প্রণমী দাসের শখ ও স্বপ্নের উদ্যোগ ‘গার্গী’
Published: 2nd, May 2025 GMT
প্রণমী দাস শিক্ষার্থী, শিল্পী ও একজন উদ্যোক্তা। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফুড সেফটি বিভাগের স্নাতকোত্তর প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। কিন্তু পড়ালেখার জগতের বাইরেও তার আরেকটি রঙের, কাঠের ও ডিজাইনের জগত আছে। সেই জগতের নাম ‘গার্গী’। এখানে গহনার পাশাপাশি হাতে রঙ করা পাঞ্জাবি, শাড়ি, কুর্তি নিয়েও কাজ করা হয়।
আকর্ষণীয় নকশার বাহারি গহনাগুলো মূলত কাঠের বা মেটালের তৈরি বেইজ, তার ওপর বিডস, কালো সুতা, ট্যাসেল, কড়ি, রঙ তুলি, আঠা এবং নানারকম পুতিসহ বিভিন্ন ধরনের উপকরণ ব্যবহার করে শৈল্পিক রুপ দেওয়া হয়। পরে এগুলো বিক্রি করা হয় শখের পণ্য হিসেবে।
২০১৮ সালে ঢাকার বাসিন্দা প্রণমী তার বোনের হোস্টেলের বান্ধবীদের কাছ থেকে পছন্দসই নকশা করে দেওয়ার শর্তে অর্ডার নিয়ে শুরু করেন গহনা বানানোর কাজ। প্রথমদিকে ছিল হাতে গোনা কয়েকটি কাঠের গহনা আর অল্প কিছু রঙ। প্রথম বিক্রির আনন্দটা আসে সেখান থেকেই। কিন্তু ২০২০ সালে করোনা মহামারির সময়, যখন সবাই ঘরে বন্দি, তখনই প্রণমীর ‘গার্গী’ নতুন করে ডানা মেলতে শুরু করে।
আরো পড়ুন:
দুই বান্ধবীর ‘ওলো সই’
আদিবাসী তরুণরা প্রশিক্ষণে ভাগ্য বদলে হচ্ছেন স্বাবলম্বী
গহনা বানানো নিয়ে কখনো কোনো প্রশিক্ষণ নেননি প্রণমী। তার নিজের ভাষায়, “আমি যখন ফেসবুকে হাতে বানানো গহনার ছবি দেখতাম, তখনই মনে হতো আমি পারব। কারণ শখের বসে আঁকা আঁকিতে আমি ভালো দক্ষ।”
সেই বিশ্বাস থেকেই শুরু হয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার গল্প। নিজের জন্য বানানো, আবার খুলে নতুন করে ডিজাইন করা, রঙ বদলে আরো নতুন কিছু বানানো। এভাবেই ক্রমে তৈরি হয় ‘গার্গী’র আলাদা এক পরিচিতি।
তবে এই পথ সহজ ছিল না। পরিবারের সবার সমর্থন আছে, তবে আমার বাবার একটু আপত্তি ছিল শুরুতে। আমার বাবা বলতো যে, “তোর হলের নেত্রী আপুরা যদি সবাই বিনা পয়সায় বানিয়ে দিতে বলে তখন কী করবি? পড়াশোনা ফাঁকে আবার বিনা পয়সায় এত কষ্ট করি কীভাবে বানাবি?
“পড়াশোনার চাপের কারণে মাঝে মাঝে গহনার কাজ বন্ধ রাখতে হয়। কাস্টমারদের অনেকেই বুঝতে চান না হাতের কাজের মূল্য কতটা শ্রমসাধ্য, কতটা সৃজনশীল চিন্তার ফসল। একটা ডিজাইনের পেছনে কখনো ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করতে হয়। আবার কখনো নিজেরই পছন্দ হয় না, রং চেঞ্জ করতে হয়। এই চিন্তা আর শ্রমের মূল্য সব ক্রেতা বুঝতে চায় না।”
তবুও থেমে থাকেননি। মাসে ১৫-২০টি অর্ডার পেয়ে থাকেন, লাভ রাখেন সীমিত ২০ থেকে ২৫ শতাংশ। এক মাসে সর্বোচ্চ বিক্রি হয়েছে ৮-৯ হাজার টাকার গহনা।নিজ হাতে বানানোর পাশাপাশি সময় ও পড়াশোনার সাথে ভারসাম্য রেখে কিছু গহনা সংগ্রহ করেও বিক্রি করেন।
“এই ব্যবসা আমি পছন্দ করেছিলাম তার কারণ হচ্ছে এটা মূলত আমার শখের কাজ। আমি একটা ছবি আঁকব, রং করব এবং আমি যেই নকশা করে গহনা বানাব সেই গহনা পরে কেউ ঘুরতে যাবে, কেউ খুব আনন্দের সাথে ছবি তুলবে এই জিনিসটা আমার কাছে খুব আনন্দের লেগেছে এবং আমার কাছে মনে হয়েছিল এই কাজটা আমার কাছে খুব সহজ, আমি পারব। আমার শখের বসে করা কাজটাই আস্তে আস্তে আমার উপার্জনের একটা মাধ্যম হয়ে গেছে,” বলছিলেন প্রণমী।
