এবারও ছেলেদের পেছনে ফেলে এগিয়েছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের মেয়েরা। পাসের হার ও জিপিএ-৫ পাওয়ায় মেয়েরা এগিয়ে রয়েছে। তবে সাত বছরেরর মধ্যে এবারই সবচেয়ে খারাপ ফলাফল রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে। এসএসসি পরীক্ষায় এবার পাসের হার ৭৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২২ হাজার ৩২৭ জন শিক্ষার্থী। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রকাশিত রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের ফলাফলে দেখা যায়, ছাত্রীরা পাস করেছে ৮২ দশমিক ০১ শতাংশ। ছাত্রদের পাসের হার ৭৩ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১ হাজার ৯৬২ জন ছাত্রী। আর ছাত্রদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০ হাজার ৩৬৫ জন। 

সাত বছরের তুলনামূলক ফলাফলের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত বছর পাসের হার ছিল ৮৯ দশমিক ২৬ শতাংশ। তার আগের বছরগুলোর মধ্যে ২০২৩ সালে ৮৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ, ২০২২ সালে ৮৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ, ২০২১ সালে ৯৪ দশমিক ৭১ শতাংশ, ২০২০ সালে ৯০ দশমিক ৩৭ শতাংশ এবং ২০১৯ সালে ৯১ দশমিক ৬৫ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাস করেছিল।

এ বছর রাজশাহী বোর্ডে পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ৮২ হাজার ৭৯২ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৯৮৩ জন। রাজশাহী বোর্ডের অধীন ২ হাজার ৬৯০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা এবারের পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে ৯৯টি স্কুল থেকে অংশগ্রহণকারী সবাই পাস করেছে। কোনো স্কুলেই শূন্য পাসের হার দেখা যায়নি। মোট ২৬৯টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এবং পরীক্ষা চলাকালে সাতজন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আরিফুল ইসলাম বলেন, কোন ব্যাচ ভালো করে, কোনটা কিছুটা পিছিয়ে থাকে- এটাই স্বাভাবিক। এটা নিয়ে আমরা চিন্তিত নই। সবাই মিলে বসে বিশ্লেষণ করে দেখবো- কেন রেজাল্ট নিম্নমুখী।

শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আ ন ম মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, এই ব্যাচটা একটু কম মেধাসম্পন্ন হতে পারে। আবার সারাদেশেই তো পাসের হার কম। এর পেছনে অন্য কোন কারণ আছে কিনা, সেটা আমরা ঠিক বলতে পারব না।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এসএসস প স কর ছ পর ক ষ ত বছর বছর র দশম ক ফল ফল

এছাড়াও পড়ুন:

নিরঞ্জনের ‘নিরাপদ’ আম সুবাস ছড়াচ্ছে ইউরোপে

হাকিমপুরে নিরঞ্জন সরকারের বাগানের ‘নিরাপদ’ আম দেশের সীমানা ছাড়িয়ে সুবাস ছড়াচ্ছে ইউরোপেও। এরই মধ্যে তাঁর গ্যাব পদ্ধতিতে উৎপাদিত আম ইতালিতে রপ্তানি হয়েছে। দামও পাচ্ছেন ভালো। শুরুর দিকে বাগান করে তেমন সুবিধা করতে না পারলেও এখন লাভের অঙ্কটা দ্বিগুণ। 
হাকিমপুরের গোহাড়া গ্রামের যুবক নিরঞ্জন সরকার ২০১৮ সালে সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফেরেন। কিছু একটা করতে হবে সেই ভাবনা থেকে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ১৭৫ শতক জমিতে গড়ে তোলেন আমবাগান। প্রথমে ৪৫০টি আম্রপালি, বারি-৪ ও গৌড়মতী জাতের আমের চারা রোপণ করেন। এর মধ্যে ৪০টি চারা গাছ নষ্ট হয়। পরের বছর ৪১০টি গাছে আম ধরতে শুরু করে। খরচ বাদে বছরে আয় হতো দেড় থেকে ২ লাখ টাকা। চলতি বছর কৃষি বিভাগের পরামর্শে গ্যাপ পদ্ধতিতে (উন্নত কৃষি পরিচর্যা-গুড এগ্রিকালচারাল প্র্যাক্টিসেস) আম উৎপাদন শুরু করেন। ফলন ভালো হয়েছে। ৩ লাখ টাকার আম বিক্রি করেছেন। আরও ৩ লাখ টাকার আম রয়েছে বাগানে। 
নিরঞ্জন সরকারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ পদ্ধতিতে আম চাষ করতে প্রথমে বাগানের মাটি, পানি ও ফল সংগ্রহ করে এমআরএল (ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের মাত্রা) পরীক্ষার জন্য গাজীপুরে পাঠান নিরঞ্জন। ফলাফল ভালো এলে শুরু করেন গ্যাপ পদ্ধতিতে আম চাষ। এতে  দ্বিগুণ ফলন হয়। আম দেখতেও নজরকাড়া। স্থানীয় পাইকাড়রা বাগান থেকেই আম কিনে নিয়ে যান। প্রতি কেজি আম্রপালি ও বারি-৪ জাতের আম বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা দরে। গৌড়মতী জাতের আম ৪০ টাকা কেজি। এ বছর ইতালিতে ৪৫০ কেজি আম রপ্তানি করেছেন তিনি। চলতি মাসে আবারও সেখানে আম পাঠানো হবে। 
নওগাঁ জেলার ধামইরহাট থেকে আমবাগান দেখতে আসা বেকার যুবক সোহেল রানা বলেন, ফেসবুকে নিরঞ্জন সরকারের বাগান সম্পর্কে জেনেছি। এর পর সিদ্ধান্ত নিই, আম চাষ করব। তাই বাগান দেখতে আসা। ভালো লেগেছে। ছোট পরিসরে হলেও গ্যাপ পদ্ধতিতে আম চাষ শুরু করব, ভাবছি।
নিরঞ্জনের প্রতিবেশী বিমল চন্দ্র জানান, নিরঞ্জন দাদা পরিশ্রম করে সফলতার মুখ দেখেছেন। তাঁর বাগানের আম বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। এটা আমাদের গ্রামের জন্য গর্বের বিষয়।
আমচাষি নিরঞ্জন সরকার বলেন, শুরুটা খুব সহজ ছিল না। কিন্তু ধৈর্য ধরে লেগে ছিলাম। এখন ভালো ফল পাচ্ছি। মানসম্মত হওয়ায় পাইকাররা বাগান থেকেই আম কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। সেগুলো ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। ইতালিতে ৪৫০ কেজি আম রপ্তানি করেছি। এ মাসের মাঝের দিকে আরও রপ্তানি করব।   
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজেনা বেগম জানান, উপজেলায় প্রথমবারের মতো কৃষক নিরঞ্জনের হাত ধরে গ্যাপ পদ্ধতিতে আম চাষ করা হয়। তিনি সফল হয়েছেন। মানসম্মত হওয়ায় তাঁর বাগানের আম ইউরোপে রপ্তানি হচ্ছে। তাঁকে দেখে অনেক কৃষক এ পদ্ধতিতে আম চাষে আগ্রহী হয়েছেন। তাদের উৎসাহ দিতে নিয়মিত উঠান বৈঠকসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