সুন্দরবনে প্রবেশে তিন মাসের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ওই বিধিনিষেধ বলবৎ থাকবে বলে সুন্দরবনের পশ্চিম বন বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে কোনো বনজীবীকে সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না। সেইভাবে কোনো পর্যটকও এ সময়সীমায় সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবে না। 

জীব ও প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষার জন্য সুন্দরবনকে বিশ্রাম দিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বন বিভাগ জানিয়েছে। এর আগে দুই মাস বা ৬০ দিনের জন্য সুন্দরবনে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা ছিল। তবে ২০২১ সালে মন্ত্রিপরিষদের সিদ্ধান্তে নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা আরও ৩০ দিন বা এক মাস বাড়ানো হয়।

সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান, জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসে সুন্দরবন থেকে সব ধরনের সম্পদ আহরণ ও ইকো ট্যুরিজম বন্ধ থাকবে। খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এ জেড এম হাছানুর রহমানের সই করা এক লিখিত নির্দেশনা তারা গত ২৩ মে হাতে পেয়েছেন। এর প্রেক্ষিতে বন বিভাগের সব অফিস ২৬ মে থেকে সুন্দরবনে প্রবেশের পাস (অনুমতিপত্র) দেওয়া বন্ধ রেখেছে। আগে পাস নিয়ে এখনও যারা সুন্দরবনে অবস্থান করছেন, তাদের ৩১ মের মধ্যে লোকালয়ে ফিরতে বলা হয়েছে।

হাবিবুর রহমান জানান, সারা বছর হাজার হাজার বনজীবী সুন্দরবন থেকে মাছ, কাঁকড়াসহ গোলপাতা ও মধু আহরণ করেন। তাই বনকে বিশ্রাম দেওয়ার মাধ্যমে সেখানকার প্রকৃতি, প্রতিবেশসহ জীব-প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষায় প্রতি বছর তিন মাস এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এ সময় বেকার সময় কাটানো সুন্দরবনে যাতায়াতকারী জেলেরা নির্দিষ্ট পরিমাণ চাল পাবেন। 
 

 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ন দরবন পর যটক স ন দরবন প রব শ

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’

পূর্ব সুন্দরবনের নিসর্গঘেরা অভয়ারণ্যে গড়ে তোলা হয়েছে নতুন পর্যটন কেন্দ্র ‘আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার’। সবুজ ম্যানগ্রোভ বনের বুক চিরে, নদীর নোনাজলে ভেসে, প্রকৃতির নীরব সৌন্দর্যে ঘেরা এই কেন্দ্রটি চলতি নভেম্বর মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা।

পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধীন আলী বান্দা এরইমধ্যে ভ্রমণপিপাসুদের দৃষ্টি কেড়েছে। শরণখোলা রেঞ্জ অফিস থেকে ট্রলারযোগে মাত্র ৪০ মিনিটের নৌপথ পেরিয়ে পৌঁছানো যায় সেখানে। 

যাত্রাপথে চোখে পড়ে বনের গভীর সবুজ গাছগাছালি, ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে যাওয়া পাখি, কচুরিপানায় ঢাকা জলাশয় এবং সুন্দরী-গেওয়া গাছের সারি যা পর্যটকদের মোহিত করে।

বন বিভাগ জানিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টারের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু হয়। এখানে তৈরি হয়েছে ছয়তলা ভবনের সমান উচ্চতার একটি ওয়াচ টাওয়ার, যেখান থেকে সুন্দরবনের বিস্তৃত সবুজাভ দৃশ্য চোখে ধরা পড়ে। 

রয়েছে দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ফুট ট্রেইল (ওয়াকওয়ে)। পথের দুই পাশে ঘন বনের মাঝে হাঁটলে দেখা যায় প্রকৃতির আসল রূপ। এছাড়া রয়েছে মিষ্টি পানির পুকুর, হরিণ রাখার সেড, জেটি, বিশ্রামাগার, সুভেনিয়ার শপ এবং পর্যটকদের নিরাপত্তায় বনরক্ষী ও স্থানীয় গাইডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান।

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আলীবান্দা বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর মানুষের জন্য সবচেয়ে সহজগম্য স্পট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কম সময় ও কম ঝুঁকিতে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে এখানে। স্থানীয় পর্যটকরা এরইমধ্যে আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা শাহিন বলেন, “আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হলে স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে স্থানীয় গাইড, নৌযানচালক, হোটেল ব্যবসায়ী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কর্মসংস্থান বাড়বে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব পর্যটনের মাধ্যমে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতনতা বাড়বে।”

তবে পর্যটনকেন্দ্রে প্রবেশ ফি নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। আলীবান্দায় প্রবেশের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪৫ টাকা।

শরণখোলা ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল বয়াতী বলেন, ‘‘আলীবান্দায় প্রবেশ ফি ৩৪৫ টাকা, অথচ একই বনের করমজল পর্যটন পয়েন্টে ফি মাত্র ৪৬ টাকা। অনেকেই আলীবান্দায় যেতে আগ্রহী, কিন্তু ফি বেশি হওয়ায় নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।’’

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “আলীবান্দা এখন প্রায় প্রস্তুত। চলতি মাসেই এখানে হরিণ আনা হবে। বর্তমানে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে স্পটটি। যেহেতু এটি ২০১৭ সালে ঘোষণা করা অভয়ারণ্য এলাকার অন্তর্ভুক্ত, তাই সাধারণ বনাঞ্চলের তুলনায় কিছু বিধিনিষেধ ও প্রবেশ ফি বেশি রাখা হয়েছে। তবে পর্যটকদের দাবির বিষয়টি আমরা সরকারের কাছে জানাব।’’

ঢাকা/শহিদুল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমার বিধান প্রশ্নে রুল
  • ট্রাম্প কি রাজার শাসন চালাচ্ছেন
  • ইলিশ রক্ষায় জাটকা শিকারে আজ থেকে ৮ মাসের নিষেধাজ্ঞা
  • সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’
  • সুন্দরবনের বড় গেছো প্যাঁচা