সম্প্রতি এক ভার্চ্যুয়াল টকশোতে আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জু দাবি করেছেন, ‘এনসিপি পর্দার অন্তরালে আসন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করেছে। ৭০ বা ৫০টি আসন নিয়ে তারা সমঝোতার কথা বলেছে। যদি পর্দার আড়ালে আসন ভাগাভাগি হয়ে যায়, তাহলে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হয়ে যেতে পারে।’

এ বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। আজ শনিবার তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ নিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন তিনি। পোস্টে এবি পার্টির চেয়ারম্যানের দাবি প্রত্যাখ্যান করে তিনি লিখেছেন, ‘সম্প্রতি আমরা লক্ষ্য করেছি, একটি দলের প্রধান এক অনলাইন টকশোতে মন্তব্য করেছেন, ‘এনসিপি কিন্তু পর্দার অন্তরালে বিএনপির সঙ্গে সিট নেগোসিয়েশন করেছে। আমরা হাইপোথেটিকালি ধরে নিলাম, পর্দার অন্তরালে সিট নেগোসিয়েশন হয়ে গেল, একটা আন্ডারস্ট্যাডিং হয়ে গেল, তাহলে দেখবেন, ডিসেম্বর না, সবাই সেপ্টেম্বরে নির্বাচনের ব্যাপারে রাজি হয়ে যাবে।’

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমরা উল্লেখিত রাজনীতিবিদের প্রতি আমাদের সম্মান ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে বলতে চাই, বিএনপি বা অন্য কোনো দলের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির সমঝোতার দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কোনো দলের সঙ্গেই এনসিপি আসন ভাগাভাগিজনিত কোনো আলোচনায় যায়নি। কাজেই সম্মানিত ওই রাজনীতিবিদের বক্তব্য অসত্য ও বিভ্রান্তিকর। দল হিসেবে এনসিপি সারাদেশে সাংগঠনিক বিস্তৃতিকে প্রধান লক্ষ্য রেখে কাজ করে যাচ্ছে।’

এনসিপির ওই নেতা আরও বলেন, ‘আমরা আরও লক্ষ্য করেছি, উল্লেখিত আলোচনায় এবং অন্যত্র এনসিপি সম্পর্কে ভিত্তিহীন এক ইম্প্রেশন তৈরির চেষ্টা হয় যে, দল গোছানোর স্বার্থে এনসিপি নির্বাচন পেছাতে চায়। আত্মপ্রকাশের পর থেকেই এনসিপি বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ চেয়ে আসছে।’ 

হাসনাত আব্দুল্লাহ আরও বলেন, ‘এনসিপি বলে এসেছে, যেহেতু আওয়ামী লীগ আমলের ভুয়া নির্বাচনগুলোতে জনগণের ভোটাধিকার বাস্তবায়ন হয়নি; কাজেই আসন্ন নির্বাচন হতে হবে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন যাতে জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে। একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনিক সংস্কারগুলো সম্পন্ন করতে হবে।’

উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক আরও বলেন, ‘এনসিপি মনে করে, প্রশাসনিক সংস্কারসহ অন্যান্য মৌলিক সংস্কার সম্পন্ন করে নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব। তবে সংস্কার ব্যতীত আয়োজিত নির্বাচন একচেটিয়া ও একপেশে হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। জনগণের ভোটাধিকার আদায়ের লক্ষ্যে এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে জুলাই চার্টারের ভিত্তিতে সংস্কার কার্যক্রমের মধ্যে দিয়ে সুষ্ঠু গণপরিষদ ও আইনসভার নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। পাশাপাশি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক প্রতিশ্রুত জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে।’ 

হাসনাত আব্দুল্লাহ আরও বলেন, ‘যেনতেন ও প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন যেন স্রেফ ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি না হয়; বরং মৌলিক সংস্কারের মাধ্যমে অর্থবহ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক উত্তরণ ঘটুক, এনসিপি সেই প্রত্যাশা করে। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে বিভ্রান্তি এড়িয়ে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রশ্নে এনসিপি ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানায়।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ এনস প আসন ভ গ ভ গ লক ষ য পর দ র ব এনপ এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

কিছু দল পিআর ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বলে শপথ করেছে: ফখরুল

দেশের কিছু রাজনৈতিক দল পিআর ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বলে শপথ করেছে এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, “দেশের কিছু রাজনৈতিক দল এটাকে (পিআর) প্রমোট করে। তারা শপথ করে বসে আছে, পিআর ছাড়া আমরা নির্বাচনে যাব না, কী বলব?”

