বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি দূরীকরণের বিষয় নিয়ে আলোচনা
Published: 31st, May 2025 GMT
ফৌজদারি ও দেওয়ানি মামলার দীর্ঘসূত্রতার বিষয় নিয়ে ঢাকার জেলা জজ আদালতে জুডিশিয়াল কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির মাধ্যমে বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি দূরীকরণের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
ঢাকা জেলা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে এ কথা জানান।
পিপি ইকবাল হোসেন বলেন, ঢাকার জেলা জজশিপে বছরে দুবার জুডিশিয়াল কনফারেন্স (বিচারিক সম্মেলন) অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার ঢাকার জেলা জজ আদালতের সম্মেলনকক্ষে অর্ধবার্ষিক জুডিশিয়াল কনফারেন্স হয়েছে। তিনি বলেন, জুডিশিয়াল কনফারেন্সে মামলার দীর্ঘসূত্রতার বিষয়ে বিচারকদের অনেকেই অভিযোগ করে বলেছেন, রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সাক্ষীদের হাজির করার ক্ষেত্রে পুলিশ অনেক সময় গড়িমসি করে থাকে। চিকিৎসকদের বিষয়ে অভিযোগ করে বলা হয়েছে, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দিতে দেরি করায় মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতা হচ্ছে। আবার হস্তবিশারদের কাছ থেকে প্রতিবেদন পেতেও অনেক সময় বিলম্ব হয়। এসব কিছুর কারণে মামলা নিষ্পত্তিতে সময় লাগছে।
পিপি ইকবাল আরও জানান, জুডিশিয়াল কনফারেন্সে বিগত পাঁচ বছরে আদালতে কতগুলো ফৌজদারি মামলা কারা হয়েছে, কতগুলো দেওয়ানি মামলা করা হয়েছে, সেসব পরিসংখ্যান সবার সামনে তুলে ধরা হয়েছে। একই সঙ্গে বিগত মাসগুলোতে কতগুলো মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে, সেসব তথ্যও কনফারেন্সে তুলে ধরা হয়েছে।
ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি বলেন, মানুষ আদালতের দ্বারস্থ হন ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায়। মামলা নিষ্পত্তিতে বিলম্ব হয় বলে বিচারপ্রত্যাশী মানুষ হতাশ হন। তদন্ত ও বিচার পর্যায়ে যেসব সংস্থা ও ব্যক্তির অদক্ষতা, অবহেলার জন্য মামলা নিষ্পত্তিতে দেরি হচ্ছে, সে বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টি আলোচনা করেছেন বিচারকেরা।
ঢাকার জেলা জজ আদালতের সম্মেলনকক্ষে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার পর জুডিশিয়াল কনফারেন্স শুরু হয়। জুডিশিয়াল কনফারেন্সে সভাপতিত্ব করেন ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ড শ য় ল কনফ র ন স ইকব ল
এছাড়াও পড়ুন:
হাসিনাকে ১০ বার ফাঁসিতে ঝোলালেও তার অপরাধ কমবে না: নাহিদ
শেখ হাসিনাকে দশবার ফাঁসিতে ঝোলালেও তার অপরাধ কমবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
বুধবার (৩০ জুলাই) রাত ৯টার দিকে সাভারের আশুলিয়ার বাইপাইলে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের চন্দ্রামুখী সাবলেনের ওপর জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “এই সাভার, এই আশুলিয়া, এই বাইপাইলের পয়েন্টে গণঅভ্যুত্থানের সময় আমাদের ছাত্র-জনতা বুক চিতিয়ে লড়াই করেছিল ফ্যাসিস্ট শক্তির বিরুদ্ধে। সাভার, আশুলিয়া গণঅভ্যুত্থানের সময় হটস্পট ছিল।”
আরো পড়ুন:
মানুষ পরিবর্তন চায়, এনসিপিকে চায়, নরসিংদীতে নাহিদ
নরসিংদীতে আজ এনসিপির পদযাত্রা
“এক দিকে নারায়ণগঞ্জ, যাত্রাবাড়ী, অন্যদিকে সাভার আশুলিয়া; ওদিকে গাজীপুর টঙ্গী, আপনারা প্রতিরোধ তৈরি করেছিলেন বলেই ঢাকা সুরক্ষিত ছিল। ঢাকার মানুষ রাজপথে নামতে সাহস করেছিল,” বলেন তিনি।
