‘প্রজাপতি! প্রজাপতি! কোথায় পেলে ভাই এমন রঙিন পাখা, টুকটুকে লাল-নীল ঝিলমিলি আঁকা–বাঁকা।’ প্রজাপতির কাছে এমনই প্রশ্ন করেছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। ছোট্ট কিন্তু রঙিন ডানাওয়ালা পতঙ্গ প্রজাপতির জীবন ক্ষণস্থায়ী হলেও ডানার রঙের বাহার যুগে যুগে মানুষকে মুগ্ধ করেছে। আর তাই প্রকৃতির বিস্ময়কর সৃষ্টি হিসেবে প্রজাপতিকে নিয়ে আগ্রহ রয়েছে অনেকেরই।

প্রজাপতির রূপান্তরপ্রক্রিয়া বেশ আলোচিত। শুরুতে ক্ষুদ্র ডিম থেকে লার্ভা বা শুঁয়াপোকা, তারপর পিউপা বা মূককীট ও সবশেষে পূর্ণাঙ্গ প্রজাপতি তৈরি হয়। এই রূপান্তরপ্রক্রিয়া মেটামরফোসিস নামে পরিচিত। শুঁয়াপোকা যখন পিউপায় রূপান্তরিত হয়, তখন তার শরীরের প্রায় প্রতিটি অঙ্গ ভেঙে নতুন করে গঠিত হয়। এই জটিল প্রক্রিয়াটি জিনগতভাবে পূর্বনির্ধারিত ও পরিবেশগত উদ্দীপনার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। প্রজাপতির ডানার গঠন ও রং বিস্ময়কর। ডানায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আঁশের মতো গঠন থাকে। এতে আলোর প্রতিফলন ও শোষণ ঘটে বলে বিভিন্ন উজ্জ্বল রং সৃষ্টি হয়। এই রং কেবল তাদের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে না, বরং শিকারিদের হাত থেকে বাঁচতে ছদ্মবেশ ধারণে সহায়তা করে। ডানার মাধ্যমে প্রজাপতি সঙ্গীকে আকৃষ্ট করে। নিজেদের প্রজাতি চিনতে সাহায্য করে।

প্রজাপতির ডানার বিশেষ গঠন ও পেশি সঞ্চালনের কৌশল প্রজাপতিকে বাতাসে ভেসে বেড়াতে, দ্রুত উড়তে ও দিক পরিবর্তন করতেও সাহায্য করে। কিছু প্রজাতির প্রজাপতি দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে পারে। মোনার্ক প্রজাপতি প্রতিবছর কয়েক হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে শীতকালীন আবাসে পৌঁছায়। এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার জন্য বিশেষ দিক নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতার পাশাপাশি শক্তি সঞ্চয়ের কৌশল ব্যবহার করে থাকে প্রজাপতি। দীর্ঘপথ অতিক্রমের সময় বাতাসের গতি ও সূর্যকে কম্পাস হিসেবে ব্যবহার করে প্রজাপতি। প্রজাপতির চোখে বিশেষ ফটোরিসেপটর আছে, যা অতিবেগুনি রশ্মি চিনতে সহায়তা করে। আর তাই মস্তিষ্কের আকার খুব ছোট হলেও সহজে খাদ্যের সন্ধান, সঙ্গী চেনা ও ডিম পাড়ার জন্য উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করতে পারে প্রজাপতি।

প্রজাপতি সাধারণত তরল খাদ্য গ্রহণ করে। ফুলের মধু বা গাছের রস প্রজাপতির বেশ পছন্দ। মুখের অংশে লম্বা নল আকৃতির প্রোবোসিস দিয়ে ফুলের মধু গ্রহণ করে তারা। আমাদের চারপাশের বাস্তুতন্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রজাপতি ফুলের পরাগায়ণেও সাহায্য করে।

সূত্র: সায়েন্স ডেইলি

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সিরাজ–কৃষ্ণাতে ম্যাচে ফিরল ভারত

অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফিতে মোহাম্মদ সিরাজের মতো আর কোনো পেসার নেই, এভাবে বলাই যায়। কারণ, সিরাজ ও ক্রিস ওকসই এই সিরিজের সব কটি ম্যাচ খেলেছেন। সেই ওকসও ওভাল টেস্টের প্রথম দিনে চোট পেয়ে টেস্ট থেকে ছিটকে গেছেন, টিকে আছেন সিরাজ।

টিকে থাকা সিরাজ কী করেছেন? গতকাল ওভাল টেস্টের দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনে ৮ ওভারের এক স্পেলে ফিরিয়েছেন ওলি পোপ, জো রুট, জ্যাকব বেথেলকে। এরপর আরও এক উইকেট। সিরাজকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন প্রসিধ কৃষ্ণা। দ্বিতীয় সেশনের শেষ ওভারে দুই উইকেটসহ তিনিও নিয়েছেন ৪ উইকেট। ভারতের ২২৪ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ড অলআউট হয়েছে ২৪৭ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ভারত কাল দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে ২ উইকেটে ৭৫ রান নিয়ে। দুই ‘জীবন’ পাওয়া যশস্বী জয়সোয়াল ৫১ ও আকাশ দীপ ৪ রান নিয়ে উইকেটে আছেন।

অথচ কাল প্রথম সেশন শেষে ম্যাচের চিত্র ছিল আলাদা। ইংল্যান্ড প্রথম ১৬ ওভারেই তোলে ১ উইকেটে ১০৯ রান। দুই ওপেনার জ্যাক ক্রলি ও বেন ডাকেট ৭৭ বলে গড়েন ৯২ রানের জুটি। এমন বাজবলীয় শুরুর পর চিত্র পুরোপুরি বদলে যায় দ্বিতীয় সেশনে। শুরুটা করেন কৃষ্ণা। তাঁর শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দেন ক্রলি। পরের গল্পটা সিরাজের। প্রথম স্পেলে ৪ ওভারে ৩১ রান দেওয়া সিরাজকে অধিনায়ক গিল যখন বোলিংয়ে আনেন, তখন ইংল্যান্ডের রান ২৪ ওভারে ২ উইকেটে ১৪২। তিনি একে একে ফেরান দুই সেট ব্যাটসম্যান পোপ (২২), রুটকে (২৯) ও বেথেলকে (৬)। এরপর কৃষ্ণার দুই উইকেটে দ্বিতীয় সেশনটা পুরোপুরি ভারতের হয়ে যায়। ইংল্যান্ড দ্বিতীয় সেশনে ১০৬ রান তুলতে হারায় ৬ উইকেট। তৃতীয় সেশনে আর ৩২ রান যোগ করতে পারে তারা।

আরও পড়ুনকাঁধের চোটে ভারতের বিপক্ষে আর খেলতে পারবেন না ওকস১১ ঘণ্টা আগেলোকেশ রাহুলকে আউট করার পর অ্যাটকিনসনের আনন্দ

সম্পর্কিত নিবন্ধ