প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের জন্মদিন আজ
Published: 28th, June 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলবিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের জন্মদিন আজ। ১৯৪০ সালের এই দিনে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার বাথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
শনিবার (২৮ জুন) জন্মদিন উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অনেকে।
প্রধান উপদেষ্টার জন্মদিন উপলক্ষে তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম শুভেচ্ছা জানিয়ে ফেসবুকে দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেখানে তিনি লেখেন, “শুভ জন্মদিন, স্যার। আপনার সঙ্গে কাজ করার সৌভাগ্য আমার জীবনের অন্যতম গৌরব।”
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বাবা দুলা মিঞা সওদাগর ও মায়ের নাম সুফিয়া খাতুন। স্ত্রী অধ্যাপক দিনা আফরোজ। অধ্যাপক ইউনূসের দুই মেয়ে রয়েছে।
২০০৬ সালে মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। এরপর তিনি হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর।
ছোটবেলা থেকে মুহাম্মদ ইউনূস ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। চট্টগ্রামের কলিজিয়েট স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন পরীক্ষায় তিনি ১৬তম হন। পরে চট্টগ্রাম কলেজে পড়াশোনা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক করেন ড.
১৯৬১ সালে চট্টগ্রাম কলেজের অর্থনীতির প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনার জন্য ফুলব্রাইট স্কলারশিপ লাভ করেন।
১৯৭১ সালে ভান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম ইন ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। সেখানে পরে আমেরিকার মার্সিসবোরোতে মিডিল টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে অর্থনীতির সহকারী অধ্যাপক ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধে অবদান
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি আমেরিকায় একটি নাগরিক কমিটি গঠন করেন এবং অন্যান্য বাংলাদেশিদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তিযুদ্ধের জন্য সমর্থন সংগ্রহ করতে ‘বাংলাদেশ ইনফরমেশন সেন্টার’ পরিচালনা করেন।
গ্রামীণ ব্যাংকের শুরু দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষের পর অধ্যাপক ইউনূস মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসেন। চালু করেন গ্রামীণ অর্থনৈতিক প্রকল্প।
১৯৭৬ সালে পার্শ্ববর্তী জোবরা গ্রামে পরীক্ষামূলকভাবে গ্রামীণ ব্যাংক প্রকল্প চালু করেন। ১৯৮৩ সালে এই প্রকল্পটি ‘গ্রামীণ ব্যাংক’ হিসেবে রূপান্তরিত হয়। বাংলাদেশের অধিকাংশ গ্রামে এর কর্মকাণ্ড বিস্তৃত। বাংলাদেশের বাইরেও আমেরিকাসহ গ্রামীণ ব্যাংক পদ্ধতি বিশ্বের ৪০টি দেশে এ মডেল অনুসরণ করা হচ্ছে।
অর্জন ও সম্মাননা
অধ্যাপক ইউনূস ২০০৬ সালে তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন, যা তাকে বাংলাদেশের প্রথম নোবেলজয়ী হিসেবে বিশ্বমঞ্চে স্বীকৃতি এনে দেয়। এছাড়া, তিনি বিশ্বখাদ্য পুরস্কার, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম ও কংগ্রেশনাল গোল্ড মেডেলসহ দেশি-বিদেশি অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান
২০২৪ সালের জুলাইয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে দেশের রাজনীতিতে বড় পরিবর্তনের সূচনা ঘটে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার শাসনের পতনের পর ৮ অগাস্ট মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়, যেখানে তিনি প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন।
ঢাকা ইভা
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রস ক র ইউন স র
এছাড়াও পড়ুন:
দেবী দুর্গা শক্তি ও সাহসের মূর্ত প্রতীক: মির্জা ফখরুল
শারদীয় দুর্গাপূজা ও বিজয়া দশমী উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বী সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শারদীয় দুর্গাপূজা বাঙালি হিন্দু জনগোষ্ঠীর জীবনে এক আলোকদীপ্ত বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। সুদীর্ঘকাল ধরে বাংলাদেশসহ বাঙালি হিন্দু জনগোষ্ঠীর এই ধর্মীয় উৎসব এক ঐশ্বর্যময় ঐতিহ্য মহিমামণ্ডিত। দেবী দুর্গা শক্তি ও সাহসের মূর্ত প্রতীক।
বুধবার (২ অক্টোবর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
নিউইয়র্কে ডিমকাণ্ড: হার্ড লাইনে এনসিপি, ‘প্রভাব পড়বে রাজনীতিতে’
নিউইয়র্কে রাজনৈতিক নেতাদের ওপর হামলার নিন্দা অন্তর্বর্তী সরকারের
মির্জা ফখরুল বলেন, “হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় এবং সামাজিক উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ও বিজয়া দশমী। এ উপলক্ষে আমি সনাতন ধর্মাবলম্বী সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও প্রাণঢালা অভিনন্দন। তাদের অব্যাহত সুখ, শান্তি ও কল্যাণ কামনা করছি।”
পৃথিবীতে অঞ্চলভেদে যেকোনো উৎসবই মানুষের মধ্যে স্বর্গীয় আনন্দ ও শুভেচ্ছার বার্তা নিয়ে আসে, উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “উৎসবের প্রাঙ্গণে কোনো বিধিনিষেধ নেই। সেটি প্রত্যেক মানুষেরই মিলনক্ষেত্র। বাংলাদেশের মৃত্তিকার গভীর থেকে যে ইতিহাস-ঐতিহ্য উৎসারিত হয়, সেটি ধর্মীয় স্বাধীনতা-মূল্যবোধকে অন্তর্ভুক্ত করে। দুর্গাপূজার মূল বাণী হচ্ছে, অশুভের ওপর শুভের জয়। দুর্গা তার গৌরবময় লক্ষ্য অর্জনের জন্য মন্দকে উপলব্ধি করেন, তা প্রতিহত করেন।”
ধর্মীয় উৎসব সাম্প্রদায়িক কোনো বৃত্তে আবদ্ধ থাকে না, উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, “উৎসব বৃত্ত অতিক্রম করে সব মানুষকে নিয়ে উদযাপিত হয়। মানুষের আত্মাকে মিলনের বোধে উদ্দীপ্ত করে।”
অপশক্তির অশুভ তৎপরতা দুর্গাপূজার উৎসবে যাতে কোনোভাবেই বিঘ্ন ঘটাতে না পারে, সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান বিএনপির মহাসচিব।
তিনি বলেন, “সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের জাতীয় ঐতিহ্যের অংশ। আমরা সবাই বাংলাদেশি, এটিই আমাদের গর্ব, এটিই আমাদের একমাত্র পরিচয়।”
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সবাইকে সতর্ক করে বলেন, “পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনে বারবার সাম্প্রদায়িক উসকানি, বিভিন্ন ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর দেবালয় আক্রমণ-ভাঙচুরসহ নানা অপ্রীতিকর সাজানো ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। তাদের ঘাপটি মেরে থাকা অনুচরেরা এখনো তৎপর। তবে, অশুভ চক্রের চক্রান্ত ঠেকাতে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে পূজামণ্ডপে পাহারা দিচ্ছে। যাতে শান্তি ও সহাবস্থানের মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হতে পারে। তাদের প্রতিহত করতে বিএনপি অঙ্গীকারবদ্ধ।”
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রফিক