স্থানীয় শিল্পে কমলো কর অব্যাহতি সুবিধা
Published: 2nd, June 2025 GMT
আগামী বছরের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশের এলডিসি বা স্বল্পন্নোত দেশ থেকে উত্তরণের কথা। তখন আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে বিদ্যমান অনেক সুযোগ-সুবিধা কমে আসবে। ফলে স্থানীয় শিল্পকে প্রতিযোগিতা করেই বিশ্ববাজারে টিকে থাকতে হবে। সেই প্রস্তুতি এখন থেকেই নিচ্ছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে স্থানীয় শিল্পের বিকাশে অতিরিক্ত সুরক্ষা সুবিধা কিছু ক্ষেত্রে প্রত্যাহার, কিছু ক্ষেত্রে কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে দেশে উৎপাদিত কিছু পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়বে। তাতে পণ্যের দামও বাড়তে পারে। প্রস্তাবিত বাজেটে এমন কিছু ঈঙ্গিত দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড.
খাত-সংশ্লিষ্টদের শঙ্কা, শিল্পে উৎপাদন খরচ বাড়লে বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হবেন। তাতে বিনিয়োগের গতি মন্থর হয়ে পড়বে। কমে যাবে কর্মসংস্থান।
প্রস্তাবিত বাজেটে প্লাস্টিকের তৈরি সব ধরনের পণ্যের উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট সাড়ে ৭ থেকে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের দাম কিছুটা বাড়তে পারে।
যারা ঘরবাড়ি বানানোর পরিকল্পনা করেছেন তারাও হোঁচট খেতে পারেন। কারণ রডের উৎপাদন পর্যায়ে আরোপিত সুনির্দিষ্ট কর প্রায় ২০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে নির্মাণ খাতের প্রধান এই উপকরণটির দাম বাড়তে পারে।
২০১৯ সাল থেকে হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট এবং উৎপাদনে ব্যবহৃত উপকরণ যন্ত্রাংশ আমদানি ও স্থানীয়ভাবে কেনার ক্ষেত্রে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক অব্যাহতি সুবিধা পেয়ে আসছিল। তবে সরকারের টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এসব খাতে অব্যাহতি সুবিধা কমিয়ে আনার উদ্যোগ নিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আগামী পাঁচ বছরে তিন ধাপে ভ্যাট বসাতে যাচ্ছে সরকার। ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে দুই বছরের জন্য এসব পণ্যের স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হচ্ছে। এরপরের দুই বছর ভ্যাটের এই হার হবে সাড়ে ৭ শতাংশ, যা ২০২৯ সালের জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে। তারপরের বছর ভ্যাট আরও বেড়ে ১০ শতাংশ হবে। এটি কার্যকর থাকবে ২০৩০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। তবে এ সময়ে পণ্যগুলোর উৎপাদনে ব্যবহৃত উপকরণ যন্ত্রাংশ আমদানি ও স্থানীয়ভাবে কেনার ক্ষেত্রে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক অব্যাহতি সুবিধা বহাল থাকবে। সরকারের এমন পদক্ষেপে বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্যের উৎপাদন ব্যয় বাড়বে।
এ ছাড়া রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, এসি ও কম্প্রেসরের ক্ষেত্রেও অতিরিক্ত সুবিধা কমানো হয়েছে। স্থানীয় শিল্পকে সুরক্ষা দিতে ২০১১ সাল থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নানা অব্যাহতি সুবিধা পেয়ে আসছে। রাজস্ব বাড়াতে এখন এসব খাতের পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে স্থানীয় পর্যায়ে বিদ্যমান অব্যাহতি সুবিধা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। আগামী অর্থবছর থেকে এসব পণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত উপকরণ ও খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানির ক্ষেত্রে ভ্যাট দিতে হবে। তবে এসব খাতে বিদ্যমান বিনিয়োগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে উৎপাদনের ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় উপকরণ ও খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানির ক্ষেত্রে শর্তসাপেক্ষে সম্পূরক শুল্ক (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) ২০২৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এই পদক্ষেপের কারণে এসি-ফ্রিজের উৎপাদন খরচ ও দাম বেড়ে যাবে। ফলে নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের পক্ষে এসব পণ্য কেনা অনেকটা কঠিন হয়ে যাবে।
দেশে মোবাইল ফোন উৎপাদন ও সংযোজনের ক্ষেত্রে শর্তসাপেক্ষে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা রয়েছে। তবে এবারের বাজেটে এ ক্ষেত্রে ভ্যাট দুই থেকে আড়াই শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। সরকার ব্লেডের উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করেছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবহ ত শ আমদ ন প রস ত সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনী উপকরণ সংগ্রহ শুরু করেছে ইসি
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনী উপকরণ সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের গুদামে ইতোমধ্যেই এসব নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছানো শুরু হয়েছে।
সোমবার বিকেলে ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নির্বাচন ভবনের বেসমেন্টে অবস্থিত ইসির গুদামে নির্বাচনী সরঞ্জাম দেখতে যান। এ সময় তারা সংগৃহীত ভোটগ্রহণের বিভিন্ন সরঞ্জাম পরীক্ষা করে দেখেন।
এসব নির্বাচনী সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে ব্যালট বাক্স, লক, ঢাকনা, গানি ব্যাগ, সিল, বিভিন্ন ধরনের ফরম, প্যাকেট ইত্যাদি।
ইসি ঘোষিত কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১৬ নভেম্বরের মধ্যে মাঠ পর্যায়ের নির্বাচনী দ্রব্য, ফরম, প্যাকেট বিতরণের পরিকল্পনা রয়েছে।
নির্বাচনী সরঞ্জাম সংগ্রহের বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বাসসকে বলেন, ‘আজ বার্ষিক দ্রব্য সংগ্রহের পরিকল্পনা সংক্রান্ত মিটিং করেছি। ইতিমধ্যে নির্বাচনী সরঞ্জাম আসা শুরু হয়েছে।’
ইসি সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ বাসসকে বলেন, ‘ইতোমধ্যেই আমরা কোনো কোনো নির্বাচনী উপকরণ প্রায় অর্ধেক পেয়েছি। আবার কোনো কোনো উপকরণ এখনো আসেনি। আশা করছি, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই নির্বাচনী দ্রব্য সামগ্রী পেয়ে যাব।’
ইসি সচিব আখতার আহমেদ জানান, বর্তমানে দেশের ১০টি অঞ্চলের আওতায় ৬৪ জেলায় ৩০০ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৬১ লাখ ৬১ হাজার ২০১ জন। এবার গড়ে প্রতি ৩ হাজার ভোটারের জন্য একটি ভোটকেন্দ্র করার ভিত্তিতে মোট ৪২ হাজার ৬১৮টি ভোটকেন্দ্র প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া সব মিলিয়ে ভোটকক্ষ হবে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৪৬টি। আগামী ২০ অক্টোবর চূড়ান্ত ভোটকেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ করা হবে।
নির্বাচনী উপকরণ সংগ্রহের বিষয়ে সম্প্রতি ইসি সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ পর্যন্ত ব্রাস সিল ও সিলগালা বাদে অন্যান্য উপকরণগুলো আমরা পাচ্ছি। সময়সীমা দেওয়া আছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই উপকরণগুলো পাচ্ছি। সেপ্টেম্বরের মধ্যেই সকল দ্রব্য পাওয়া যাবে বলে আমরা আশাবাদী।’