হার্ভার্ডের ৩০০ কোটি ডলারের অনুদান অন্যত্র নিতে চান ট্রাম্প
Published: 27th, May 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০০ কোটি (৩ বিলিয়ন) ডলারের অনুদান বাতিল করে তা এখন বৈজ্ঞানিক ও প্রকৌশলবিষয়ক গবেষণার জন্য এবং বাণিজ্য-সংক্রান্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে দেওয়ার কথা ভাবছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
গতকাল সোমবার নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প এ তথ্য জানান। মাত্র কয়েক দিন আগেই হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের চেষ্টা চালিয়েছিল তাঁর প্রশাসন। তবে আদালতের আদেশে সেই সিদ্ধান্ত সাময়িক স্থগিত করা হয়। এর আগে বিগত সপ্তাহগুলোয় বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রায় ৩০০ কোটি ডলারের সরকারি অনুদান স্থগিত করেছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প আসলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় হার্ভার্ডের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ আনতে চাইছেন। সে প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়টির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার সময় বিভিন্ন অভিযোগও তুলছেন। হার্ভার্ডে ডেমোক্র্যাট ও কট্টর বামপন্থীদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। এসব অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থও হয়েছে তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকার থেকে হার্ভার্ডের যে অনুদান বাতিলের কথা ট্রাম্প বলেছেন, সেগুলো দেশটির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের (এনআইএইচ) জন্য ছাড় দিয়েছিল কংগ্রেস। যুক্তরাষ্ট্রে জৈব চিকিৎসাবিজ্ঞান-সংক্রান্ত গবেষণার জন্য ওই অর্থ বরাদ্দ দেয় এনআইএইচ। বাণিজ্য-সংক্রান্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় সাধারণত এ ধরনের গবেষণা হয় না।
তবে এর আগে হার্ভার্ডের যে তহবিল বাতিল করা হয়েছে, সোমবার ট্রাম্প তার কথাই নতুন করে বলেছেন কি না—তা স্পষ্ট নয়। ট্রাম্পের নতুন এই মন্তব্যের বিষয়ে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি বিশ্ববিদ্যালয়টি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো জবাব দেয়নি হোয়াইট হাউসও।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন দ ন
এছাড়াও পড়ুন:
দুই সপ্তাহের মধ্যে তেহরানে সুপেয় পানি ফুরিয়ে যেতে পারে
তীব্র খরার কবলে পড়েছে ইরানের রাজধানী তেহরান। সেখানে বাসিন্দাদের সুপেয় পানির প্রধান উৎসটি দুই সপ্তাহের মধ্যে শুকিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইআরএনএ গতকাল রোববার এ খবর জানিয়েছে।
তেহরানে পানি সরবরাহ কোম্পানির পরিচালক বেহজাদ পারসার বরাত দিয়ে আইআরএনএর খবরে বলা হয়, তেহরানে খাবার পানি সরবরাহের পাঁচটি উৎসের একটি আমির কবির বাঁধ। সেটিতে এখন মাত্র ১ কোটি ৪০ লাখ ঘনমিটার পানি আছে। এটি জলাধারটির মোট ধারণক্ষমতার মাত্র ৮ শতাংশ।
বেহজাদ পারসা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এই পরিমাণ পানি দিয়ে মাত্র দুই সপ্তাহ তেহরানের খাবার পানির চাহিদা মেটানো যাবে।
ইরানি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, তেহরানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০ লাখ ঘনমিটার পানির প্রয়োজন পড়ে।কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র খরার মোকাবিলা করছে ইরান। গত মাসে স্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, তেহরান প্রদেশে এবার বৃষ্টির যে মাত্রা, তেমনটা গত এক শতাব্দীতে খুব একটা দেখা যায়নি।
এক কোটির বেশি মানুষের নগর তেহরান তুষারাচ্ছন্ন আলবোর্জ পর্বতমালার দক্ষিণ ঢালে অবস্থিত। এই পর্বতমালার সর্বোচ্চ উচ্চতা ৫ হাজার ৬০০ মিটার (১৮ হাজার ৩৭০ ফুট) পর্যন্ত। এই পর্বতমালা থেকে উৎপন্ন নদীগুলো বহু জলাধারে পানির জোগান দেয়।
বেহজাদ পারসা বলেন, এক বছর আগেও আমির কবির বাঁধে ৮ কোটি ৬০ লাখ ঘনমিটার পানি ছিল। কিন্তু তেহরান অঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ প্রায় শতভাগ হ্রাস পেয়েছে।
তেহরানে পানি সরবরাহ করা বাকি জলাধারগুলোর বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি এই কর্মকর্তা।
ইরানি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, তেহরানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০ লাখ ঘনমিটার পানির প্রয়োজন পড়ে।
এক বছর আগেও আমির কবির বাঁধে ৮ কোটি ৬০ লাখ ঘনমিটার পানি ছিল। কিন্তু তেহরান অঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ প্রায় শতভাগ হ্রাস পেয়েছে।বেহজাদ পারসা, তেহরানে পানি সরবরাহ কোম্পানির পরিচালকপানি সাশ্রয়ের পদক্ষেপ হিসেবে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে তেহরানের বেশ কয়েকটি এলাকায় বারবার সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। আর চলতি গ্রীষ্মে ঘন ঘন পানি সরবরাহ বন্ধ রাখার ঘটনাও ঘটেছে।
জুলাই ও আগস্টে পানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য দুই দিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। ইরানে সে সময় তাপপ্রবাহের মধ্যে প্রতিদিন একাধিকবার লোডশেডিং হয়েছে।
ওই দুই মাসে তেহরানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ছাড়িয়ে গেছে, কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২২ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ছুঁয়ে গিয়েছিল।
জুলাই ও আগস্ট মাসে তেহরানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৪ ফারেনহাইট) ছাড়িয়ে গেছে, কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২২ ফারেনহাইট) ছুঁয়ে ছিল।ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘আজ যেভাবে আলোচনা হয়েছে, পানিসংকট পরিস্থিতি তার চেয়েও গুরুতর।’
ইরানজুড়ে পানিসংকট একটি বড় সমস্যা, বিশেষ করে দেশের দক্ষিণের শুষ্ক প্রদেশগুলোতে। ভূগর্ভস্থ সম্পদ ব্যবহারে অব্যবস্থাপনা ও সম্পদের অতিরিক্ত ব্যবহারকে পানি ঘাটতির জন্য দায়ী করা হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে ভূমিকা রাখছে।
আরও পড়ুনপ্রচণ্ড গরমে পানির ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় ইরানিদের কম পানি ব্যবহারের আহ্বান২০ জুলাই ২০২৫