‘সিন্ধু দিয়ে হয় আমাদের পানি, নয় তাদের রক্ত বইবে’, ভারতকে বিলাওয়ালের হুঁশিয়ারি
Published: 26th, April 2025 GMT
পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি ভারতকে হুঁশিয়ার করে বলেছেন, ঐকমত্যের বাইরে গিয়ে তাঁর দল যেমন একটি বিতর্কিত খাল প্রকল্প হতে দেয়নি, ঠিক একইভাবে পাকিস্তানের জনগণ সিন্ধু নদের ওপর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন ও এর সমুচিত জবাব দেবেন।
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র পেহেলগামে গত মঙ্গলবার বিকেলে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করার ঘোষণা দেয় দিল্লি। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিলাওয়াল গতকাল শুক্রবার ওই হুঁশিয়ারি দেন।
সিন্ধু পানি চুক্তি (আইডব্লিউটি) স্থগিত করার ভারতের একতরফা সিদ্ধান্তেরও নিন্দা জানান বিলাওয়াল ভুট্টো। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সিন্ধু আমাদের ও এটি আমাদেরই থাকবে—এর ওপর দিয়ে হয় আমাদের পানি, নয় তাদের রক্ত বইবে।’
সুক্কুরে এক জনসমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে বিলাওয়াল বলেন, তাঁদের শান্তিপূর্ণ সংগ্রামের সফলতা হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকার কাউন্সিল অব কমন ইন্টারেস্টের (সিসিআই) ঐকমত্য ছাড়া সিন্ধুতে কোনো খাল নির্মাণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সময় উপস্থিত জনতাকে অভিনন্দন জানান তিনি।
বিলাওয়াল জানান, পিপিপি ও পাকিস্তান মুসলিম লিগ–নওয়াজ (পিএমএল–এন) একটি চুক্তিতে উপনীত হয়েছে। এতে উভয় দলের নেতাদের স্বাক্ষর রয়েছে।
বিলাওয়াল বলেন, ‘ভারতের অবৈধভাবে দখল করা জম্মু ও কাশ্মীরে একটি সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটেছে। নয়াদিল্লি এ জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে। পাকিস্তান জোরালোভাবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানায়। পাকিস্তানই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী।’‘পাকিস্তান সরকারের এখন আনুষ্ঠানিক নীতি, সব প্রাদেশিক সরকারের পারস্পরিক সম্মতি ছাড়া কোনো নতুন খাল খনন করা হবে না’, বলেন পিপিপির চেয়ারম্যান। বিতর্কিত খাল নির্মাণ প্রকল্পের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করায় পিপিপির কর্মীদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তিনি।
আরও পড়ুনপারমাণবিক অস্ত্রে এগিয়ে পাকিস্তান, সার্বিক সক্ষমতায় ভারত৩ ঘণ্টা আগেবিলাওয়াল বলেন, ‘আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, আমরা সিন্ধু রক্ষা করব। আজ কেন্দ্রীয় সরকারের হুমকি থেকে সিন্ধু রক্ষা পেয়েছে। এটা আপনাদের বিজয়।’
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক বৈঠক ও সেখানে ঐকমত্যে পৌঁছানোর প্রসঙ্গ তুলে ধরে পিপিপির চেয়ারম্যান ইঙ্গিত দেন যে কেন্দ্রীয় সরকার ওই প্রকল্প সিসিআইয়ের কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
‘আমরা প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের প্রতি কৃতজ্ঞ। তিনি আমাদের (জনগণের) উদ্বেগের কথা শুনেছেন। এখন কাউন্সিলের বেশির ভাগ দল—পিএমএলএন ও পিপিপি সম্মত হয়েছে, আপনাদের সম্মতি ছাড়া সিন্ধুতে কোনো খাল নির্মাণ করা হবে না’, বলেন বিলাওয়াল।
আরও পড়ুনভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা কতটা গড়াতে পারে২৪ এপ্রিল ২০২৫‘নিজের ব্যর্থতা ঢাকতেই মোদির এ উদ্যোগ’
সমাবেশে বিলাওয়াল ভুট্টো আরও বলেন, ‘সিন্ধু আরেকবার আক্রমণের শিকার—এখন ভারতের মাধ্যমে।’
বিলাওয়াল বলেন, ‘ভারতের অবৈধভাবে দখল করা জম্মু ও কাশ্মীরে একটি সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটেছে। নয়াদিল্লি এ জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে।’ তিনি গুরুত্বের সঙ্গে বলেন, ‘পাকিস্তান জোরালোভাবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানায়। পাকিস্তানই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী।’
নিজের ব্যর্থতাগুলো ঢাকতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কাশ্মীরের ওই ঘটনায় অযথাই পাকিস্তানকে দায়ী করছেন অভিযোগ করে বিলাওয়াল বলেন, ওই ঘটনার পর ভারত একপক্ষীয়ভাবে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করেছে।
