জুলাই বিপ্লবী মেয়েরা আজ নিরাপদ বোধ করছে না: ফরহাদ মজহার
Published: 28th, April 2025 GMT
জুলাই বিপ্লবে সামনে থাকা মেয়েরা আজ নিরাপদ বোধ করছে না বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ও কবি ফরহাদ মজহার।
তিনি বলেছেন, “গণঅভ্যুত্থান বলতে আসলে কি বুঝায়, আমাদের সমাজে এর পরিষ্কার ধারণা নেই। সর্বশেষ জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে সামনের সাড়িতে অনেক মেয়ে ছিল। কিন্তু তারা হঠাৎ কোথায় হারিয়ে গেল? তারা আর রাজপথে নেই। কারণ তারা রাজপথে আর নিরাপদবোধ করছে না। আমাদের দেশের জনগণের মধ্যে রাষ্ট্র আর সরকারের পার্থক্য স্পষ্ট না। ফলে দেশ সামনের দিকে আগাতে পারছে না।”
সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকেল ৫টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে ‘অভ্যুত্থান: বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তর’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর হেরিটেজ স্টাডিজ এ সভার আয়োজন করে।
আরো পড়ুন:
রাবিতে ছড়িয়ে পড়েছে ছোঁয়াচে রোগ ‘স্ক্যাবিস’
রাবির ভর্তি পরীক্ষা: একটি ইউনিটেই ৭৫০ ওএমআর বাতিল
ফরহাদ মজহার বলেন, “১৯৭২ এর সংবিধান আমরা বাতিল করতে চেয়েছিলাম। কারণ, ওই সংবিধান সাধারণ মানুষ প্রণয়ন করেনি। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট শক্তি, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যাবস্থা, ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ এক হয়ে লড়েছিল। কিন্তু বর্তমান ইন্টেরিম সরকার আমাদের জুলাই ঘোষণাপত্র করতে দেয়নি। আমরা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জন্য জুলাই ঘোষণাপত্র ও নতুন গঠণতন্ত্র চাই।”
রাবি রেজিস্ট্রার ও সেন্টার ফর হেরিটেজ স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড.
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম কনক প্রমুখ।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ঐকমত্য কমিশন দূরদর্শিতার পরিচয় দিতে পারলে দ্রুত রাজনৈতিক বোঝাপড়া সম্ভব: সাইফুল হক
অনেক সংস্কারে রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝাপড়া আছে জানিয়ে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, ‘যেহেতু রাজনৈতিক দলগুলোর জনপরিসরে কমিন্টমেন্ট আছে, জনগণের কাছে অঙ্গীকার আছে। সে কারণে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতার পরিচয় দিতে পারলে আগামী জুনের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বোঝাপড়া তৈরি হবে। নূন্যতম জাতীয় ঐকমত্যের প্রশ্নে সবাই একমত হবে। এটিই হবে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের রাজনৈতিক অর্জন।’
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। সাইফুল হকের নেতৃত্বে দলটির ১০ সদস্যের প্রতিনিধ দল সংলাপে অংশ নেয়।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা পুরানো জামানায় ফিরতে চাই না। যে ব্যবস্থায় একটা দলকে চূড়ান্ত কর্তৃত্ববাদী দলে পরিণত করে। দলের নেতৃত্বকে চূড়ান্ত ফ্যাসিবাদী দুঃশাসককে পরিণত করে।’
তিনি বলেন, ‘এবারকার ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ম্যান্ডেট হচ্ছে সেই জামানা থেকে পার হয়ে একটি গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় শুরু করব, মানুষের ভোট ও গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করব। ১৬ বছর ধরে মানুষ যে নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে, এবারকার সংস্কার ও নির্বাচন একসঙ্গে বিবেচনা করে বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয় যাবে।’
জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও ১৬ বছরের ‘ফ্যাসিবাদ’ বিরোধী লড়াইয়ের কথা তুলে ধরে সাইফুল হক বলেন, ‘আন্দোলনের মাধ্যমে মানুষের বিশাল প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। তা যেন হতাশায় পরিণত না হয়, দুঃস্বপ্নে পরিণত না হয়, আমরা সে লক্ষ্যে সবাই কাজ করছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটি সংবিধান দেখতে চাই যেখানে মানুষের রাজনৈতিক, ধর্মীয়, সামাজিক, মতাদর্শ ও সাংস্কৃতিক বিশ্বাসের কারণে রাষ্ট্র নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করবে না। রাষ্ট্রের কাছে প্রতিটি নাগরিকের সাংবিধানিক ও নাগরিক অধিকার নিশ্চিত হবে।’
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা এমন একটা সংবিধান ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা দেখতে চাই, যেখানে কোনো ব্যক্তি বা দল ইচ্ছা করলে ক্ষমতাকে যা কিছু করবার লাইসেন্স মনে করবে না। ক্ষমতার স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও জনগণের মুখোমুখি হওয়ার সাংবিধানিক এবং আইনগত গ্যারান্টি নিশ্চিত দেখতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের যেহেতু কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডা নেই, বিশেষ কোনো পক্ষপাতিত্ব নেই, তাই গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার পথে জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর গণতান্ত্রিক আকাঙ্খা পূরণে তারা সঞ্চালক হিসবে ভূমিকা পালন করবে। আমরা কোথায় দাঁড়াব? যেখানে নূন্যতম জাতীয় ঐক্যের জায়গা সেখানে। এটা নিয়ে বেশি টানাটানি না করি। বেশি টানতে গেলে অনেক সময় দঁড়ি ছিড়ে যায়। সে কাজটা না করি।’