জিপিএইচ ইস্পাতের পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যু করার আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

গত বছর অক্টোবর মাসের শুরুতে ডিএসইর ওয়েবসাইটের এক ঘোষণায় জানানো হয়, জিপিএইচ ইস্পাত পাঁচ হাজার কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহে প্রেফারেন্স শেয়ার বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা করছে। কিন্তু ১৯ জুন বিএসইসির পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, কমিশন এই প্রস্তাবে অনুমতি দিতে পারছে না। তবে কেন অনুমোদন দেওয়া হলো না, সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

এ ছাড়া গত ফেব্রুয়ারি মাসে কোম্পানিটি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, মূলধন সংগ্রহে হংকং স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হতে চায় জিপিএইচ ইস্পাত। এ লক্ষ্যে জিপিএইচ ইস্পাতের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল হংকং সফর করেছে।

২০১২ সালে জিপিএইচ ইস্পাত দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর মাধ্যমে কোম্পানিটি শেয়ারবাজার থেকে ৬০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল। আইপিওতে কোম্পানিটি দুই কোটি শেয়ার ইস্যু করেছিল। বর্তমানে এটি ৪৮৪ কোটি টাকার মূলধনের একটি কোম্পানি। আজ ডিএসইতে এই কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল সর্বশেষ ১৭ টাকা ২০ পয়সা।

প্রেফারেন্স শেয়ার হলো কোম্পানির এমন একধরনের শেয়ার, যেখান থেকে শেয়ারহোল্ডাররা সাধারণ শেয়ারের তুলনায় বিশেষ সুবিধা পান। এই শেয়ারধারীরা পূর্বনির্ধারিত লভ্যাংশ পান এবং কোম্পানি বন্ধ হলে মূলধন ফেরত লাভের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পান, কিন্তু তাঁদের সাধারণত ভোটাধিকার থাকে না বা সীমিত থাকে। অর্থাৎ প্রেফারেন্স শেয়ারধারীরা তুলনামূলকভাবে কম ঝুঁকি নিয়ে কিছু নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেন; এটি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সুবিধাজনক মাধ্যম হিসেবে পরিচিত।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম লধন

এছাড়াও পড়ুন:

বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান খাইরুলের অনিয়ম-দুর্নীতি তদন্তে দুদক

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম খায়রুল হোসেনের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

সম্প্রতি বিএসইসি চেয়ারম্যানের কাছে এ বিষয়ে তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে দুদক। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে সংস্থাটির কাছে প্রয়োজনীয় তথ্য পাঠিয়েছে বিএসইসি। দুদক ও বিএসইসির বিশ্বস্ত সূত্র রাইজিংবিডিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিএসইসিতে পাঠানো দুদকের চিঠিতে অধ্যাপক এম খায়রুল হোসেনকে বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয়বার নিয়োগের বিষয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান নিয়োগের নীতিমালা জানতে চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তিনি দায়িত্ব পালনকালে আইপিও সুবিধা, শেয়ার অধিগ্রহণ/হস্তান্তর, মূল্য সংবেদনশীল তথ্য সরবরাহ, সেকেন্ডারি মার্কেটে অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি এবং এ সংক্রান্ত পুঁজিবাজারের যাবতীয় অনিয়ম ও কারসাজি ও পুঁজিবাজারের দুর্নীতি এবং অনিয়মের বিষয়ে যে সকল তদন্ত করা হয়েছে সেসব প্রতিবেদনের সত্যায়িত ফটোকপি দিতে বলা হয়েছে।

সেইসঙ্গে তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে যে সব  কোম্পানিকে আইপিও সুবিধা প্রদান করা হয়েছে তার তালিকাসহ ক্যাপিটাল ইস্যু-বিভাগের দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাগণের নাম, পদবি ও বিস্তারিত ঠিকানা চাওয়া হয়েছে।  এ ছাড়া মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড খাতের প্রতিষ্ঠান রেইস ম্যানেজমেন্ট পিসিএল ও এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির বিরুদ্ধে ইউনিট হোল্ডারদের অর্থ তছরুপের অভিযোগের বিষয়ে কোনো তদন্ত হয়ে থাকলে উক্ত প্রতিবেদনের কপি এবং গৃহীত ব্যবস্থা সংক্রান্ত যাবতীয় নথির কপি চাওয়া হয়েছে।

চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, অ্যাপোলো ইস্পাতের আইপিও বা তালিকাভুক্তি এবং আইপিও সুবিধাভোগী রিং শাইন টেক্সটাইলের প্লেসমেন্ট কেলেঙ্কারির ঘটনায় কোনো তদন্ত হয়ে থাকলে উক্ত প্রতিবেদনের কপি এবং গৃহীত ব্যবস্থাদির বিস্তারিত বিবরণসহ রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত কপি চেয়েছে দুদক। 

দুদক সালভো কেমিক্যাল, জেনেক্স ইফোসিস, ওরিয়ন ইনফিউশনস, ইমাম বাটন ইন্ডাস্ট্রিজ, সি পার্ল বিচ রিসোর্টস, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক ইন্ডাস্ট্রিজ, জুট স্পিনার্স, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ইন্ডাস্ট্রিজ এবং খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের শেয়ারের মূল্য হঠাৎ ও অস্বাভাবিক বৃদ্ধির বিষয়ে কোনো তদন্ত করা হয়ে থাকলে তারও বিস্তারিত নথি চেয়েছে।  

এ ছাড়া বিএসইসি কর্তৃক শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করা সংক্রান্ত যাবতীয় রেকর্ডপত্রের কপি এবং প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যুর নীতিমালা ও উক্ত প্লেসমেন্ট শেয়ারের সুবিধাভোগীগণের বিস্তারিত বিবরণসহ রেকর্ডপত্রের নথি বিএসইসিকে দিতে বলা হয়েছে।

সূত্রে জানিয়েছে, ইতোমধ্যে দুদকে চাহিদা অনুযায়ী সকল প্রয়োজনীয় নথিপত্র ও তথ্য পাঠিয়েছে বিএসইসি।

এ বিষয়ে জানতে বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের পুঁজিবাজারে ধসের পর গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের আলোকে বিএসইসিকে নতুন করে ঢেলে সাজানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালের ১৫ মে বিএসইসিতে চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন অধ্যাপক এম খায়রুল হোসেন। তিনি প্রথমবার ৩ বছরের জন্য নিয়োগ পান। এরপর ৪ বছরের জন্য পুনঃনিয়োগ পান। সর্বশেষ তাকে আরও ২ বছরে জন্য নিয়োগ দেয় সরকার।  

ঢাকা/এনটি//

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান খাইরুলের অনিয়ম-দুর্নীতি তদন্তে দুদক