বিলাওয়াল এই কঠিন সময়ে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ও ভারতকে সমুচিত জবাব দেওয়া আহ্বান জানান। বলেন, ‘ভারত এখন সিন্ধুর ওপর শ্যেন দৃষ্টি দিয়েছে। ভারত তার একতরফা সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত সিন্ধু নদকে রক্ষায় আমাদের সংগ্রাম চলবে।’ এ ইস্যুতে পিপিপি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পাশে থাকবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি।আরও পড়ুনসীমান্তে গোলাগুলি, ফিরছেন ভিসা বাতিল হওয়া নাগরিকেরা ১৫ ঘণ্টা আগেবিলাওয়াল বলেন, ‘সিন্ধুতে কোনো খাল নির্মাণ না করার জন্য পিপিপি যেমন শহর ও দেশজুড়ে কণ্ঠ সোচ্চার করে কেন্দ্রীয় সরকারকে রাজি করিয়েছে, ঠিক তেমনি আরেকবার সংগ্রাম করতে হবে। পাকিস্তানের জনগণ সাহসী—আমরা ভারতের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি দিয়ে দাঁড়াব এবং আমাদের সশস্ত্র বাহিনী সীমান্তে উপযুক্ত জবাব দেবে।’
‘ভারত এক দিনে সিন্ধু পানি চুক্তিকে আর স্বীকৃতি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল—এটা মেনে নেওয়া যায় না। এ ধরনের সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তো নয়ই, পাকিস্তানের জনগণের কাছেও গ্রহণযোগ্য নয়’, বলেন পিপিপির এই নেতা।
আরও পড়ুনভারত কি পাকিস্তানে পানির প্রবাহ আটকে দিতে পারবে১৫ ঘণ্টা আগেবিলাওয়াল এই কঠিন সময়ে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ও ভারতকে সমুচিত জবাব দেওয়া আহ্বান জানান। বলেন, ‘ভারত এখন সিন্ধুর ওপর শ্যেন দৃষ্টি দিয়েছে। ভারত তার একতরফা সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত সিন্ধু নদকে রক্ষায় আমাদের সংগ্রাম চলবে।’ এ ইস্যুতে পিপিপি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পাশে থাকবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি।
আরও পড়ুনভারতের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে পাকিস্তানের সিনেটে প্রস্তাব পাস২১ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক ন দ র য় সরক র য় আম দ র র ওপর ভ রতক
এছাড়াও পড়ুন:
লন্ডন বৈঠকে অবিশ্বাস দূর, সরকারের সম্মানজনক প্রস্থানের পথ সুগম হবে: সাইফুল হক
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক দেশে আগামী সংসদ নির্বাচনকেন্দ্রিক অচলাবস্থা, সন্দেহ ও অবিশ্বাস দূর করবে বলে আশা করছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। আজ শনিবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এ কথাগুলো বলেন তিনি।
লন্ডনে দুই নেতার বৈঠকের বিস্তারিত সব রাজনৈতিক দল ও জনগণের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করারও আহ্বান জানিয়েছেন সাইফুল হক।
সরকারের এই উদ্যোগ বিলম্বিত বোধদয়ের ফল বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। সাইফুল হক বলেন, আরও আগে সরকারের এই বোধদয় হলে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্ক ও রাজনৈতিক বিরোধ এড়িয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ মৌলিক কাজে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া যেত।
সব অংশীজনকে আস্থায় নিয়ে সরকারকে কাজ করার আহ্বান জানান সাইফুল হক। তিনি বলেন, এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের সম্মানজনক প্রস্থানের রাস্তা সুগম হলো।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সাইফুল হক বলেন, দেশের মানুষের অধিকার ও মুক্তি অর্জনে তাঁর দল জনগণের ভালোবাসা নিয়ে আগামীতে আপসহীন ধারায় সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আবু হাসান টিপু, আনছার আলী দুলাল ও মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক। সমাবেশে সংহতি জানান গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদের আহবায়ক শেখ আবদুর নূর।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম মীর, রেজাউল আলম, ফিরোজ আলী, কেন্দ্রীয় সংগঠক আইয়ুব আলী, বাবর চৌধুরী, ঢাকা মহানগর কমিটির নেতা মো. সালাউদ্দীন, মিজারুল রহমান ডালিম, আরিফুল ইসলামসহ পার্টির ঢাকা মহানগরের নেতারা।