রাজশাহী নার্সিং কলেজ বন্ধ ঘোষণা, হল ত্যাগের নির্দেশ
Published: 14th, May 2025 GMT
দুই গ্রুপের সংঘর্ষের জেরে রাজশাহী নার্সিং কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার সকালে কলেজটির অধ্যক্ষ মোছা. মতিয়ারা খাতুন এক নোটিশে বন্ধের এ নির্দেশনা দেন। দুপুর ১২টার মধ্যে সকল শিক্ষার্থীকে আবাসিক হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়। নোটিশে উল্লেখ করা হয়, রাজশাহী নার্সিং কলেজে ডিপ্লোমা এবং বিএসসি ইন নার্সিং শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলা হয়েছে নোটিশে।
তবে এ নির্দেশনার পরও নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা হল বা ক্যাম্পাস ছেড়ে যাননি। তারা দুপুর থেকে দোষীদের শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদ কর্মসুচী পালন করছেন। তারা বিক্ষোভ মিছিল ও ক্যাম্পাসের ভেতর অবস্থান নিয়ে নানা শ্লোগান দিতেন থাকেন। বিকেলে তারা অবস্থান কর্মসূচী থেকে তারা উঠে যান।
শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের উপর বারবার হামলা করা হয়। এতে বিএসসি নার্সিংয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। অথচ তাদের শাস্তির মুখোমুখি করা হয়নি। এ অবস্থায় তাদের হল ত্যাগ করতে বলা হয়েছে। তারা হল ত্যাগ করবেন না। যতক্ষন হামলাকারিদের শাস্তি না হবে ততক্ষণ তারা আন্দোলনে থাকবেন। হামলার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষনা দেন।
রাজশাহী নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ মোসা.
মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী নার্সিং কলেজে বিএসসি ইন নার্সিং কোর্সের শিক্ষার্থীদের উপর ডিপ্লোমা ইন নার্সিং এর শিক্ষার্থীরা হামলা চালায়। হামলা ও মারধরে ১০ জন আহত হন। তারা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানেও তাদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠে। পরে পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর কঠোর অবস্থানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র স কল জ হল ত য গ অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
চেম্বারে ছাত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় রাবি শিক্ষক, ভিডিও ভাইরাল
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) চেম্বারে আপত্তিকর অবস্থায় ছাত্রীসহ এক শিক্ষককে আটক করার ঘটনা ঘটেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের দিন গত রবিবার (১১ মে) সন্ধ্যায় তাদের হাতেনাতে আটক করেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৪ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও সামনে এলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
ওই শিক্ষকের নাম মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’ এর সদস্য। জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তাকে দেখা গেছে।
আরো পড়ুন:
জবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে তিতুমীর কলেজে বিক্ষোভ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সাম্য হত্যা: তথ্য চেয়ে অনুরোধ তদন্ত কমিটির
ওই ছাত্রী একই বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তরের (এমবিএ) শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম খালেদা জিয়া হলের এই আবাসিক ছাত্রী স্নাতকে (বিবিএ) ভালো ফল অর্জন করেছেন বলেও জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত রবিবার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের দিন বিকেল ৫টার দিকে ওই ছাত্রীকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অ্যাকাডেমিক ভবনের ৩০৭ নম্বর কক্ষে প্রবেশ করেন মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ। কক্ষে প্রবেশের পর বৈদ্যুতিক বাতি বন্ধ করে দেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী ওই কক্ষের দরজায় কড়া নাড়েন। বেশ কিছুক্ষণ পর শিক্ষক দরজা খুলে দেন। শিক্ষার্থীরা কক্ষে প্রবেশ করে দেখেন, ছাত্রীর ওড়না-হিজাব শরীরে নেই। ছাত্রীর ব্যাগ, সেফটিপিনসহ অনেক কিছু শিক্ষকের টেবিলে ছিল। পাশেই রাখা ছিল বালিশ।
ছাত্ররা ভিডিও করার সময় ওই ছাত্রীর মাথায় একটি রুমাল পরিয়ে মাথা ঢেকে দেন মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ। উপস্থিত শিক্ষার্থীরা তখন জানতে চান, ‘ছাত্রীর মাথায় কেন রুমাল পরিয়ে দেওয়া হচ্ছে?’ জবাবে শিক্ষক বলেন, ‘সে মেয়ে মানুষ, তাই।’ এ সময় ওই শিক্ষক ও ছাত্রীর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ উপস্থিত শিক্ষার্থীদের কথা হয়। পরে বিষয়টি তাদের মধ্যে মীমাংসা হয়।
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ফাইন্যান্স বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. শিবলী সাদিক বলেন, “মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে এর আগে এক ছাত্রী বিভাগে যৌন হয়রানির অভিযোগ দিয়েছিল। তখন বিভাগের সভাপতি আরেকজন ছিলেন। পরে বিভাগের সভাপতি বসে বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। তবে গত রবিবার ছাত্রীর সঙ্গে কক্ষে আপত্তিকর অবস্থায় থাকার বিষয়টি আমি জানি না।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. মাহবুবর রহমান জানান, ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহর কক্ষে ছাত্রীকে আপত্তিকর অবস্থায় পাওয়ার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। কেউ অভিযোগ দেননি। তবে অভিযোগ পেলে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখে ব্যবস্থা নেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, “এ বিষয়ে আমি অবগত নই, খোঁজ নিচ্ছি। প্রথমে আমাকে জানতে হবে, সেখানে আসলে কি ঘটেছে। সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেব।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী