একটা সময়ে লিওনেল মেসির নাম উঠলে অবধারিতভাবে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর নাম চলে এতো। আবার রোনালদোর নাম আসলে মেসিকেও টেনে আনা হতো। এখনও ঠিক তাই। সময়-অসময়ে, নানা বাঁক বদলে এখনও তারা এ প্রজন্মের আইকনিক স্টার।

তবে তাদের এই সাম্রজ্যে অনেকেই ভাগ বসানোর চেষ্টায় ছিলেন। নেইমার জুনিয়র, মোহাম্মদ সালাহ, কিলিয়ান এমবাপ্পেসহ আরো অনেকেই তারকা হয়েছিলেন। কিন্তু কেউই মেসি-রোনালদোর উচ্চতায় এখনো উঠতে পারেননি।

সাম্প্রতিক সময়ে তাদের ফুটস্টেপ অনুসরণ করে আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন লামিন ইয়ামাল। বলা হচ্ছে তরুণ প্রতিশ্রুতিশীল এই ইয়ামাল হতে যাচ্ছে ভবিষ্যতের ফুটবলের সবচেয়ে বড় তারকা।

আরো পড়ুন:

ভগ্ন হৃদয়ে রোনালদোর ক্লাব ছাড়ার ইঙ্গিত

প্রো লিগে ২৪ ও ক্যারিয়ারের ৯৩৫তম গোল রোনালদোর

নিজের সামর্থ্য এরই মধ্যে দেখিয়েছেন স্পেনের তরুণ। আজ আরেকবার দেখা যেতে পারে ইয়ামাল ঝলক। সেটাও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সামনেই। স্পেন ও পর্তুগাল আজ উয়েফা নেশন্স লিগের ফাইনালে জার্মানির আলিয়াঞ্জ এরিয়ান মুখোমুখি হবে।  

বলা হচ্ছে, লড়াইটা দুই প্রজন্মের তারকার লড়াই। কেননা রোনালদো এখন চল্লিশের ঘরে। ইয়ামাল আঠারো ছোঁয়ার অপেক্ষায়। বয়সের পার্থক্যই বলে দেয় রোনালদো ও ইয়ামাল পুরোপুরি ভিন্ন প্রজন্মের মানুষ। অথচ তারাই এখন নিজ দেশের জার্সিতে এক শিরোপার লড়াইয়ে মাঠে নামতে যাচ্ছে।

পর্তুগাল এর আগেও নেশন্স লিগ জিতেছে, ২০১৯ সালে। স্পেন ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন। আজ যারা জিততে দ্বিতীয়বার করে পাবে এই শিরোপা। 

“আমি ম্যাচটিকে এভাবে (ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো বনাম ইয়ামাল) দেখছি না। এটাকে স্পেনের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচ হিসেবে দেখছি। স্প্যানিশ দল শুধুই ইয়ামালকে নিয়ে গড়া নয়, সম্মিলিতভাবে তারা অনেক শক্তিশালী। একইভাবে আমরাও। এটা ক্রিস্টিয়ানোর ম্যাচ নয়, জাতীয় দলের ম্যাচ…।” – বলেছেন পর্তুগিজ মিড ফিল্ডার জোয়াও নেভেস। 

মেসিকে আদর্শ মেনে বড় হওয়া ইয়ামাল রোনালদোকে অগাধ সম্মান করেন। রোনালদোর মুখোমুখি হওয়াকে বড় করে দেখছেন না। নিজের কাজটা করে দলকে শিরোপা জেতানোই একমাত্র লক্ষ্য তার, 

‘‘অবশ্যই সব খেলোয়াড়রা তাকে যথেষ্ট সম্মান করে, তিনি একজন ফুটবল কিংবদন্তি। আমি আমার কাজ করব, সেটা হলো ম্যাচ জেতা, এই তো।”

সেমিফাইনালে স্বাগতিক জার্মানিকে ২-১ হারায় পর্তুগাল। স্পেন ৯ গোলের উৎসবের ম্যাচে হারিয়েছে ফ্রান্সকে। দুই দল সবশেষ ২০২২ সালে নেশন্স লিগে মুখোমুখি হয়েছিল। ব্রাগায় স্পেন ১-০ গোলে জয় পেয়েছিল। হেড টু হেড লড়াইয়ে স্পেন কিন্তু এগিয়ে। ৪০ মুখোমুখি ম্যাচে ১৮ জয় স্পেনের। পর্তুগালের জয় কেবল ছয়টি। ১৬টি ম্যাচই অমীমাংসিত থেকেছে।

আজকে কার মুখে ফুটবে হাসি? শিরোপা তুমি কার? ইয়ামালের নাকি রোনালদোর?

