চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এবার কমেছে পাসের হার। তবে বেড়েছে জিপিএ-৫। এবার পাসের হার ৭২ দশমিক ০৭ শতাংশ, যা গতবার ছিল ৮২ দশমিক ৮০ শতাংশ। পাসের হার কমলেও এবার বেড়েছে জিপিএ-৫। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১ হাজার ৮৪৩ জন, যা গতবার ছিল ১০ হাজার ৮২৩ জন।

পাসের হারে ছাত্রদের চেয়ে এগিয়ে ছাত্রীরা। এবার ছাত্র পাসের ৭১ দশমিক ৯৩ শতাংশ এবং ছাত্রী পাসের হার ৭২ দশমিক ১৯ শতাংশ। পাসের হারের মতো জিপিএ-৫ প্রাপ্তির দিক দিয়েও ছাত্রদের তুলনায় এগিয়ে ছাত্রীরা। এবার ছাত্র জিপিএ -৫ পেয়েছে ৫ হাজার ৪৯০ জন এবং ছাত্রী ৬ হাজার ৩৫৩ জন। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করে।

এবারের পরীক্ষায় চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের ২১৯টি কেন্দ্রে ১ হাজার ১৬৪টি বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৪১ হাজার ৩৩ জন। গত বছর অংশ নিয়েছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫৯০ জন।

চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড.

পারভেজ সাজ্জাদ চৌধুরী জানান, শিক্ষাবোর্ডের অধীনে পাঁচ জেলার মধ্যে এবার চট্টগ্রাম জেলায় মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৯৯ হাজার ২৪৬ জন, কক্সবাজারে ২১ হাজার ১৯৩ জন, রাঙামাটিতে ৭ হাজার ৯৭৪ জন, খাগড়াছড়িতে ৮ হাজার ১৭৯ জন এবং বান্দরবান জেলায় ৪ হাজার ৩৩৫ জন। এরমধ্যে ছাত্র ৬১ হাজার ৭৬৫ জন ও ছাত্রী ৭৯ হাজার ১৬২ জন। এবার ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে সর্বোচ্চ ৫৭ হাজার ৪৬৬ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। এছাড়াও মানবিক বিভাগ থেকে ৪৭ হাজার ৯০৩ জন এবং বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৩৫ হাজার ৫৫৮ জন অংশ নিয়েছে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এসএসস পর ক ষ পর ক ষ দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

গোমতীর চরে ১১ হাজার হেক্টর সবজিক্ষেত পানির নিচে

হঠাৎ ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা উজানের পানিতে তলিয়ে গেছে নদীর দুই পাশের চরের ফসলি জমি। এর মধ্যে রয়েছে চরের বিস্তীর্ণ এলাকার সবজির ক্ষেত। কৃষকরা বলছেন, গত বছরের বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে না উঠতেই এবার হঠাৎ বন্যায় ডুবছে তাদের ফসল। কষ্টের ফসল হারিয়ে যাওয়ায় কাঁদছেন চরের কৃষকরা। অনেককেই ডুবন্ত জমি থেকে নানা জাতের সবজি তুলে নিতে দেখা গেছে। 

কৃষি বিভাগ বলছে, হঠাৎ গোমতীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরের প্রায় ১১ হাজার হেক্টর জমির সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার আমতলী ও কাচিয়াতলীসহ কয়েকটি এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, চরের যেসব জমিতে করলা, মুলা, লাউসহ বিভিন্ন সবজির চাষ হয়েছিল, তা এখন পানিতে ডুবে আছে। কৃষকের অনেকেই মাথায় হাত দিয়ে নদীর কিনারায় বসে আছেন। কৃষকরা বলছেন, আর মাত্র দুই দিন সময় পেলেই এসব সবজি বাজারে তোলা যেত।

আমতলী এলাকার কৃষক সুজন মিয়া জানান, গোমতী নদীর এ চরে প্রায় ৩ একর জমিতে নানা জাতের সবজি চাষ করেছেন। আর দুই দিন পরই এসব ফসল বাজারে বিক্রি করা যেত। কিন্তু গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাতে সব ফসল তলিয়ে গেছে। তার ভাষ্য, তিনি ব্যাংক ঋণ ও কিস্তি নিয়ে দুই বছর আগে কৃষিকাজ শুরু করেছেন। তার প্রায় ১২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। কীভাবে ঋণ পরিশোধ করবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তাঁর। 

কাচিয়াতলী এলাকার কৃষক মনির হোসেন বলেন, ‘গত বছরের বন্যায় আমরা কোনো ক্ষতিপূরণ পাইনি। এবারের বন্যায় আমাদের সব ফসল পানিতে ডুবে গেল। পানিতে নেমে কিছু করলা সংগ্রহ করেছি, বাকি সব নষ্ট হয়ে গেছে।’ বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া ও দেবীদ্বারের বেশ কিছু এলাকার চিত্র একই।

পাঁচথুবী এলাকার কৃষক আবদুল কাদের ও আবদুস সালাম জানান, ৩-৪ দিন সময় পেলেই সবজি বিক্রি করতে পারতেন তারা। কিন্তু পানিতে সব ফসল ডুবে গেছে। মাচায় কিছু করলা আছে, সেগুলো নৌকায় করে গিয়ে সংগ্রহ করছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, গোমতী নদীর চরে চলতি বন্যায় প্রায় ১১ হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার পানি কমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে। সব উপজেলা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সরকার যদি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য বরাদ্দ দেয় তাহলে তারা পাবেন।

কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান জানান, গোমতী নদীর বিপৎসীমার সর্বোচ্চ পরিমাপ ১১ দশমিক ৩০ মিটার হলেও পানির উচ্চতা ৬ থেকে ৮ মিটার হলেই চরের অনেক কৃষিজমি ডুবে যায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় এই নদীর পানি ৯ দশমিক ৪৮ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছিল। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