‌নের কর্মসূ‌চি ঘোষণা ক‌রে‌ছে বাংলা‌দেশ জামায়া‌তে ইসলামী।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মগবাজার আল-ফালাহ মিলনায়তনে এক সংবাদ স‌ম্মেল‌নে এই কর্মসূচি ঘোষণা ক‌রেন দল‌টির নায়েবে আমির সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।

আরো পড়ুন:

মুক্তিযুদ্ধ না মানলে বাংলাদেশকে অস্বীকার করা হবে: জামায়াত নেতা আযাদ

জনগণ রায় দিলে দেশকে ৫ বছরেই দারিদ্র্যমুক্ত করা সম্ভব: শফিকুর রহমান

তি‌নি ৫ দফা দা‌বি তু‌লে ধ‌রে ব‌লেন, “জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন করতে হ‌বে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করতে হ‌বে, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হ‌বে, ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করতে হ‌বে এবং স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হ‌বে।”

এসব দা‌বি বাস্তবায়নে তিন‌ দি‌নে কর্মসূ‌চি ঘোষণা ক‌রেন দল‌টির না‌য়ে‌বে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

কর্মসূ‌চি হ‌লো:
১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানী ঢাকায় সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল, ১৯ সেপ্টেম্বর দেশের সব বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ মিছিল এবং ২৬ সেপ্টেম্বর দেশের সব জেলা উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল অনু‌ষ্ঠিত হ‌বে।

এ সময় উপ‌স্থিত ছি‌লেন দ‌লের সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, অ্যাডভোকেট মোয়াযযম হোসাইন হেলাল, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় সদস্য আব্দুর রব ও মোবারক হোমাইন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আবদুর রহমান মুসা, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ইয়াসিন আরাফাত এবং প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি আতাউর রহমান সরকার প্রমুখ।

লি‌খিত বক্ত‌ব্যে বলা হয়,  সরকার জুলাই জাতীয় ঘোষণা ও জুলাই জাতীয় সনদ প্রস্তুত করেছেন। একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জুলাই জাতীয় ঘোষণা ও জুলাই জাতীয় সনদের প্রয়োজনীয় সংশোধনীসহ তাদের পরামর্শ সরকারের নিকট উপস্থাপন করে। জামায়াতে ইসলামী বরাবরই জুলাই জাতীয় সনদকে আইনগত ভিত্তি দেওয়ার বিষয়ে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। জাতির ক্রান্তিলগ্নে ‘ডকট্রিন অব নেসেসিটি’ হিসেবে অতীতের বিভিন্ন নজির ও উদাহরণ তুলে ধরে জুলাই জাতীয় সনদের আইনগত ভিত্তির বিষয়ে জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান বারবার ব্যক্ত করে আসছে। আমরা মনে করি, জুলাই জাতীয় সনদের আইনগত ভিত্তি প্রদান ব্যতীত ছাত্রজনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত অভ্যুত্থান ও তার অর্জন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে পারে।

সরকার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ক‌রে‌ছে জা‌নি‌য়ে সংবাদ স‌ম্মেল‌নে বলা হয়,  সরকা‌রের ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও ভয়ভীতিমুক্ত গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে আসছে। অতীত অভিজ্ঞতা অনুযায়ী কালো টাকার ব্যবহার বন্ধ, ভোটকেন্দ্র দখল, পেশিশক্তি প্রদর্শন ও ভোটের বিভিন্ন অনিয়ম ও অপতৎপরতা বন্ধ, কোয়ালিটি-সম্পন্ন পার্লামেন্ট এবং দক্ষ আইনপ্রণেতা তৈরিসহ প্রতিটি ভোট মূল্যায়নের লক্ষ্যে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের জন্য জোর দা‌বি জানা‌নো হ‌য়ে‌ছে। এমন‌কি দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, কলামিস্ট, লেখক, গবেষক, শিক্ষাবিদ ও নানা শ্রেণিপেশার মানুষ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবির সাথে একমত পোষণ করেছেন। কিন্তু তারপরও জনগণের দাবিসমূহ কার্যকর করার কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না। এমতাবস্থায় জনগণের দাবি আদায়ের জন্য গণআন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। তাই জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন এবং জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি ন্যায়ভিত্তিক ও জবাবদিহিতামূলক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্ররূপে গড়ে তোলার লক্ষ্যে  ৫-দফা গণদাবি মে‌নে নি‌তে সরকা‌রের প্রতি আহ্বান জানা‌নো হয়ে‌ছে।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল
  • বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য না হলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই: এবি পার্টি
  • রোহিঙ্গা সমস্যায় রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে হবে
  • শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে আত্মসমর্পণ ও অস্ত্রত্যাগের প্রস্তাব মাওবাদীদের
  • মাঠের জবাব মাঠে দেওয়া হবে: সালাহউদ্দিন 
  • জামায়াত কীভাবে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলে: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ
  • জুলাই সনদ নিয়ে যেসব বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে
  • ফরিদপুরে সীমানা নিয়ে ডিসির চিঠি, এলাকাবাসীর ৫ দাবি
  • মৌলভীবাজারে পিবিআইর হাজতখানা থেকে আসামির লাশ উদ্ধার
  • জামায়া‌তের তিন‌ দি‌নের কর্মসূচি ঘোষণা