ঢাকা/ইয়াসিন

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ত গ ল

এছাড়াও পড়ুন:

গংগাচড়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ, আতঙ্ক কাটেনি এখনও

রংপুরের গংগাচড়ায় ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ঘিরে সহিংসতার শিকার হিন্দু পরিবারের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। তবে ঘটনার তিন দিন পরেও এলাকায় ফেরেনি অনেক পরিবার। আতঙ্কে এখনো আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে অনেকে।

গত ২৭ জুলাই রাতে ওই গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলার আগে এলাকায় মাইকিং করে লোকজন জড়ো করা হয়।

পুলিশ, প্রশাসন ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বলছেন, যারা হামলা করেছেন, তাদের মধ্যে অনেকে ছিলেন ‘বহিরাগত’। পাশের নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলা থেকে লোকজন এসে হামলা চালিয়ে চলে যায়। হামলার সময় ২২টি ঘরবাড়ি তছনছ ও লুটপাট করা হয়। 

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকায় অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প বসানো হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে পুলিশ টহল। প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ঢেউটিন, কাঠ, চাল-ডাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছে এবং ঘরবাড়ি মেরামতের কাজও শুরু হয়েছে। তবু আতঙ্কিত পরিবারগুলো। 

ক্ষতিগ্রস্তদের একজন অশ্বিনী চন্দ্র মোহান্ত বলেন, “সেদিনের ঘটনা ছিল এক ভয়াবহ। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্ম অবমাননাকারী কিশোরকে থানা হেফাজতে দিয়েছি। কিন্তু তারপরও ঘরবাড়ি রক্ষা হয়নি। স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি এবং কিছু মুরুব্বি আমাদেরকে অভয় দিয়েছিলেন, কিন্তু রক্ষা হয়নি।” 

তিনি আরো বলেন, “আমরা নিজেরাই অভিযুক্ত কিশোরকে থানায় সোপর্দ করেছি। তারপরও মিছিল নিয়ে এসে দুই দফায় আমাদের ২০ থেকে ২৫টি ঘরবাড়ি তছনছ করে দিয়ে লুটপাট করেছে তারা। এদের মধ্যে অধিকাংশ লোকেই অপরিচিত।” 

আরেক ভুক্তভোগী দেবেন্দ্র চন্দ্র বর্মন জানান, “প্রথমে অল্পসংখ্যক কম বয়সী কিছু ছেলে আসে। পরে হাজারো লোকজন এসে আমাদের বাড়িঘরে তাণ্ডব চালায়। অনেকেই এখনো আত্মীয়দের বাড়িতে। আমরা চরম আতঙ্কে আছি।”

রবীন্দ্র চন্দ্রের স্ত্রী রুহিলা রানী বলেন, “ছোট ছেলেটা যদি ভুল করে থাকে, আমরা তাকে থানায় দিয়েছি। কিন্তু তারপরও এমন ধ্বংসযজ্ঞ কেন? আমাদের গরু, সোনা-টাকা সব লুটে নিয়েছে। শুধু চাল-ডাল আর টিনে কি জীবন চলে?”

গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ও সদস্য সচিব আনিসুর রহমান লাকুসহ একটি প্রতিনিধি দল। তারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ করেন এবং পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

গংগাচড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল এমরান বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে কিশোরটিকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয় এবং পরে আদালতের মাধ্যমে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তারপরও পুলিশ প্রশাসন সর্বাত্মক নিরাপত্তায় নিয়োজিত।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহামুদ হাসান মৃধা বলেন, “অপরাধীদের ধরতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া হচ্ছে সহায়তা। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পুরো এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে।” 

উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্যমতে, হামলায় ১৫টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাতে ২২টি পরিবার বসবাস করতেন। ঘর মেরামতের পর কিছু পরিবার ফিরলেও অভিযুক্ত কিশোর ও তার চাচার পরিবারের কেউ এখনো ফিরে আসেনি।

ঢাকা/আমিরুল/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের
  • মেসি বনাম ইয়ামাল: ফিনালিসিমার সময়-সূচি ঘোষণা
  • গংগাচড়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ, আতঙ্ক কাটেনি এখনও