দাউদকান্দিতে দেড় মাসে ডেঙ্গুতে আটজনের মৃত্যু, আক্রান্ত দেড় হাজারের বেশি
Published: 22nd, June 2025 GMT
কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌর এলাকায় গত দেড় মাসে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে অন্তত আটজনের মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ আজ রোববার ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুরুল আমিন (৫৫) নামের এক ব্যবসায়ী মারা যান। একই সময়ে দেড় হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতিমধ্যে পৌরসভার দুটি ওয়ার্ডকে গত বুধবার থেকে ‘হটস্পট’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে ২৫ জন করে দুটি দল গঠন করে এলাকায় পরিচ্ছন্নতা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত ১ মে থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দাউদকান্দি ২০ শয্যা হাসপাতালে অন্তত ১ হাজার ৬০০ রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন ১১৫ জন। তাঁদের মধ্যে ৩৭ জন পৌর এলাকার দোনারচর গ্রামের এবং ২২ জন সবজিকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। এসব রোগীর মধ্যে ২৮ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ১ মে থেকে গত বুধবার পর্যন্ত দুই শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
পরিবার ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত ১৯ মে দাউদকান্দি পৌরসভার দোনারচর গ্রামের নাজির আহমেদ চৌধুরীর স্ত্রী সালমা আক্তার (৫২) ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপর ২৫ মে দোনারচর গ্রামের নাজিম উদ্দিন (৫৫), ৭ জুন সবজিকান্দি গ্রামের প্রয়াত মতি মিয়ার স্ত্রী মাফিয়া বেগম (৬৫), ১৩ জুন দোনারচর গ্রামের রাসেল সরকারের স্ত্রী শাহীনুর আক্তার (২৩) ও দোনারচর গ্রামের ইউসুফ সরকার (৫৫), ১৭ জুন উপজেলার হাড়িযালা গ্রামের দুলাল মিয়ার স্ত্রী কাকলী আক্তার (৪৬), ১৯ জুন পৌর সদরের গৃহবধূ লিমা আক্তার (২৪) এবং সর্বশেষ আজ নাগেরকান্দি গ্রামের ব্যবসায়ী নুরুল আমিন (৫৫) ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
দোনারচর গ্রামের রাসেল সরকার বলেন, ৮ জুন থেকে তাঁর পরিবারের পাঁচ সদস্য ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত। ১৩ জুন তাঁর স্ত্রী শাহীনুর আক্তার দুটি শিশুসন্তান রেখে মারা যান। একই গ্রামের দোকানি ইব্রাহীম সরকার বলেন, ১২ দিন ধরে তাঁর পরিবারের পাঁচ সদস্য ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গ্রামের অনেকেই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত।
ছাদবাগানের ফুলের টব, টায়ার ও জরাজীর্ণ ভবনে আটকে থাকা পানি, বালতিতে জমে থাকা পানি, নালায় জমে থাকা পানি থেকে ডেঙ্গুর বিস্তার ঘটছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। দাউদকান্দি পৌরসভার ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডকে ডেঙ্গুর হটস্পট ঘোষণা করা হয়েছে। ওয়ার্ড দুটির মধ্যে ঘনবসতিপূর্ণ দোনারচর, সবজিকান্দি, সাহাপাড়া, নাগেরকান্দি ও দাউদকান্দি বাজার এলাকা পড়েছে। মৃত ও আক্রান্ত রোগীদের বেশির ভাগই এসব এলাকার বাসিন্দা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান দাউদকান্দিতে আটজনের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে চিকিৎসকেরা সার্বক্ষণিক কাজ করছেন।
