কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌর এলাকায় গত দেড় মাসে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে অন্তত আটজনের মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ আজ রোববার ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুরুল আমিন (৫৫) নামের এক ব্যবসায়ী মারা যান। একই সময়ে দেড় হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন।

ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতিমধ্যে পৌরসভার দুটি ওয়ার্ডকে গত বুধবার থেকে ‘হটস্পট’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে ২৫ জন করে দুটি দল গঠন করে এলাকায় পরিচ্ছন্নতা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।

দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত ১ মে থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দাউদকান্দি ২০ শয্যা হাসপাতালে অন্তত ১ হাজার ৬০০ রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন ১১৫ জন। তাঁদের মধ্যে ৩৭ জন পৌর এলাকার দোনারচর গ্রামের এবং ২২ জন সবজিকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। এসব রোগীর মধ্যে ২৮ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ১ মে থেকে গত বুধবার পর্যন্ত দুই শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

পরিবার ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত ১৯ মে দাউদকান্দি পৌরসভার দোনারচর গ্রামের নাজির আহমেদ চৌধুরীর স্ত্রী সালমা আক্তার (৫২) ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপর ২৫ মে দোনারচর গ্রামের নাজিম উদ্দিন (৫৫), ৭ জুন সবজিকান্দি গ্রামের প্রয়াত মতি মিয়ার স্ত্রী মাফিয়া বেগম (৬৫), ১৩ জুন দোনারচর গ্রামের রাসেল সরকারের স্ত্রী শাহীনুর আক্তার (২৩) ও দোনারচর গ্রামের ইউসুফ সরকার (৫৫), ১৭ জুন উপজেলার হাড়িযালা গ্রামের দুলাল মিয়ার স্ত্রী কাকলী আক্তার (৪৬), ১৯ জুন পৌর সদরের গৃহবধূ লিমা আক্তার (২৪) এবং সর্বশেষ আজ নাগেরকান্দি গ্রামের ব্যবসায়ী নুরুল আমিন (৫৫) ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

দোনারচর গ্রামের রাসেল সরকার বলেন, ৮ জুন থেকে তাঁর পরিবারের পাঁচ সদস্য ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত। ১৩ জুন তাঁর স্ত্রী শাহীনুর আক্তার দুটি শিশুসন্তান রেখে মারা যান। একই গ্রামের দোকানি ইব্রাহীম সরকার বলেন, ১২ দিন ধরে তাঁর পরিবারের পাঁচ সদস্য ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গ্রামের অনেকেই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত।

ছাদবাগানের ফুলের টব, টায়ার ও জরাজীর্ণ ভবনে আটকে থাকা পানি, বালতিতে জমে থাকা পানি, নালায় জমে থাকা পানি থেকে ডেঙ্গুর বিস্তার ঘটছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। দাউদকান্দি পৌরসভার ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডকে ডেঙ্গুর হটস্পট ঘোষণা করা হয়েছে। ওয়ার্ড দুটির মধ্যে ঘনবসতিপূর্ণ দোনারচর, সবজিকান্দি, সাহাপাড়া, নাগেরকান্দি ও দাউদকান্দি বাজার এলাকা পড়েছে। মৃত ও আক্রান্ত রোগীদের বেশির ভাগই এসব এলাকার বাসিন্দা।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান দাউদকান্দিতে আটজনের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে চিকিৎসকেরা সার্বক্ষণিক কাজ করছেন।

দাউদকান্দি পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেদওয়ান ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় ২৫ জন করে দুটি দল গঠন করা হয়েছে। আজ থেকে দলগুলো পরিচ্ছন্নতা ও সচেতনতামূলক কাজ শুরু করেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ ন রচর গ র ম র দ উদক ন দ প রসভ র পর ব র সরক র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ময়মনসিংহে বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮

ময়মনসিংহের ফুলপুরে বাস ও মাহিন্দ্রা অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে আটজনে দাঁড়িয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে ময়মনসিংহ-হালুয়াঘাট সড়কের ফুলপুর পৌরসভার কাজিয়াকান্দা ইন্দিরাপাড় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনাস্থলে পাঁচজন, ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুজন মারা যান। এই আটজনের মধ্যে একজন নারী ও বাকিরা পুরুষ।

আরও পড়ুনময়মনসিংহে দুই স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১০১৩ ঘণ্টা আগে

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক‍্যাম্প ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) শফিক উদ্দিন জানান, ফুলপুরে ওই সড়ক দুর্ঘটনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় সর্বশেষ রাত সাড়ে ১১টার দিকে একজনের মৃত্যু হয়।

নিহত ব্যক্তিদের সবার পরিচয় শনাক্ত করেছে ফুলপুর থানার পুলিশ। তাঁরা হলেন লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা থানার নিজগুড্ডিমারী গ্রামের কাজিম উদ্দিন (২৮), হালুয়াঘাট উপজেলার জয়রামকুড়া গ্রামের রুবেল (৩০), ফুলপুরের কাজিয়াকান্দা গ্রামের ফরিদ মিয়া (৩৮), নিগুয়াকান্দা গ্রামের জাহের আলী (৭০), বালিজুড়ি গ্রামের হাছিনা খাতুন (৫০), কয়ারহাটি গ্রামের শামসুদ্দিন (৬৫), কালিয়ানিকান্দি গ্রামের নয়ন মিয়া (৪০) এবং পূর্বধলা উপজেলার ইসবপুর গ্রামের লাল মিয়া (৩৬)।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আজ সকালে ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর হাদি বলেন, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখনো তিনজন চিকিৎসাধীন। পরিবারগুলোর কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার বরাতে জানা যায়, বিকল হয়ে সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা একটি লরিকে ওভারটেক করতে গিয়ে মাহিন্দ্রা ও বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। পরে পাশের বিদ্যুতের খুঁটিতে ধাক্কা লেগে মাহিন্দ্রাটি দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ছয়জন নিহত হন। বাসটি হালুয়াঘাট থেকে রাজধানী ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। আর মাহিন্দ্রাটি ছিল ফুলপুর থেকে হালুয়াঘাটগামী। দুর্ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। বাসটির চালক ও তাঁর সহকারী পলাতক আছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফুলপুরে সড়কে ৮ জন নিহতের ঘটনায় মামলা
  • ময়মনসিংহে সড়ক দুর্ঘটনায় ৮ জনের প্রাণহানির ঘটনায় মামলা
  • ডেঙ্গু-করোনায় তিনজনের মৃত্যু আক্রান্ত ৩৫৬
  • দক্ষিণ ব্রাজিলে হট এয়ার বেলুন দুর্ঘটনায় নিহত ৮
  • আকাশ থেকে বেলুন পড়ে গিয়ে ৮ জন নিহত
  • আশুলিয়ায় রাস্তা নিয়ে সংঘর্ষে আহত ৮
  • ময়মনসিংহে বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮
  • পটুয়াখালীতে ডেঙ্গু ও ডায়রিয়ার চোখ রাঙানি