এই পুরো উদ্যোগে প্রণমীর কোনো বড় পুঁজি ছিল না, ছিল না ঋণ। নিজের জমানো টাকায় শুরু, আর লাভের টাকা থেকেই ধীরে ধীরে বর্তমানে সংগ্রহ করেছেন প্রায় ৩০-৩৫ হাজার টাকার পণ্য। কারোর সাহায্য ছাড়াই তিনি একাই কাজ করেন, একাই গড়েছেন ‘গার্গী’।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুক, এই স্বপ্ন গড়তে বড় ভূমিকা রেখেছে। তিনি বলেন, “করোনার মধ্যে পেজটা খুলেছিলাম। তখন সবাই ঘরে বন্দি, কিন্তু ফেসবুকের মাধ্যমেই সবাই আমার গহনা দেখেছে, অর্ডার দিয়েছে। এখন ক্যাম্পাসে, হলে, আশেপাশে সবাই চেনে গার্গীকে।”
“আমি এখনো এটাকে ফুলটাইম ক্যারিয়ার হিসেবে ভাবি না,” বললেন প্রণমী। তিনি বলেন, “তবে শখের জায়গা থেকে এটা আমার আনন্দ আর উপার্জনের মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। যতদিন পারি, এটা চালিয়ে যাব।”
ঢাকা/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উদ য ক ত ই কম র স আনন দ প রণম
এছাড়াও পড়ুন:
বিনা মূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের সুযোগ, সারা দেশে ৮টি কেন্দ্রে
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে হাফেজ, ইমাম, মাদ্রাসাছাত্র ও বেকার যুবকদের বিনা কোর্স ফিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় কোর্সে প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এ প্রশিক্ষণের মেয়াদ দুই মাস। প্রশিক্ষণটি আগামী ১২ অক্টোবর শুরু হবে, চলবে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রশিক্ষণ শেষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সরকারি সনদ দেওয়া হবে। আগ্রহী প্রার্থীদের ৯ অক্টোবরের মধ্যে ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে আবেদন করতে হবে।
প্রশিক্ষণের বিষয়১. বেসিক কম্পিউটার,
২. অফিস অ্যাপ্লিকেশন ও ইউনিকোড বাংলা,
৩. ইন্টারনেট,
৪. গ্রাফিক ডিজাইন,
৫. ফ্রিল্যান্সিং,
৬. মার্কেটপ্লেস ও কনসালটিং।
আরও পড়ুনহার্ভার্ড এনভায়রনমেন্টাল ফেলোশিপ, দুই বছরে ১ লাখ ৮৫ হাজার ডলার১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫আবেদনের যোগ্যতা১. ন্যূনতম দাখিল বা সমমানের পরীক্ষায় পাস হতে হবে,
২. হাফেজদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করা হবে,
৩. উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে,
৪. প্রার্থীকে কম্পিউটার চালনায় বেসিক জ্ঞান থাকতে হবে,
৫. যাঁদের নিজস্ব কম্পিউটার আছে, তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে হাফেজ, ইমাম, মাদ্রাসাছাত্র ও বেকার যুবকদের বিনা কোর্স ফিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় কোর্সে প্রক্রিয়া শুরু করেছে।যে ৮টি কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে১. ঢাকা,
২. চট্টগ্রাম,
৩. রাজশাহী,
৪. খুলনা,
৫. বরিশাল,
৬. সিলেট,
৭. দিনাজপুর,
৮. গোপালগঞ্জ।
আরও পড়ুনবিনা মূল্যে ২ লাখ টাকার প্রশিক্ষণ, নন-আইটি স্নাতক শিক্ষার্থীদের সুযোগ ৭ ঘণ্টা আগেদরকারি কাগজপত্র১. শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সনদের সত্যায়িত ফটোকপি,
২. জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি,
৩. এক কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি জমা দিতে হবে,
৪. ইমামদের ক্ষেত্রে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অথবা ওয়ার্ড কমিশনারের কাছ থেকে নেওয়া ইমামতির প্রমাণপত্রের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে,
৫. মাদ্রাসাছাত্রদের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছ থেকে ছাত্রত্ব প্রমাণের কপি জমা দিতে হবে।
নিবন্ধন ফিমনোনীত প্রার্থীদের নিবন্ধন ফি হিসেবে ৫০০ টাকা দিতে হবে।
দেশের ৮টি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে