চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে জাহাজভাঙা শিল্পে বর্তমানে যে শোচনীয় অবস্থা চলছে, তার মধ্যে সেখানে নতুন জাহাজভাঙা কারখানা স্থাপনের প্রস্তাব গভীর উদ্বেগ ও বিস্ময়ের বিষয় হিসেবে দেখা দিয়েছে।
১৫০টি অনুমোদিত ইয়ার্ডের মধ্যে ১২৫টি যখন কার্যত অচল; অধিকাংশ মালিক নিজ উদ্যোগ পরিত্যাগ করে যখন ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন এবং যখন মাত্র সাতটি কারখানা প্রয়োজনীয় ‘গ্রিন সনদ’ অর্জনে সক্ষম হয়েছে, তখন নতুন করে জাহাজভাঙা কারখানা বিস্তৃতির প্রস্তাব যুক্তিহীন ও বাস্তবতাবিবর্জিত বলেই প্রতীয়মান হয়।
প্রথম আলোর অনুসন্ধান অনুযায়ী বোয়ালিয়া মৌজায় প্রায় ২০০ একর জমি জাহাজভাঙার জন্য বরাদ্দের আবেদন করা হয়েছে। এর যৌক্তিকতা প্রতিষ্ঠায় ভাঙা বেড়িবাঁধ সংরক্ষণ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির মতো অজুহাত উত্থাপিত হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা বলছে, এ অঞ্চলে এর আগে বিপুল পরিমাণ জমি অব্যবহৃত পড়ে আছে, যেগুলোর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করলেই অনুরূপ ফলাফল অর্জন করা সম্ভব।
নতুন ইয়ার্ডের জন্য সংরক্ষিত ভূমিতে ‘উন্নয়ন’ ঘটালে পরিবেশগত বিপর্যয় অনিবার্য। ইতিমধ্যে সীতাকুণ্ড অঞ্চলে ম্যানগ্রোভ অরণ্যের ব্যাপক উজাড় এবং সমুদ্রীয় জীববৈচিত্র্যের সংকট এক নির্মম বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নতুন অঞ্চল সংযোজন মানেই এই সংকটকে আরও ঘনীভূত করা।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের ২০১১ সালের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সীতাকুণ্ডের নির্ধারিত সাতটি মৌজাকে সীমাবদ্ধ রাখার নির্দেশনা ছিল। এই আইন লঙ্ঘন করে অতিরিক্ত মৌজা যুক্ত করার প্রয়াস কেবল আইনশৃঙ্খলার অপমানই নয়, নৈতিক দায়িত্বহীনতারও প্রকাশ। তদুপরি বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএসবিআরএ) বারবার বিদ্যমান ইয়ার্ডগুলোর উন্নয়ন ও সচলতার ওপর গুরুত্বারোপ করে নতুন ইয়ার্ড স্থাপনের বিরোধিতা করে এসেছে।
এই প্রেক্ষাপটে বোয়ালিয়ায় জমি বরাদ্দের প্রস্তাব নিশ্চিতভাবেই অপরিপক্ব চিন্তাধারার ফল, যা দীর্ঘ মেয়াদে জাহাজভাঙা শিল্পের অস্তিত্বকে আরও সংকটে ফেলবে।
যে মুহূর্তে বিদ্যমান ইয়ার্ডসমূহের আধুনিকায়ন, পরিবেশবান্ধব রূপান্তর এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ অপরিহার্য, সে সময় নতুন ইয়ার্ড স্থাপনের অজুহাতে প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংস এবং আইনি কাঠামো উপেক্ষার অপচেষ্টা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়।
সরকারের উচিত হবে বিদ্যমান ইয়ার্ডগুলোকে কার্যকর ও টেকসই করার লক্ষ্যে প্রণোদনা, প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং কঠোর তদারকির
মাধ্যমে জাহাজভাঙা শিল্পকে পরিবেশসম্মত ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্নরূপে পুনর্গঠন করা।
জাহাজভাঙা শিল্পের টেকসই উন্নয়নের জন্য নতুন অঞ্চল সংযোজন নয়, বরং বিদ্যমান ইয়ার্ডগুলোর আধুনিকায়ন ও পরিবেশবান্ধব রূপান্তরই সরকারের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র প রস ত ব
এছাড়াও পড়ুন:
কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে হারাল বায়ার্ন, চ্যাম্পিয়ন পিএসজির গোল উৎসব
বায়ার্ন মিউনিখ ৩–১ চেলসি
২০১২ সালে আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ইতিহাস গড়েছিল চেলসি। ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখকে টাইব্রেকারে হারিয়ে প্রথমবারের মতো পরেছিল ইউরোপসেরার মুকুট।
তবে এরপর থেকে বায়ার্নের সঙ্গে মুখোমুখি সব ম্যাচেই হেরেছে চেলসি। লন্ডনের ক্লাবটি পারল না আজও। হ্যারি কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে ৩–১ ব্যবধানে হারিয়েছে বায়ার্ন।
আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ম্যাচের ২০ মিনিটে বায়ার্ন প্রথম গোলটা পেয়েছে উপহারসূচক। চেলসির সেন্টার–ব্যাক ট্রেভোহ চালোবাহ নিজেদের জালে বল জড়ালে এগিয়ে যায় বাভারিয়ানরা।
কিছুক্ষণ পরেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন কেইন। এবার ভুল করে বসেন চেলসির মইসেস কাইসেদো। নিজেদের বক্সে কেইনকে কাইসেদো অযথা ট্যাকল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি।
নতুন মৌসুমে গোলের পর গোল করেই চলেছেন হ্যারি কেইন