চাকসুতে আদিবাসীবিষয়ক পদের দাবি ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী সংগঠনগুলোর
Published: 26th, May 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) গঠনতন্ত্রে আদিবাসী বা সংখ্যালঘুবিষয়ক পদ সৃষ্টির দাবি জানানো হয়েছে।
সোমবার (২৬ মে) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকসু ভবনের সামনে চাকসুর গঠনতন্ত্র সংস্কার নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় চবির বিভিন্ন ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী ছাত্র সংগঠনগুলো।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) চবি শাখার সভাপতি রোনাল চাকমা বলেন, “আমরা চাকসুর গঠনতন্ত্রে আদিবাসী বা সংখ্যালঘু জাতিসত্তাবিষয়ক সম্পাদক পদ সৃষ্টির দাবি জানাচ্ছি। চবিতে সাত শতাধিক বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে। বহু ভাষা, জাতি, ধর্মে ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যপূর্ণ ক্যাম্পাস দেশে আর কোথাও নেই। পিছিয়ে পড়া এবং সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের অধিকার সুনিশ্চিতকরণ, ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চা, গবেষণা নিশ্চিতকরণে এই সম্পাদক পিছিয়ে পড়া জাতিগোষ্ঠী থেকে নির্বাচিত হবে।”
আরো পড়ুন:
ছাত্রদলে নতুন কমিটির গুঞ্জন
ছাত্রীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক: নোবিপ্রবির সেই শিক্ষককে চাকরিচ্যুত
তিনি বলেন, “রেসিজম, বুলিং প্রতিরোধসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তি ও সম্প্রীতির পরিবেশ বজায় রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয় করবে। এছাড়াও বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি এ দেশের সম্পদ, তা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছে তুলে ধরবে। ৭৩-এর অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সিনেটে যে পাঁচজন ছাত্র প্রতিনিধি থাকবে, তার মধ্যে পিছিয়ে পড়া জাতিগোষ্ঠীর এই সম্পাদক প্রতিনিধি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত থাকবে।”
সংবাদ সম্মেলনে চাকসুর গঠনতন্ত্রে এছাড়া আরো চারটি পদ অন্তর্ভুক্তির দাবি জানানো হয়। সেগুলো হলো, পরিবহন ও আবাসন বিষয়ক সম্পাদক, নারী বিষয়ক সম্পাদক, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক এবং হল ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ভিপি অথবা জিএস যেকোনো একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে তাদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, ত্রিপুরা স্টুডেন্টস ফোরামের সভাপতি রিন রঙ্গন ত্রিপুরা, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাথোয়হিসং মারমা, বিএমএসসি সাংস্কৃতিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সিংয়ইপ্রু মারমা এবং ওঁরাও জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি পিযুষ টপ্য।
ঢাকা/মিজান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গঠনতন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের ওপর ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্যের’ হামলা, আহত ১৫
চট্টগ্রামে বামপন্থি ছাত্র সংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ বুধবার বিকেলে নগরের জামলাখান চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্য’ এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে।
গুরুতর আহতরা হলেন- সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি রিপা মজুমদার, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত বিশ্বাস সিকু ও অর্থ সম্পাদক সুদীপ্ত গুহ।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তি ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বামপন্থি ছাত্র সংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের নেতাকর্মীদের ওপর ‘হামলার’ প্রতিবাদে প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ আহ্বান করা হয়। বিকেল তিনটার দিকে প্রেস ক্লাবের সামনে এ প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দেয় গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। সেই মোতাবেক প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হতে থাকেন ছাত্র জোটের নেতাকর্মীরা। এর কিছুক্ষণ পর ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্যের’ ব্যানারে একটি মিছিল প্রেস ক্লাবের সামনে আসে। আগে থেকে অবস্থান করা পুলিশ উভয়পক্ষকে শান্ত করা চেষ্টা করে। এ সময় উভয়পক্ষ পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিতে থাকে। একপর্যায়ে দু’পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, হাতাহাতি ও মারামারি শুরু হয়। গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের নেতাকর্মীরা প্রেস ক্লাব ছেড়ে চেরাগি মোড়ের দিকে যাওয়ার সময় ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্যের’ নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলায়। এতে রিপা ও শ্রীকান্তের মাথা ফেটে রক্ত ঝরতে দেখা যায়। পরে প্রেস ক্লাবের সামনে ফিরে এসে ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্যের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়ে স্লোগান দেন। গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের নেতাকর্মীদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া ব্যানারে আগুন ধরিয়ে দেন তারা।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সহ-সভাপতি পুষ্পিতা নাথ বলেন, ‘মঙ্গলবার সমাবেশের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ থেকে আমাদের কর্মসূচির বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বিভিন্ন পোস্ট দেওয়া হয়। এরপর আজ প্রেস ক্লাবের সামনে গেলে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটে। কয়েকজন নারী নেত্রীসহ আমাদের ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।’
অন্যদিকে ঘটনাস্থলে থাকা জুলাই ঐক্যমঞ্চের চট্টগ্রামের প্রধান সমন্বয়কারী আবরার হাসান রিয়াদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চ বানিয়ে তথাকথিত আন্দোলনের নামে এই বাম সংগঠনের নেতাকর্মীরা স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করেছিল। এর ফলে শেখ হাসিনা ১৬ বছর ধরে দেশের মানুষের ওপর গুম-খুন, অত্যাচার চালিয়ে ভোটাধিকার হরণ করতে পেরেছিল। হাসিনার পতনের পর ড. ইউনুসের সরকার যখন বিচার বিভাগের আস্থা ফেরানোর কাজ শুরু করেছে, তখন এই বামপন্থিরা আবার ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। তারা যদি জুলাইয়ের চেতনা ধারণ না করে, আবার ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে, আমরা আজকের মতোই প্রতিহত করব।’
নগরীর কোতোয়ালি থানার ওসি আবদুল করিম বলেন, ‘একটা সমাবেশ নিয়ে দুপক্ষে পাল্টাপাল্টি উত্তেজনা হয়েছিল। হালকা মারামারিও হয়েছে। দু’জন আহত হয়েছেন। আমরা অবশ্য ঘটনাস্থলে থেকে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।’