বাংলাদেশের সাথে গঙ্গার পানি বন্টন চুক্তি বাতিল করার দাবি তুললেন ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সংসদ সদস্য নিশিকান্ত দুবে। বার্তা সংস্থা এএনআইকে তিনি এ কথা বলেছেন।

সম্প্রতি ভারতের জম্মু-কাশ্মিরের পহেলগামে জঙ্গি হামলার ঘটনায় পাকিস্তান সম্পৃক্ত রয়েছে অভিযোগ তুলে সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গেও একইভাবে পানি বন্টন চুক্তি বাতিলের দাবি করেছেন দুবে। ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে ১৯৯৬ সালে স্বাক্ষরিত গঙ্গার পানি বন্টন চুক্তিতে ত্রুটি রয়েছে বলেও তার অভিমত।

দুবে বলেন, “গঙ্গার পানি চুক্তির সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। ১৯৯৬ সালে তৎকালীন কংগ্রেস সরকার ভুল করেছিল। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী (নীতীশ কুমার) বরাবর এই কথা বলে আসছেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী (মমতা ব্যানার্জি) তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তির বিরোধিতা করেছেন। এমনকি আসামের মুখ্যমন্ত্রী (হিমন্ত বিশ্ব শর্মা) ব্রহ্মপুত্রের পানি বাংলাদেশে যাওয়ার বিরোধিতা করেছেন।”

তিনি বলেন,  “সাপের দলকে আমরা কত দিন পানি দেব? এবার থেঁতলে মারার সময় এসেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিএবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপর গোটা দেশের মানুষের ভরসা রয়েছে। তাই এই কাজটাও খুব তাড়াতাড়ি হবে।”

দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের সাথে ভারতের সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নিশিকান্ত দুবে। 

পাকিস্তানের জঙ্গিসংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সঙ্গে বাংলাদেশের ইউনূস সরকারের যোগ রয়েছে বলে দাবি করে নিশিকান্ত বলেন “লস্কর-ই-তৈয়বা লাগাতার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে। তাই জঙ্গি অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সাথে ভারতের আন্তর্জাতিক সীমান্ত সুরক্ষিত করা প্রয়োজন।” 

এর আগে শনিবারই সোশ্যাল মিডিয়াতে নিশিকান্ত লিখেছিলেন, “বাংলাদেশিরা বড্ড ছটপট করছে। ওদের গঙ্গার পানি দেওয়া বন্ধ করার সময় এসেছে। আমাদের দেওয়া পানি খেয়ে বাঁচবে, আর পাকিস্তানের গুণগান করবে!”

বিজেপি সাংসদ সদস্যের এই টুইট সামনে আসার পরেই বিতর্কের সৃষ্টি হয়। যদিও রবিবার ফের একবার এই একই ইস্যুতে বাংলাদেশকে নিশানা করেন তিনি। 
 

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর টন চ ক ত কর ছ ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