স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় বিমানবাহিনী শুরু থেকেই ফেনীবাসীর পাশে ছিল
Published: 23rd, June 2025 GMT
বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন বলেছেন, ২০২৪ সালের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় বিমানবাহিনী শুরু থেকেই ফেনীবাসীর পাশে ছিল। হেলিকপ্টারে উদ্ধার, ত্রাণ বিতরণ, পুনর্বাসনসহ ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনা পুনর্নির্মাণে কাজ করেছে। অতীতের মতো ভবিষ্যতেও যেকোনো দুর্যোগে ফেনীবাসীর পাশে থাকবে বিমানবাহিনী।
সোমবার সকালে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার ঘোপাল ইউনিয়নের দুর্গাপুরে হাবিব উল্যাহ খান উচ্চবিদ্যালয়ে নবনির্মিত ‘শাহীন ভবন’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিমানবাহিনী প্রধান এ কথা বলেন। একই অনুষ্ঠানে ছাগলনাইয়া ও ফুলগাজী উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়।
বিমানবাহিনী প্রধান বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ক্রমবর্ধমান শিক্ষার্থীসংখ্যা ও স্থানীয় মানুষের চাহিদা বিবেচনায় চারতলা ভিত্তির ওপর দুই তলাবিশিষ্ট ‘শাহীন ভবন’ নির্মাণ করা হয়েছে। ভবনটি দুর্যোগকালীন আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করেছে বিমানবাহিনী ঘাঁটি বাশার ও ঘাঁটি এ কে খন্দকার।
বন্যাকালে বিমানবাহিনীর কার্যক্রম প্রসঙ্গে এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান বলেন, ‘পানিবন্দী গর্ভবতী নারীদের উদ্ধার করে নিরাপদে সন্তান প্রসব, নবজাতকদের হেলিকপ্টারে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া, শিশুদের মধ্যে খাবার বিতরণ, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা—সবকিছুতেই বিমানবাহিনী সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে।’
হাসান মাহমুদ খাঁন বলেন, বন্যা-পরবর্তী পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় ছাগলনাইয়া ও ফুলগাজী উপজেলার বেশ কয়েকটি স্কুল, মাদ্রাসা, এতিমখানা, ধর্মীয় উপাসনালয়, সড়কসহ বিভিন্ন স্থাপনার নির্মাণ ও সংস্কারকাজ সম্পন্ন হয়েছে।
উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারী বিমানবাহিনী প্রধান (প্রশাসন) এয়ার ভাইস মার্শাল রুসাদ দীন আছাদ ও বিমানবাহিনী ঘাঁটি বাশারের এয়ার অধিনায়ক এয়ার ভাইস মার্শাল মোহাম্মদ খায়ের উল আফসার।
স্বাগত বক্তব্য দেন বিমানবাহিনী ঘাঁটি বাশারের প্রশাসনিক শাখার অধিনায়ক গ্রুপ ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন মোহাম্মদ রাফি। বক্তব্য দেন ফেনীর জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম এবং হাবিব উল্যাহ খান উচ্চবিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জাফর উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে নবনির্মিত ভবনসহ ১২টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়। ছয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে আর্থিক সহায়তা হিসেবে চেক হস্তান্তর করেন বিমানবাহিনী প্রধান। পরে তিনি দুর্গাপুর সিংহনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নুরুল কোরআন ইসলামিয়া মাদ্রাসার উন্নয়নকাজ পরিদর্শন করেন।
অনুষ্ঠানে বিমানবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসন, সেনা ও বেসামরিক কর্মকর্তাসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ফেনী জেলার পাশাপাশি প্রতিবেশী নোয়াখালী জেলায়ও বিমানবাহিনী বন্যা-পরবর্তী বিভিন্ন উন্নয়নকাজ পরিচালনা করেছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আবারো বন্ধ করে দেওয়া হলো কাপ্তাই বাঁধের ১৬ জলকপাট
তৃতীয় দফায় কাপ্তাই বাঁধের গেট খুলে দেওয়ার ১১ দিন পর হ্রদের পানি কিছুটা কমে আসায় শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল আটটায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বাঁধের সবকটি জলকপাট।
এর আগে কাপ্তাই হ্রদে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছায় গত ৮ সেপ্টেম্বর দুপুর আড়াইটায় বাঁধের ১৬টি গেট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বাড়তে থাকায় পানি ছাড়ার পরিমাণ সর্বোচ্চ সাড়ে তিন ফুট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল।
পরবর্তীতে পানির স্তর কিছুটা কমে আসায় শুক্রবার সকাল আটটায় সবকটি গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে এখনো কাপ্তাই হ্রদের তীরবর্তী এলাকার কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে রয়েছে।
কর্ণফুলী বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান বলেন, “উজান থেকে পানির ঢল কমে আসায় এবং ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ সব বিষয় চিন্তা করে বাঁধের গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”
বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদের পানির স্তর রয়েছে ১০৮.২২ এমএসএল (মিনস সি লেভেল)। হ্রদে সবোচ্চ পানি ধারণ ক্ষমতা ১০৯ এমএসএল। তবে বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিট চালু রেখে প্রতি সেকেন্ডে ৩২ হাজার কিউসেক পানি কাপ্তাই হ্রদ থেকে কর্ণফুলী নদীতে নিষ্কাশন হচ্ছে। তাই ধীরে ধীরে পানির স্তর আরো কমে আসবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে প্রথম দফায় গত ৫ আগস্ট কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপৎসীমায় পৌঁছে যাওয়ায় সবকটি গেট এক সপ্তাহ পর্যন্ত খোলা রাখা হয়। এরপর ২০ আগস্ট আবারো হ্রদের পানি বিপৎসীমায় পৌঁছলে জলকপাট তিন দিন খোলা রাখা হয়।
ঢাকা/শংকর/এস