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের অডিটোরিয়ামে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি শফিউল বারী বাবুর ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।

আরো পড়ুন:

মানুষের প্রয়োজনে না এলে সেই সংস্কার কাজে আসবে না: ফখরুল

পদ্মা ব্যারেজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে রাজনৈতিক অঙ্গীকার জরুরি: ফখরুল

স্মরণ সভার আয়োজন করে শফিউল বারী বাবু স্মৃতি সংসদ। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল।

মির্জা ফখরুল বলেন, “সমস্যা হলো আমাদের (রাজনৈতিক দলগুলোর) নতুন নতুন চিন্তা আসছে, যেগুলো আমাদের দেশে পরিচিত নয়। সংসদে আনুপাতিক হারে নির্বাচন, এটা দেশের মানুষ বোঝেই না। পিআর কী জিনিস? জনগণ এখনো ইভিএমে ভোট দিতে পারে না, বোঝে না। সুতরাং পিআর চিন্তাভাবনা থেকে দূরে সরে যেতে হবে।”

পার্লামেন্টে জনগণের প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা না করলে সমস্যার সমাধান হবে না জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “বাইরে থেকে এসে বসে বা কাউকে নতুন নতুন চিন্তা দিয়ে কিন্তু দেশের সমস্যার সমাধান করা যাবে না। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, অবিলম্বে সংস্কারগুলো শেষ করুন। অবিলম্বে জাতীয় সনদ ঘোষণা করুন।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “গতকাল (সোমবার) বলেছিলাম, ‘বেদনায় নীল হয়ে যাচ্ছি।’ এটাই বাস্তবতা। কিন্তু এটা নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। আমরা রাজনীতি করতে এসেছিলাম একটা পরিবর্তনের জন্য। ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমসহ ১৭০০ নেতাকর্মী গুম হয়ে গেল, হাজার হাজার নেতাকর্মী প্রাণ দিল। জুলাই মাসে প্রায় দুই হাজার প্রাণ দিল তার মূল্যটা কী? দাম কী?”

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১২টি বিষয়ে সব দল ঐকমত্য পোষণ করা বিষয়টিকে পজিটিভ হিসেবে দেখেছেন বিএনপি মহাসচিব। এজন্য তিনি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

দেশে সংস্কার বিএনপির হাত ধরে শুরু মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমরা সংস্কারকে ভয় পাই না, এটাকে সাদরে গ্রহণ করি।”

প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, “আপনি (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) আমাদের চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকে বসে জাতীয় নির্বাচনের যে তারিখ নির্ধারণ করেছেন, সে সময়টাতে নির্বাচন দিন। মানুষকে তার অধিকার ফিরিয়ে দিন।”

স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন, বিএনপি চেয়াপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, সাবেক ছাত্রনেতা ফজলুল হক মিলন প্রমুখ।

ঢাকা/রায়হান/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সরকারের ভুল সিদ্ধান্তে দেশে ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিতে পারে: তারেক রহমান
  • বিএনপি নেতাকর্মীদের জনবান্ধব হতে হবে : সাখাওয়াত
  • সরকারের একটি অংশ অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে: তারেক রহমান
  • ট্রাম্পের প্রতি মার্কিন জনগণের সমর্থন ৪০ শতাংশে ঠেকেছে
  • কক্সবাজারে ৩৫ পুলিশ সদস্যের পোশাকে থাকবে ‘বডি ওর্ন ক্যামেরা’
  • খালেদা জিয়া নির্বাচন করবেন: মিন্টু
  • আশুলিয়ায় বিএনপির জনসভা ও এনসিপির পদযাত্রা আজ, নিরাপত্তা জোরদার
  • জাতিসংঘে সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশ-পাকিস্তান বৈঠক, ফিলিস্তিন ইস্যুতে উদ্বেগ
  • কিছু দল পিআর ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বলে শপথ করেছে: ফখরুল
  • মনোনয়ন নিয়ে চিন্তা করবেন না, জনগণের পাশে থাকুন : আজাদ