কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও কুমিল্লা জেলা জজ আদালতের সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম সেলিমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সরকারবিরোধী নাশকতার পরিকল্পনার  অভিযোগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে কুমিল্লা নগরীর দক্ষিণ চর্থা এলাকার বাসভবন থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

আজ শুক্রবার সকালে সমকালকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতয়ালি মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে অনলাইনে মিটিং করে অরাজকতা সৃষ্টির পরিকল্পনা করছিলেন তিনি (সেলিম)। অনলাইনের ওই বৈঠকে কুমিল্লা সদরের সাবেক এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারসহ কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও জহিরুল ইসলাম সেলিমের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাধিক মামলা রয়েছে বলেও জানান ওসি। বলেন, গ্রেপ্তার সেলিমকে আজ আদালতে সোপর্দ করা হবে।

গত বছরের ৩ আগস্ট কুমিল্লা নগরীর পুলিশ লাইন্স এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে হামলার ঘটনায় সর্বশেষ গত ১১ ফেব্রুয়ারি কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা হয়। ওই মামলার বাদী সদর উপজেলার ডুমুরিয়া চান্দপুর গ্রামের মো.

আমির হোসেনের ছেলে মো. ইনজামুল হক রানা।  মামলায় সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারকে প্রধান আসামি করা হয়। ওই মামলায় ২৬১ জন আসামির মধ্যে কুমিল্লার আদালতের ২৬ আইনজীবীকে অভিযুক্ত করা হয়। গ্রেপ্তার এডভোকেট জহিরুল ইসলাম সেলিম ওই মামলায় এজাহারনামীয় আসামি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতে ইউটিউবে ৪ বাংলাদেশি টেলিভিশন চ্যানেল বন্ধ

ভারতে ইউটিউবে বাংলাদেশের ৪টি বেসরকারি টেলিভিশন বন্ধ করা হয়েছে। দেশটির সরকারের আবেদনের প্রেক্ষিতে জাতীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উদ্বেগের কারণ দেখিয়ে চ্যানেলগুলো বন্ধ করে দিয়েছে ভিডিও প্রদর্শনের এই মাধ্যমটি।

বন্ধ হওয়া চ্যানেলগুলো হলো—যমুনা, একাত্তর, বাংলাভিশন এবং মোহনা টেলিভিশন।

শুক্রবার তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান ডিসমিসল্যাব তাদের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

এতে বলা হয়, ভারতে এসব চ্যানেলের অনলাইন ঠিকানায় প্রবেশ করলে এই বার্তা দেখাচ্ছে যে– “এটি বর্তমানে এই দেশে প্রদর্শনের জন্য অনুমোদিত নয়, কারণ এটি জাতীয় নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার ভিত্তিতে সরকারি নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত।”

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি আইন, ২০০০-এর ৬৯ (ক) ধারার অধীনে, সরকারের কাছে এমন অধিকার রয়েছে—যদি কোনও তথ্য জাতীয় নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব কিংবা জনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি সৃষ্টি করে, তবে সেটি বন্ধ করার নির্দেশনা দিতে পারে।

যমুনা টেলিভিশনকে পাঠানো বার্তা
যমুনা টেলিভিশন ডিসমিসল্যাবকে নিশ্চিত করেছে, তারা ইউটিউবের কাছ থেকে একটি আনুষ্ঠানিক বার্তা পেয়েছে, যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে—ভারত সরকারের অনুরোধে তাদের সমস্ত পুরোনো ও ভবিষ্যতের অনুষ্ঠান দেশটির দর্শকদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

সত্যতা যাচাই
ডিসমিসল্যাব বিষয়টির সত্যতা নিরূপণে ভারতে একটি প্রক্সি সংযোগ স্থাপন করে, যাতে এটি নিশ্চিত হয় যে তারা ভার্চুয়ালভাবে ভারতের অবস্থানে প্রবেশ করেছে। এরপর তারা বাংলাদেশের ৩৮টি সংবাদভিত্তিক চ্যানেল যাচাই করে। দেখা যায়, কেবল যমুনা, একাত্তর, বাংলাভিশন ও মোহনা ভারতের জন্য বন্ধ দেখাচ্ছে। এদের ভিডিওতে একই বার্তা, যেখানে সরকারি নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হয়েছে।

বিষয়টি আরও নিশ্চিত করতে ডিসমিসল্যাব দিল্লি ও কলকাতার দুই সংবাদকর্মীকে লিংক পাঠিয়ে বিষয়টি জানতে চায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই দুই সংবাদকর্মী জানান, সত্যিই ভারতে চ্যানেলগুলো দেখা যাচ্ছে না। একজন স্ক্রিনশটের ছবি পাঠান প্রমাণ হিসেবে।

আঞ্চলিক উত্তেজনা এবং তথ্যনিয়ন্ত্রণের ইঙ্গিত
ডিসমিসল্যাবের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময়ে এলো, যখন দেশটির সশস্ত্র বাহিনী প্রতিবেশী পাকিস্তানে “অভিযান সিঁদুর” শুরু করে। এরপর থেকেই সে দেশের বিভিন্ন প্রচারমাধ্যমে তীব্র জাতীয়তাবাদী প্রচারণা শুরু হয়। এর মধ্যেই ৯ মে স্বাধীন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়্যারের অনলাইন ঠিকানা পুরো ভারতে বন্ধ করে দেওয়া হয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওয়্যার জানায়, ভারত সরকার সংবিধানপ্রদত্ত সংবাদপত্রের স্বাধীনতা লঙ্ঘন করে তাদের অনলাইন বন্ধ করে দিয়েছে। এর আগের দিন ৮ মে, আরেক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলা হয়— ভারত সরকার আট হাজারেরও বেশি ব্যবহারকারীর ঠিকানা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে, যার মধ্যে বেশ কিছু স্বাধীন সংবাদ সংস্থা রয়েছে, যেমন মাক্তুব মিডিয়া, দ্য কাশ্মিরিয়াত ও ফ্রি প্রেস কাশ্মির। এ ছাড়া, গত মাসে ভারত সরকার প্রতিবেশী একটি দেশের এক ডজনের বেশি অনলাইন চ্যানেল নিষিদ্ধ করে। নিষেধাজ্ঞার তালিকায় ছিল সেদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, খ্যাতিমান ক্রীড়াবিদ এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের নামও। সম্প্রতি ভারতে নির্বাসনে থাকা বাংলাদেশি লেখক ও অনলাইনকর্মী আসাদ নূর অভিযোগ করেন, তার ভিডিওভিত্তিক চ্যানেলটিও ভারতে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। পরে অবশ্য তা খুলে দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