ফিলিস্তিনের গাজার বাসিন্দা ৪২ বছর বয়সী রিম জেইদান। তিনি দুই সন্তান মেরভাত ও আহমেদকে নিয়ে খাবারের আশায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা হেঁটে খান ইউনিস থেকে রাফায় যান। শেষমেশ তারা খাবার পাননি। পরিবার বলছে, ইসরায়েলি বাহিনী রিমকে হত্যা করেছে। 

সূর্যাস্তের ঠিক পরে রিম সন্তানদের নিয়ে রাফার ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের উদ্দেশে রওনা হন। রুটি তৈরির জন্য এক ব্যাগ নিয়ে আটা পাওয়ার আশায় ছিলেন রিম। ৫ বছর বয়সী মেয়ে রাজান বিস্কুটের আশায় ছিল। এজন্য রিম একটি ব্যাগও সঙ্গে নেন। 

আহমেদ ও মেরভাত এনবিসি নিউজকে জানায়, মায়ের সঙ্গে তারা রাফার একটি তাঁবুতে আশ্রয় পায়। ততক্ষণে বিতরণ কেন্দ্রে পৌঁছাতে দেরি হয়ে গেছে। রিম কেন্দ্রের কাছে গিয়ে শুনতে পেলেন কিছুক্ষণ আগে সেখানে গুলি চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। তখন মা ভয়ে ফিরে আসেন। 

তাঁবুতে যখন তারা বিশ্রাম নিচ্ছিলেন, হঠাৎ গুলি করতে শুরু করে ইসরায়েলি সেনারা। গুলিবর্ষণ থামলে তারা তাঁবু থেকে বেরিয়ে হাঁটা শুরু করে। ভোর ৪টার দিকে তারা আধা মাইল দূরের ত্রাণকেন্দ্রে যাচ্ছিল। ঠিক তখনই মেরভাত তার মায়ের চিৎকার শুনে পেছনে তাকাল। সে দেখতে পেল মা মাটিতে পড়ে আছেন। মুখ রক্তে ভেজা। 

মেরভাত জানায়, ‘আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম, কী করব ভাবতে পারছিলাম না, শুধু আমার মাকে রক্তের সাগরে ভাসতে দেখলাম।’ 

মেরভাত চিৎকার করে বলেছিল, ‘ওরা তোমাকে হত্যা করেছে মা। কারণ তুমি আমাদের খাবার আনতে চেষ্টা করছ।’ 

অবরুদ্ধ গাজায় মঙ্গলবারও ৭০ জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। তাদের মধ্যে ৫২ জনই খাবারের আশায় বিতরণকেন্দ্রের আশপাশে ছিলেন। রাফায় ইসরায়েলি সেনারা মঙ্গলবার ২৭ ক্ষুধার্তকে হত্যা করেছে। এছাড়া গাজার মধ্যাঞ্চলে সালাহ আল-দিন স্ট্রিটে কমপক্ষে ২৫ জন নিহত হয়েছেন। 

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় ৫৬ হাজার ৭৭ জন নিহত ও ১ লাখ ৩১ হাজার ৮৪৮ জন আহত হয়েছেন। 
আলজাজিরা জানায়, গাজায় ক্ষুধার্ত মানুষ হত্যা চলছেই। 

জাতিসংঘ জানিয়েছে, খাবার নিতে গিয়ে এ পর্যন্ত ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত ও ১,০০০ জন আহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থার প্রধান ফিলিপ লাজ্জারিনি গতকাল বলেন, ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রগুলো একেকটি মৃত্যুফাঁদ। 

অন্যদিকে দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলের ড্রোন হামলায় ৩ জন নিহত হয়েছেন। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি ড্রোন থেকে হামলা হলে একটি গাড়ি ধ্বংস হয়। সেখানে তিনজন মারা যান। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ন হত ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