গণঅভ্যুত্থানের সময় নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে নাহিদ বলেন, “এই সাভার, আশুলিয়ায় গণঅভ্যুত্থানের সময় আমরা জানি, কী নির্মমভাবে নির্যাতন চালানো হয়েছিল, গুলি চালানো হয়েছিল; আমার ভাইয়েরা শহীদ হয়েছিল, এখানে বক্তব্য রেখেছেন শহীদ সজলের মা। যাকে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল নির্মমভাবে।”
“ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী সরকারের দোসররা সারা বাংলাদেশে আমাদের ভাইদের ওপর নিপীড়ন চালিয়েছিল, সেই শেখ হাসিনাকে দশবার ফাঁসিতে ঝোলালেও তার অপরাধ আসলে কমবে না। বাংলাদেশের মানুষ কোনো দিন ক্ষমা করবে না শেখ হাসিনাকে। কোনো দিন ক্ষমা করবে না আওয়ামী লীগকে। কোনো দিন ক্ষমা করবে না কোনো ধরনের রিফাইন আওয়ামী লীগকে,” বলেন তিনি।
ঢাকা জেলার পাঁচটি উপজেলা থেকে আগামীতে নেতৃত্ব তৈরি হবে বলে মন্তব্য করে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই উপজেলাগুলো বৈষম্য এবং বঞ্চনার শিকার হয়েছে। আমরা মনে করি এই পাঁচটি উপজেলায় অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা সম্ভব।”
তিনি বলেন, “শ্রমিক অঞ্চল রয়েছে এই সাভারেও। নানা কারণে শ্রমিকরা আন্দোলন গড়ে তোলে। কারণ শ্রমিকদের নায্যমুজুরি দেওয়া হয় না। এই শ্রমিকরাই আমাদের গণঅভ্যুত্থানে শক্তি জুগিয়েছিল। রাজপথে বুলেটের সামনে দাঁড়িয়েছিল। শ্রমিকের নায্যমুজুরির জন্য লড়াই আমরা লড়াই করতে চাই।”
চাঁদাবাজি ও দুর্নীতি প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, “আমরা সাভার-আশুলিয়াসহ পুরো ঢাকা জেলাকে চাঁদামুক্ত হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সন্ত্রাসমুক্ত জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। দুর্নীতিমুক্ত জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।”
জুলাই পদযাত্রার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে এনসিপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র হয়েছে, আমাদের বিভিন্নভাবে বাধা দেওয়া হয়েছে। আমাদের পদযাত্রায় যে জনস্রোত নেমে এসেছে, সে জনস্রোতে ঈর্ষান্বিত হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়েছে।”
“আমাদেরকে বিভিন্ন জায়গায় বাধা দেওয়া হয়েছে, হামলা করা হয়েছে। কিন্তু আমরা থেমে যাইনি, এই জনস্রোত থামানো যাইনি, পদযাত্রা থামানো যাইনি। ইনশাআল্লাহ আগামীর বাংলাদেশে, আগামীর ঢাকাতে এনসিপির দিকে এই জনস্রোত থামানো যাবে না,” যোগ করেন নাহিদ।
এনসিপির ঢাকা জেলার নেতা মেহরাব সিফাতের সভাপতিত্বে দলের মুখ্য সংগঠক নাসীরউদ্দিন পাটোয়ারী, ডা. তাসনীম জারাসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন।
সন্ধ্যা ৬টায় পথসভা শুরুর কথা থাকলেও কেন্দ্রীয় নেতারা সভাস্থলে আসেন রাত ৯টার দিকে। সন্ধ্যা থেকেই নেতাকর্মীরা সভাস্থলে যোগ দিতে থাকেন। সভা শুরুর পর অন্তত দুই শতাধিক নেতাকর্মী এতে অংশ নেন। এ সময় সভাস্থলের আশপাশে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য, এপিবিএন ও র্যাব সদস্যদের দেখা যায়।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জন্ম নেওয়া এনসিপির শীর্ষ নেতারা ৬৪ জেলায় জুলাই পদযাত্রা করে তাদের দলের প্রতিশ্রুতি দেশবাসীকে শুনিয়েছেন। বুধবার ঢাকার সাভারে কর্মসূচি করার আগে তারা নরসিংদীতে পদযাত্রা করেন। একটানা দেশের সব জেলায় একটি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের এই ধরনের পদযাত্রা কর্মসূচির নজির আর নেই।
ঢাকা/সাব্বির/রাসেল