ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা, প্রতিবাদে এক পক্ষের বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ
Published: 3rd, June 2025 GMT
শরীয়তপুর জেলা ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আজ মঙ্গলবার সকালে ৩৫ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি বাতিলের দাবিতে ছাত্রদলের একটি পক্ষ দুপুরে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে। পরে শরীয়তপুর-মাদারীপুর সড়ক শহরের কোর্ট এলাকা অবরোধ করে রাখে।
ছাত্রদল সূত্র জানায়, ২০২১ সালে শরীয়তপুর জেলা ছাত্রদলের কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়। এরপর চার বছর জেলায় ছাত্রদলের কোনো ধরনের কমিটি ছিল না। মঙ্গলবার সকালে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন স্বাক্ষরিত জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়।
৩৫ সদস্যের ওই আহ্বায়ক কমিটিতে ১৬ জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক ও ১৭ জনকে সদস্য করা হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এইচ এম জাকিরকে। তিনি শরীয়তপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী। সদস্যসচিব করা হয়েছে শরীয়তপুর সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল তালুকদারকে।
নতুন আহ্বায়ক কমিটির তালিকা মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ছাত্রদলের একটি পক্ষ বিক্ষোভ শুরু করে। তারা দুপুরে শরীয়তপুর সরকারি কলেজে ও মাদারীপুর-শরীয়তপুর সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে। এ সময় তাঁদের হাতে লাঠি, ঝাড়ু ও জুতা দেখা যায়। বিক্ষোভকারীরা কমিটি বাতিলের দাবি জানান। মিছিল শেষে কোর্ট এলাকায় সড়কের ওপর বসে অবরোধ করে রাখেন। পরে সদরের পালং মডেল থানা–পুলিশ সড়ক থেকে তাঁদের সরিয়ে দেয়। এ সময় ২০ মিনিট সড়কটিতে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।
ঢাকার একটি কলেজের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী পান্থ তালুকদারকে নতুন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে। তিনিও কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভে অংশ নেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা যারা দীর্ঘদিন নানা নির্যাতন, মামলা-হামলা উপেক্ষা করে দলটি করেছি, তাদের মতামত না নিয়ে এভাবে কমিটি ঘোষণা দেওয়া উচিত হয়নি। আমরা চাই তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে ছাত্রদের নিয়ে কমিটি করা হোক।’
আহ্বায়ক কমিটির বেশ কয়েকজন বিক্ষোভে অংশ নিয়ে কমিটি বাতিলের দাবি জানান। তাঁদের একজন শরীয়তপুর সরকারি কলেজ শাখার সাবেক সভাপতি বাবু মাদবর প্রথম আলোকে বলেন, যে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, সেখানে অধিকাংশেরই এখন আর ছাত্রত্ব নেই। তাঁরা কর্মজীবী ও বিবাহিত। যাঁকে আহ্বায়ক করা হয়েছে, তাঁর পরিবারের সব সদস্য আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত। তিনিও দলটির সঙ্গে মিলে বিগত দিনগুলো কাটিয়েছেন।
আহ্বায়ক এইচ এম জাকির প্রথম আলোকে বলেন, ‘সংগঠনটির অচলাবস্থা কাটানোর জন্য মেয়াদোত্তীর্ণ বিভিন্ন ইউনিটের কমিটি গঠন ও জেলা কমিটির সম্মেলন করে নতুন কমিটি গঠন করার জন্য আমাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন পর কমিটি ঘোষণা দেওয়ায় অনেকে কাঙ্ক্ষিত পদে যেতে পারেননি। তাঁরাই ক্ষুব্ধ ও অভিমান করে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব ঠিক হয়ে যাবে।’
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে একটি পক্ষ বিক্ষোভ করার পর সড়কের ওপর বসে পড়েছিল। তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র ক প রথম আল ক কম ট র র সড়ক সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে বকেয়া বেতন ও কারখানা চালুর দাবিতে ঢাকায় শ্রমিকদের ‘ভুখা মিছিল’
গাজীপুরে বন্ধ হয়ে যাওয়া উইনটেক্স গ্লোভস কারখানা পুনরায় চালু ও শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে আন্দোলনের ১৭তম দিনে রাজধানীতে ভুখা মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শ্রমিকেরা।
মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বিজয়নগরের শ্রম ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি পল্টন, প্রেসক্লাব, বিজয়নগর হয়ে পুনরায় শ্রম ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন আন্দোলনরত শ্রমিকেরা।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক কাজী মো. রুহুল আমিন বলেন, ১৫ জুন বেআইনিভাবে কারখানা বন্ধ করা হয়। পরদিন ১৬ জুন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের ডিআইজি, জেলা প্রশাসক এবং পরে শ্রম উপদেষ্টা ও শ্রমসচিবকে দুইবার লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়ে প্রতিকার চাওয়া হয়। আজ (বুধবার) ১৭তম দিন যাবৎ শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান আন্দোলনের পর অদ্যাবধি তাঁরা কোনো উদ্যোগ নেননি, এমনকি শ্রমিকদের সাথে কথাও বলেননি, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
কাজী মো. রুহুল আমিন আরও বলেন, শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে শ্রমিকদের সুসম্পর্কের পরিবর্তে মুখোমুখি দাঁড়ানো কারও জন্যই মঙ্গল বয়ে আনবে না।
সমাবেশে অন্য বক্তারা বলেন, অতীতের সরকারগুলোর মতো বর্তমান সরকার যদি মালিক পুষে শ্রমিক মারার পথ অনুসরণ করে, তাহলে এর পরিণতি হবে ভয়াবহ।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উইনটেক্স গ্লোভস শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের সমন্বয়ক মো. তুহিন এবং সঞ্চালনা করেন শ্রমিকনেতা জালাল হাওলাদার। আরও বক্তব্য দেন শ্রমিকনেতা মুর্শিকুল ইসলাম শিমুল, সেকেন্দার হায়াত, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।