খাবারের আশায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা হেঁটে ইসরায়েলের গুলিতে প্রাণ হারালেন মা

ফিলিস্তিনের গাজার বাসিন্দা ৪২ বছর বয়সী রিম জেইদান। তিনি দুই সন্তান মেরভাত ও আহমেদকে নিয়ে খাবারের আশায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা হেঁটে খান ইউনিস থেকে রাফায় যান। শেষমেশ তারা খাবার পাননি। পরিবার বলছে, ইসরায়েলি বাহিনী রিমকে হত্যা করেছে। 

সূর্যাস্তের ঠিক পরে রিম সন্তানদের নিয়ে রাফার ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের উদ্দেশে রওনা হন। রুটি তৈরির জন্য এক ব্যাগ নিয়ে আটা পাওয়ার আশায় ছিলেন রিম। ৫ বছর বয়সী মেয়ে রাজান বিস্কুটের আশায় ছিল। এজন্য রিম একটি ব্যাগও সঙ্গে নেন। 

আহমেদ ও মেরভাত এনবিসি নিউজকে জানায়, মায়ের সঙ্গে তারা রাফার একটি তাঁবুতে আশ্রয় পায়। ততক্ষণে বিতরণ কেন্দ্রে পৌঁছাতে দেরি হয়ে গেছে। রিম কেন্দ্রের কাছে গিয়ে শুনতে পেলেন কিছুক্ষণ আগে সেখানে গুলি চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। তখন মা ভয়ে ফিরে আসেন। 

তাঁবুতে যখন তারা বিশ্রাম নিচ্ছিলেন, হঠাৎ গুলি করতে শুরু করে ইসরায়েলি সেনারা। গুলিবর্ষণ থামলে তারা তাঁবু থেকে বেরিয়ে হাঁটা শুরু করে। ভোর ৪টার দিকে তারা আধা মাইল দূরের ত্রাণকেন্দ্রে যাচ্ছিল। ঠিক তখনই মেরভাত তার মায়ের চিৎকার শুনে পেছনে তাকাল। সে দেখতে পেল মা মাটিতে পড়ে আছেন। মুখ রক্তে ভেজা। 

মেরভাত জানায়, ‘আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম, কী করব ভাবতে পারছিলাম না, শুধু আমার মাকে রক্তের সাগরে ভাসতে দেখলাম।’ 

মেরভাত চিৎকার করে বলেছিল, ‘ওরা তোমাকে হত্যা করেছে মা। কারণ তুমি আমাদের খাবার আনতে চেষ্টা করছ।’ 

অবরুদ্ধ গাজায় মঙ্গলবারও ৭০ জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। তাদের মধ্যে ৫২ জনই খাবারের আশায় বিতরণকেন্দ্রের আশপাশে ছিলেন। রাফায় ইসরায়েলি সেনারা মঙ্গলবার ২৭ ক্ষুধার্তকে হত্যা করেছে। এছাড়া গাজার মধ্যাঞ্চলে সালাহ আল-দিন স্ট্রিটে কমপক্ষে ২৫ জন নিহত হয়েছেন। 

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় ৫৬ হাজার ৭৭ জন নিহত ও ১ লাখ ৩১ হাজার ৮৪৮ জন আহত হয়েছেন। 
আলজাজিরা জানায়, গাজায় ক্ষুধার্ত মানুষ হত্যা চলছেই। 

জাতিসংঘ জানিয়েছে, খাবার নিতে গিয়ে এ পর্যন্ত ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত ও ১,০০০ জন আহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থার প্রধান ফিলিপ লাজ্জারিনি গতকাল বলেন, ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রগুলো একেকটি মৃত্যুফাঁদ। 

অন্যদিকে দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলের ড্রোন হামলায় ৩ জন নিহত হয়েছেন। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি ড্রোন থেকে হামলা হলে একটি গাড়ি ধ্বংস হয়। সেখানে তিনজন মারা যান। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