আওয়ামী লীগের শাসনামলে নির্যাতনের শিকার হওয়া সবাইকে স্বীকৃতি ও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা। তাঁরা বলেছেন, নির্যাতনমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি নতুন সামাজিক ও রাজনৈতিক চুক্তি প্রয়োজন। সেই চুক্তির মধ্য দিয়ে সবাইকে একমত হতে হবে যে নতুন বাংলাদেশে আর কারও গায়ে হাত তোলা হবে না, পেশিশক্তির ব্যবহার হবে না এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে জনগণের ওপর নির্যাতন করা হবে না।

আজ (২৬ জুন) বৃহস্পতিবার ছিল জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক নির্যাতনবিরোধী দিবস। দিবসটি উপলক্ষে বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘নির্যাতন থেকে প্রতিরোধ: স্মৃতি, ন্যায়বিচার ও প্রতিবাদের বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে দলটির মানবাধিকারবিষয়ক সেল। সেখানে এনসিপির নেতারা এসব কথা বলেন।

আলোচনায় অংশ নিয়ে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে নির্যাতিত ব্যক্তি ও পরিবারের ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে। যে পরিবার ও মানুষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁদের ক্ষতিপূরণ হচ্ছে তাঁদের সামাজিকভাবে পুনর্বাসন করা, সুরক্ষা দেওয়া এবং এ রকম ঘটনা যাতে আর কোনো দিন না ঘটে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে।

সামান্তা শারমিন বলেন, রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পর্কিত ও নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত সংস্কার কমিশনগুলোর প্রতিবেদন নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে, কিন্তু জনগুরুত্বপূর্ণ (যেমন পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন) অনেক বিষয় নিয়ে তেমন আলোচনা হচ্ছে না। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার এখন পর্যন্ত তৃণমূল পর্যায় থেকে দেশের সরকার ও রাষ্ট্রকাঠামো পরিবর্তন করার কোনো উদ্যোগ নিতে পারেনি। গুম-খুন ও নির্যাতনের পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে পুলিশ বাহিনী। পুলিশ ও র‍্যাবের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার কবে হবে?

আওয়ামী লীগের আমলে শারীরিকভাবে নির্যাতিত মানুষের সংখ্যা নিরূপণ করতে না পারাকে অন্তর্বর্তী সরকারের বড় একটি ব্যর্থতা হিসেবে উল্লেখ করেন এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব আকরাম হুসাইন। তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আমলে নির্যাতিতদের সবাইকে স্বীকৃতি ও ক্ষতিপূরণ দিতে না পারলে নতুন বাংলাদেশ গড়া যাবে না। নির্যাতনমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটা নতুন সামাজিক ও রাজনৈতিক চুক্তি লাগবে।’

আলোচনায় অংশ নেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির পিএইচডি গবেষক খন্দকার রাকিব। তিনি বলেন, আগে রাজনৈতিক কর্মীরা অন্যদের ওপর নির্যাতন করতেন বা অনেক ক্ষেত্রে ব্যক্তি পর্যায়ে নির্যাতনের ঘটনা ঘটত। কিন্তু বিগত শাসনামলে এটাকে একটা রাষ্ট্রীয় রূপ দেওয়া হয়েছে এবং রাষ্ট্রীয় নানা বাহিনী নির্যাতনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক নেতারা সরাসরি নির্যাতনের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়ে ডিসিশন (সিদ্ধান্ত) তৈরি করে তথাকথিত গোয়েন্দা বা নিজেদের সোর্স কাজে লাগিয়ে কিছু কিছু মানুষের ‘বডি প্রোফাইল’ করতেন। চিহ্নিত করার পর বাহিনীগুলো তাদের উঠিয়ে নিয়ে নানা ধরনের নির্যাতন করত।

আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব এস এম সাইফ মোস্তাফিজ ও যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাইফুল্লাহ হায়দার বক্তব্য দেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত ক এনস প র নত ন ব আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

মোহাম্মদপুরে বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ২৯

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কয়েকটি অপরাধপ্রবণ এলাকায় বুধবার দিনভর বিশেষ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অভিযোগে ২৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে তিনটি ছুরি, দুটি ধারালো চাকু, দুটি লোহার রড, একটি সাইকেল ও ৩০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়।

বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে নিয়মিত মামলা, মাদক মামলা, পরোয়ানাভুক্ত আসামি ও বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অপরাধী রয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন হীরা (১৯), রফিক (২১), আবদুর রহমান (৩৯), নাবিদ হাসান ওরফে চয়ন (২৬), খোকন (৩১), মনসুর (৩৫), জুয়েল (৩২), সানজু (২২), মিলন (৪২), শাওন (৩৬), নোয়াজ শরীফ (২৮), সেলিম (৩৪), আসাদুজ্জামান ওরফে ইমন (২৩), আনোয়ার হোসেন (৩৬), সজল (৩০), বরকত গাজী (২৮), জুয়েল (৩৮), আরমান (৩০), বাদল (৩৮), কোরবান (২৮), নয়ন (২৭), মাসরুফ (২৩), আল আমিন (২৭), রাকিব (১৮), মিলন (২৫), ওয়াজিদ (৩৬), এরশাদ (২৫), ছালাম ওরফে সামাদ (৩৭) ও দিলসার (৩০)।

সম্পর্কিত নিবন্ধ