দাউদকান্দি পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেদওয়ান ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় ২৫ জন করে দুটি দল গঠন করা হয়েছে। আজ থেকে দলগুলো পরিচ্ছন্নতা ও সচেতনতামূলক কাজ শুরু করেছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ ন রচর গ র ম র দ উদক ন দ প রসভ র পর ব র সরক র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকায় জাবির ৮ শিক্ষক-শিক্ষার্থী
বিশ্বসেরা ২ শতাংশ গবেষকদের তালিকায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাতজন শিক্ষক ও একজন শিক্ষার্থী স্থান পেয়েছেন।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) আমেরিকার বিখ্যাত স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির মেটা রিসার্চ ইনোভেশন সেন্টারের (মেট্রিকস) গবেষক জন পি.এ. ইয়োনিডিস গবেষণা প্রকাশনার উপর ভিত্তি করে এ তালিকা এলসিভিয়ার জার্নালে প্রকাশ করেন।
আরো পড়ুন:
হাবিপ্রবিতে ঘুষের অভিযোগে দুদকের অভিযান
বিশ্বসেরা গবেষকের তালিকায় বেরোবির ৩ শিক্ষক-শিক্ষার্থী
গবেষকদের প্রকাশনা, এইচ-ইনডেক্স, সাইটেশন ও অন্যান্য সূচকগুলো বিশ্লেষণ করে তালিকাটি প্রস্তুত করা হয়। ওই প্রতিবেদনটি বিজ্ঞানীদের ২২টি বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্র এবং ১৭৪টি উপ-ক্ষেত্রে শ্রেণিবদ্ধ করে এ তালিকায় দুটি ধাপে সেরা গবেষক নির্ধারণ করা হয়। এর একটি হল পুরো পেশাগত জীবনের ওপর, আরেকটি শুধু ১ বছরের গবেষণা কর্মের ওপর।
বার্ষিক গবেষণা মূল্যায়ন ক্যাটাগরিতে তালিকায় স্থান পাওয়া জাবির সাত শিক্ষক হলেন-পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান, এসএম দিদার উল ইসলাম, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এএ মামুন, ইন্সটিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলোজির অধ্যাপক এম শামীম কায়সার, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. সাঈদ আল-জামান, মো. নূরুল ইসলাম এবং রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক মো. এনামুল হক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আটজন গবেষকের তালিকায় স্থান পাওয়া একমাত্র শিক্ষার্থী হলেন, পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইমফরমেটিক্স বিভাগের মোহাম্মদ এ. মামুন।
এ অর্জন প্রসঙ্গে অধ্যাপক এম শামীম কায়সার বলেন, “আমি সত্যিই গর্বিত ও কৃতজ্ঞ। এটি আমার টানা চতুর্থবারের স্বীকৃতি (২০২২, ২০২৩, ২০২৪ এবং ২০২৫)। এ অর্জন কেবল আমার একার প্রচেষ্টার ফল নয়, বরং আমার সহ-লেখক, শিক্ষার্থী এবং সহযোগীদের অমূল্য সমর্থনের প্রতিফলন।”
সহকারী অধ্যাপক মো. সাঈদ আল-জামান বলেন, “স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় (যুক্তরাষ্ট্র) এবং এলসেভিয়ার কর্তৃক প্রকাশিত বিশ্বের শীর্ষ ২ শতাংশ বিজ্ঞানীদের তালিকায় স্থান পাওয়ায় আমি আসলেই কৃতজ্ঞ। প্রতি বছর জাবি থেকে কয়েকজনের নাম থাকে। তবে এবার তালিকায় আটজনের নাম এসেছে, যা সত্যি গর্বের বিষয়।”
স্ট্যানফোর্ড–এলসেভিয়ার টপ ২ শতাংশ বিজ্ঞানীদের তালিকা হলো বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত এক মানদণ্ড, যেখানে গবেষকদের অসাধারণ উদ্ধৃতি প্রভাব এবং দীর্ঘমেয়াদি একাডেমিক অবদানকে গুরুত্ব দিয়ে স্থান দেওয়া হয়। এলসেভিয়ার প্রতি বছর প্রায় ২ হাজারের বেশি জার্নাল প্রকাশ করে। প্রকাশিত জার্নালে নিবন্ধের সংখ্যা ২ লাখ ৫০ হাজারের বেশি এবং এর আর্কাইভে ৭০ লাখের বেশি প্রকাশনা রয়েছে।
ঢাকা/আহসান/মেহেদী