রাখাইনে কথিত মানবিক করিডর এই অঞ্চলে মার্কিন এজেন্ডারই অংশ: বাসদ
Published: 29th, April 2025 GMT
মিয়ানমারের রাখাইনে কথিত মানবিক করিডর এই অঞ্চলে মার্কিন এজেন্ডারই অংশ, এমনটাই মনে করে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। দলটি বলেছে, এতে দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা মারাত্মক হুমকিতে পড়বে।
আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বাসদের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগের কথা বলা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করে একতরফাভাবে অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন দলটির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ।
বিবৃতিতে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের স্বার্থে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে রাখাইনে মানবিক করিডর দেওয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছেন। এ সংবাদ সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে।
বিবৃতিতে বজলুর রশীদ বলেন, আন্তদেশীয় মানবিক করিডরের মতো জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো রকম আলোচনা ও সম্মতি ছাড়া অনির্বাচিত অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ জাতিকে নিয়ে পাশা খেলার শামিল। তিনি বলেন, কোন শর্তে করিডর, রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে কী মনোভাব, আরাকান আর্মির সঙ্গে এ বিষয়ে কোনো যোগাযোগ হয়েছে কি না, মিয়ানমার সরকার বিষয়টি কীভাবে দেখবে, তাদের সঙ্গে সরকারি পর্যায়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না? চীন এটাকে কীভাবে নেবে—এসব বিষয় জাতির সামনে পরিষ্কার করা উচিত।
বজলুর রশীদ বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার যেমন সাম্রাজ্যবাদী ভারতের স্বার্থে, দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়েছিল। ড.
বিবৃতিতে কথিত মানবিক করিডর দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত গ্রহণের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান বাসদের সাধারণ সম্পাদক।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ
দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।
এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।
শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।
সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।
হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