গল টেস্টে ড্র বাংলাদেশের জন্য ‘মোরাল ভিক্টরি’
Published: 22nd, June 2025 GMT
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ চক্রের সফর বাংলাদেশ শুরু করেছে ড্র করে। ৪ পয়েন্ট বাংলাদেশের নামের পাশে যুক্ত হয়ে গেছে। অথচ সুযোগ ছিল শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে গল টেস্টে ম্যাচ জেতার।
সেজন্য একটু হিসাব কষা, ঝুঁকি নেওয়া ও সাহসিকতা দেখাতে হতো। সেদিকে না গিয়ে বরং নিরাপদ ক্রিকেটকেই বেছে নিয়েছে বাংলাদেশ। ফলাফল: ম্যাচ ড্র। যা শ্রীলঙ্কার জন্য স্বস্তিদায়ক হলেও বাংলাদেশের জন্য উল্টো হওয়ার কথা—জয়ের সুযোগ হাতছাড়া! তবুও এই ড্র-টিকেই হাবিবুল বাশার ‘মোরাল ভিক্টরি’ বলছেন। কেন?
উত্তরটা তার মুখ থেকেই শুনুন, ‘‘তৃপ্তি তো ছিলই। আমার মনে হয় সন্তুষ্টির জায়গাও ছিল। আমার সন্তুষ্টির জায়গা হচ্ছে, এরকম উইকেটে আমরা ওদেরকে অলআউট করতে পেরেছি (প্রথম ইনিংসে)। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের পর শ্রীলঙ্কা যেভাবে শুরু করেছিল, ওরা যদি সাড়ে পাঁচশ বা ছয়শ করে ফেলত, উল্টো তখন আমরা চাপে পড়ে যেতাম। এরকম উইকেটে একটা দলকে অলআউট করাও বড় ব্যাপার। আমরা সেটা করতে পেরেছি, যেটা ভালো দিক। শেষের দিকে (দ্বিতীয় ইনিংসে) ৪ উইকেট নেওয়াও আমাদের জন্য মোরাল ভিক্টরি। এজন্য বলব, আমি সন্তুষ্ট এবং এই টেস্ট ম্যাচটা বাংলাদেশ ভালো খেলেছে।’’
আরো পড়ুন:
আগামী বছরে রাজশাহীতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ঘোষণা
বিশ্বকাপের টিকিট পেলো কানাডা
তবে শ্রীলঙ্কা ফল হওয়ার মতো উইকেট না বানানোয় অবাক হয়েছেন হাবিবুল, ‘‘আমার প্রত্যাশা ছিল, গলে ওরা স্পোর্টিং উইকেট বানাবে, যেখানে ফল আসতে পারে। যেহেতু টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ, আমার মনে হয় সবাই চাইবে ঘরের মাঠে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সুযোগটা নিতে। এই উইকেটে যদি ছয় দিন খেলা হতো, তাহলে হয়তো ফল হতো। পাঁচ দিনে আসলে এরকম উইকেটে ফল আসা কঠিন।’’
শেষ দিনে বাংলাদেশ ১৮৭ রানের লিড নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে। আগের দিনের অপরাজিত দুই ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম ও নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটিংয়ে আক্রমণাত্মক ভাব ছিল না। বরং দেখে শুনে, স্বস্তিতে খেলার মানসিকতা ছিল। মুশফিকুর ৪৯ রানে আউট হলে বৃষ্টির বাগড়ায় ম্যাচ বন্ধ থাকে। এরপর শান্তর সেঞ্চুরির অপেক্ষায় ছিল দল। অথচ তখনও বাংলাদেশের লিড আড়াই শ’ পেরিয়ে। দেড় সেশন বাকি ছিল খেলা। আগেভাগে ডিক্লেয়ার করলে বোলাররা অন্তত বাড়তি ১৫-২০ ওভার বোলিংয়ের সুযোগ পেতেন। কেন বাংলাদেশ এই সুযোগটি নিল না, সেটাই অবাক করছে অনেককে।
অন্তত ২০ ওভার আগে ডিক্লেয়ার করলে বাংলাদেশের পক্ষেই ফল আসত, জয়ের সম্ভাবনা তৈরি হতো। হাবিবুলের কাছে এমনটা মনে হচ্ছে না, ‘‘শেষ দিনে ৪ উইকেট পাওয়ার পর আমাদের হয়তো মনে হয়েছে, বাংলাদেশ আগেভাগে ডিক্লেয়ার করলে জেতার সম্ভাবনা তৈরি করতে পারত। আমার তা মনে হয়। কারণ পঞ্চম দিনে উইকেট ততটা ব্রেক করেনি। উইকেট ফ্ল্যাট ছিল সকাল থেকে—খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। মুশফিকুর রহিম ও নাজমুল হোসেন শান্ত যখন ব্যাটিং করছিল, তখন কিন্তু দেখা গেছে উইকেট একদম ফ্ল্যাট। সেখানে আসলে কত রানে ছেড়ে দেওয়া যায়, সেই ঝুঁকিটা নিলে কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারত।’’
‘‘ওই সময়ে শান্ত কিংবা মুশফিকুর রহিম আউট হয়ে যেত, তাহলে আমরা চাপে পড়ে যেতাম। এখন হয়তো ভাবছি, সুযোগটা নিতে পারতাম। তারা চেষ্টা করেছে, আমার কাছে মনে হয়। আগে ডিক্লেয়ার করলেও খুব বেশি পরিবর্তন হতো বলে মনে হয় না,’’—যোগ করেন হাবিবুল।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড ক ল য় র করল র জন য উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
শান্তর ফিফটিতে দিন শেষ, বাংলাদেশের লিড ১৮৭
প্রথম ইনিংসে ১৪৮ রানের ইনিংস খেলা শান্ত দ্বিতীয় ইনিংসে করলেন আরেকটি ফিফটি। থারিন্দু রত্নায়াকের বলে বাউন্ডারি মেরে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন শান্ত। তার ফিফটি ছোঁয়ার পরের ওভারেই দিনের খেলা শেষ করেন আম্পায়াররা। চতুর্থ দিন শেষে ৫৭ ওভারে তিন উইকেটে ১৭৭ রান করে বাংলাদেশ। দুই ইনিংস মিলিয়ে বাংলাদেশ ১৮৭ রানে এগিয়ে। শান্ত ৫৬ ও মুশফিক ২২ রানে অপরাজিত আছেন। দুজনের জুটি থেকে আসে ৪৯ রান। এর আগে বাংলাদেশের ৪৯৫ রানের জবাবে খেলতে নেমে শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে অলআউট হয় ৪৮৫ রানে। নাঈম একাই নেন ৫ উইকেট।
আগামীকাল গল টেস্টের পঞ্চম ও শেষ দিন। বাংলাদেশকে জিততে হলে স্কোরবোর্ডে ভালো পুঁজি তুলে লঙ্কানদের অলআউট করতে হবে। ড্র করতে হলেও ভালো পুঁজি দরকার। কারণ অলআউট করা না গেলেও যেন সারাদিন পার করতে পারে বাংলাদেশ।
৭৬ রান করে ফিরলেন সাদমান: ফিফটি ছাড়িয়ে সেঞ্চুরির পথে এগোচ্ছিলেন সাদমান। কিন্তু ব্যক্তিগত ৭৬ রানে মিলান রত্নায়েকের বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে ফিরলেন তিনি। তার বিদায়ে শান্তর সঙ্গে ভাঙল ৬৮ রানের জুটি। ক্রিজে শান্তর সঙ্গী মুশফিকুর। ৪৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ১৩২। মুশফিক ৪ ও নাজমুল ৩৩ রানে অপরাজিত।
সাদমানের ফিফটি, একশ ছাড়াল বাংলাদেশের লিড: দুই উইকেট হারিয়ে সাদমান-শান্তর ব্যাটে ইতিবাচক খেলছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে টেস্ট ক্যারিয়ারে ষষ্ঠ ফিফটি তুলে ফেললেন সাদমান। বাংলাদেশের ইনিংস শতরান ছাড়ানোর পর লিডও একশ ছাড়িয়ে গেছে। ৩৬ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ২ উইকেটে ১১২। সাদমান ৬৮ ও নাজমুল ২৫ রানে অপরাজিত। তৃতীয় উইকেটে সাদমান ও নাজমুল অবিচ্ছিন্ন ৫২ রানের জুটি গড়েছেন।
ব্যর্থ হলেন বিজয়-মুমিনুল: গল টেস্টে নাজমুল শান্ত ও মুশফিকুর রহিমের সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে ৪৯৫ রান তোলে বাংলাদেশ। জবাবে শ্রীলঙ্কা ৪৮৫ রান করেছে। প্রথম ইনিংস থেকে ১০ রানের লিড পেয়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে টপ অর্ডারের দুই ব্যাটার এনামুল হক বিজয় ও মুমিনুল হককে হারিয়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে ২২ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৬৫ রান করেছে সফরকারীরা। সাদমান ইসলাম ৪৪ রান করেছেন। তার সঙ্গী অধিনায়ক নাজমুল শান্ত।
কামিন্দুর সেঞ্চুরি মিস, নাঈমের ফাইফার: চতুর্থ দিনের শুরুতে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কুশল মেন্ডিস আউট হন। পরে কামিন্দু মেন্ডিস সেঞ্চুরির আশা দিয়ে ৮৭ রানে আউট হন। বাংলাদেশের ডানহাতি অফ স্পিনার নাঈম হাসান ৫ উইকেট তুলে নেন। লাঞ্চের পরে লঙ্কানরা ২০ রানে ৪ উইকেট হারায় যার তিনটিই নিয়েছেন নাঈম।
নিশাঙ্কার ডাবলের স্বপ্ন ভঙ্গ: লঙ্কান ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কার ডাবল সেঞ্চুরির স্বপ্ন ভেঙেছেন বাংলাদেশের পেসার হাসান মাহমুদ। তৃতীয় দিনের শেষ বেলায় ২৫৬ বলে ১৮৭ রান করে বোল্ড হন তিনি। ২৩ চার ও এক ছক্কায় ইনিংস সাজান। ১১৯ রানে লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি।
শান্ত-মুশফিকের সেঞ্চুরি: গল টেস্টের প্রথম মুশফিক ৩৫০ বল খেলে ১৬৩ রান করেন। শান্ত ১৪৮ রান করে ফিরে যান। সেঞ্চুরির আক্ষেপে পুড়তে হয় লিটন দাসকে (৯০)। প্রথম ইনিংসে লঙ্কান পেসার আসিথা ফার্নান্দো ৪টি এবং মিলান রত্নায়েকে ৩ উইকেট নেন। স্পিনার থারিন্দু রত্নায়েনে নেন ৩ উইকেট।