রোনালদো নাকি ইয়ামাল, শিরোপা তুমি কার?
Published: 8th, June 2025 GMT
একটা সময়ে লিওনেল মেসির নাম উঠলে অবধারিতভাবে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর নাম চলে এতো। আবার রোনালদোর নাম আসলে মেসিকেও টেনে আনা হতো। এখনও ঠিক তাই। সময়-অসময়ে, নানা বাঁক বদলে এখনও তারা এ প্রজন্মের আইকনিক স্টার।
তবে তাদের এই সাম্রজ্যে অনেকেই ভাগ বসানোর চেষ্টায় ছিলেন। নেইমার জুনিয়র, মোহাম্মদ সালাহ, কিলিয়ান এমবাপ্পেসহ আরো অনেকেই তারকা হয়েছিলেন। কিন্তু কেউই মেসি-রোনালদোর উচ্চতায় এখনো উঠতে পারেননি।
সাম্প্রতিক সময়ে তাদের ফুটস্টেপ অনুসরণ করে আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন লামিন ইয়ামাল। বলা হচ্ছে তরুণ প্রতিশ্রুতিশীল এই ইয়ামাল হতে যাচ্ছে ভবিষ্যতের ফুটবলের সবচেয়ে বড় তারকা।
আরো পড়ুন:
ভগ্ন হৃদয়ে রোনালদোর ক্লাব ছাড়ার ইঙ্গিত
প্রো লিগে ২৪ ও ক্যারিয়ারের ৯৩৫তম গোল রোনালদোর
নিজের সামর্থ্য এরই মধ্যে দেখিয়েছেন স্পেনের তরুণ। আজ আরেকবার দেখা যেতে পারে ইয়ামাল ঝলক। সেটাও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সামনেই। স্পেন ও পর্তুগাল আজ উয়েফা নেশন্স লিগের ফাইনালে জার্মানির আলিয়াঞ্জ এরিয়ান মুখোমুখি হবে।
বলা হচ্ছে, লড়াইটা দুই প্রজন্মের তারকার লড়াই। কেননা রোনালদো এখন চল্লিশের ঘরে। ইয়ামাল আঠারো ছোঁয়ার অপেক্ষায়। বয়সের পার্থক্যই বলে দেয় রোনালদো ও ইয়ামাল পুরোপুরি ভিন্ন প্রজন্মের মানুষ। অথচ তারাই এখন নিজ দেশের জার্সিতে এক শিরোপার লড়াইয়ে মাঠে নামতে যাচ্ছে।
পর্তুগাল এর আগেও নেশন্স লিগ জিতেছে, ২০১৯ সালে। স্পেন ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন। আজ যারা জিততে দ্বিতীয়বার করে পাবে এই শিরোপা।
“আমি ম্যাচটিকে এভাবে (ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো বনাম ইয়ামাল) দেখছি না। এটাকে স্পেনের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচ হিসেবে দেখছি। স্প্যানিশ দল শুধুই ইয়ামালকে নিয়ে গড়া নয়, সম্মিলিতভাবে তারা অনেক শক্তিশালী। একইভাবে আমরাও। এটা ক্রিস্টিয়ানোর ম্যাচ নয়, জাতীয় দলের ম্যাচ…।” – বলেছেন পর্তুগিজ মিড ফিল্ডার জোয়াও নেভেস।
মেসিকে আদর্শ মেনে বড় হওয়া ইয়ামাল রোনালদোকে অগাধ সম্মান করেন। রোনালদোর মুখোমুখি হওয়াকে বড় করে দেখছেন না। নিজের কাজটা করে দলকে শিরোপা জেতানোই একমাত্র লক্ষ্য তার,
‘‘অবশ্যই সব খেলোয়াড়রা তাকে যথেষ্ট সম্মান করে, তিনি একজন ফুটবল কিংবদন্তি। আমি আমার কাজ করব, সেটা হলো ম্যাচ জেতা, এই তো।”
সেমিফাইনালে স্বাগতিক জার্মানিকে ২-১ হারায় পর্তুগাল। স্পেন ৯ গোলের উৎসবের ম্যাচে হারিয়েছে ফ্রান্সকে। দুই দল সবশেষ ২০২২ সালে নেশন্স লিগে মুখোমুখি হয়েছিল। ব্রাগায় স্পেন ১-০ গোলে জয় পেয়েছিল। হেড টু হেড লড়াইয়ে স্পেন কিন্তু এগিয়ে। ৪০ মুখোমুখি ম্যাচে ১৮ জয় স্পেনের। পর্তুগালের জয় কেবল ছয়টি। ১৬টি ম্যাচই অমীমাংসিত থেকেছে।
আজকে কার মুখে ফুটবে হাসি? শিরোপা তুমি কার? ইয়ামালের নাকি রোনালদোর?
ঢাকা/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী
আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।
রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।
মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।
বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’
বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।