বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার ঢাকা মহানগরীর সাবেক সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ রইস উদ্দিনকে হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বাসভবনের অভিমুখে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আত। এ সময় তাদের বাধা দেয় পুলিশ।

আজ শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে এ পদযাত্রা শুরু করেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের নেতা–কর্মীরা। এর আগে জুমার নামাজের পর সুপ্রিম কোর্ট জামে মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিল করে ইসলামী ছাত্রসেনার ঢাকা মহানগর শাখা।

গত ২৭ এপ্রিল সকালে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের হায়দারাবাদ এলাকার একটি মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা র‌ইস উদ্দিনকে শিশু বলাৎকারের অভিযোগে গাছে বেঁধে মারধর করে একদল মানুষ। পরে সকাল ১০টার দিকে তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। দিবাগত ভোররাতেই কারাগারে তিনি মারা যান।

মাওলানা মুহাম্মদ রইস উদ্দিনকে হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে পদযাত্রাটি বিকেল ৪টার পর মৎস্য ভবন এলাকায় পৌঁছালে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। একপর্যায় নেতা–কর্মীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে মিছিল নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বাসভবনের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ কয়েকজনকে লাঠিপেটা করে।

অবশ্য পরে পুলিশ সরে গেলেও মিছিলটি শেষ পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বাসভবনের দিকে যায়নি। মৎস্য ভবন মোড় পার হয়ে রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের ফটকের সামনে এসে এটি শেষ হয়।

এ বিষয়ে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের নির্বাহী মহাসচিব আবুল কাশেম মোহাম্মদ ফজলুল হক বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ পদযাত্রায় বিনা উসকানিতে পুলিশ লাঠিপেটা করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘এরপরও আমরা যেহেতু শান্তিপ্রিয়, আমরা শান্তি চাই। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পক্ষ থেকে প্রতিনিধি পাঠানো হয়েছে, আমরা সে প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলব।’

লাঠিপেটার অভিযোগের বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপকমিশনারের (ডিসি) মাসুদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁদের সঙ্গে কথা ছিল তাঁরা, মৎস্য ভবনে এসে পদযাত্রা শেষ করে চলে যাবেন। তারপরও আমরা ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছিলাম। কারণ, এখানে বিভিন্ন ধরনের লোকজন থাকতে পারেন।’ তিনি বলেন, ‘তাঁরা ব্যারিকেড ভেঙে পুলিশের কয়েকজন সদস্যকে আহত করেন। এরপর তো আর পুলিশ তখন বসে থাকবে না। এরপরও আমরা তাঁদের ছেড়ে দিয়ে সামনে চলে আসি।’

পদযাত্রা শুরুর আগে সমাবেশ থেকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের নেতা মাসুদ হোসাইন আল–কাদেরি মাওলানা রইস উদ্দিন হত্যার আসামিদের গ্রেপ্তারে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেন। তিনি বলেন, ‘অন্যথায় আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব। আমরা রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেব, অফিস–আদালত বন্ধ করে দেব, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেব। আপনারা ঘুমন্ত সিংহকে জাগাবেন না।’

সমাবেশে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের নির্বাহী মহাসচিব মুফতি আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেন, ‘আবু সাঈদ শহীদ হওয়ার পরে যে পরিণতি হয়েছে, সেটি কিন্তু আমরা ভুলে যাইনি। জেনে রাখুন, আমরা যদি বৃহত্তর কর্মসূচির ডাক দেই, তাহলে রাজধানী অচল করে দেব।’

আরও পড়ুনমাওলানা রইস হত্যার বিচার দাবি জানিয়ে ১০২ নাগরিকের বিবৃতি৩০ এপ্রিল ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পদয ত র

এছাড়াও পড়ুন:

যমুনা অভিমুখী বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের মিছিল, পুলিশের বাধায় ছত্রভঙ্গ

জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনরত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের যমুনা অভিমুখী মিছিলটি পুলিশি বাধায় ছত্রভঙ্গ হয়ে গেছে। এ সময় পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানের গ্যাসের শেল ও জলকামান থেকে পানি ছোড়ে।

আজ সোমবার বিকেল চারটার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার উদ্দেশে পদযাত্রা শুরু করেন শিক্ষকেরা। মিছিলটি হাইকোর্ট সংলগ্ন কদম ফোয়ারার সামনে পৌঁছালে পুলিশ তাদের আটকে দেয়। সেখানে শিক্ষকেরা পুলিশের ব্যারিকেড সরানোর চেষ্টা করলে পুলিশ তাঁদের ওপর সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে এবং জলকামানের পানি ছিটিয়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা পিছু হটেন।

তবে বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সাধারণ শিক্ষক ঐক্য পরিষদের নেতা আব্দুর রহিম সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, হাইকোর্টের সামনে পুলিশ তাঁদের বাধা দেয় এবং লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। এতে ১০-১২ জন শিক্ষক আহত হন।

বিকেল চারটার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার উদ্দেশে পদযাত্রা শুরু করেন শিক্ষকেরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যমুনা অভিমুখী বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের মিছিল, পুলিশের বাধায় ছত্রভঙ্গ