বিডায় শিল্প প্রকল্প নিবন্ধন, বিদেশি কর্মীর ওয়ার্ক পারমিটসহ অন্য সেবা কীভাবে নেবেন
Published: 29th, June 2025 GMT
আপনার প্রতিষ্ঠানে বিদেশি কর্মী নিয়োগ করতে চাইছেন? তাহলে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে কীভাবে ভিসার সুপারিশ ও ওয়ার্ক পারমিট নিতে হয়। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) ওয়ান–স্টপ সার্ভিস (ওএসএস) প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সহজেই এ জন্য আবেদন করতে পারবেন। ধাপে ধাপে বিস্তারিত থাকছে এই প্রতিবেদনে।
বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনার জন্য বিদেশি কর্মী নিয়োগ বা বিদেশি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করতে হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নির্দিষ্ট অনুমোদন ও কাগজপত্র গ্রহণ করতে হয়। বিশেষ করে ভিসা সুপারিশ ও ওয়ার্ক পারমিটের মতো গুরুত্বপূর্ণ অনুমোদনগুলো এখন অনলাইনের মাধ্যমে সহজেই পাওয়া সম্ভব। বিডা পরিচালিত ওএসএস প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বিনিয়োগকারীরা ঘরে বসেই এসব সেবার জন্য আবেদন করতে পারেন। পাশাপাশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রজেক্ট রেজিস্ট্রেশন ও শাখা বা লিয়াজোঁ বা প্রতিনিধি অফিসের অনুমোদন বিষয়েও জানা যাবে এ প্রতিবেদন থেকে।
ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রজেক্ট রেজিস্ট্রেশন
ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রজেক্ট রেজিস্ট্রেশন বা শিল্প প্রকল্প নিবন্ধন পেতে হলে বিডার ওএসএস অ্যাকাউন্টে লগইন করে ‘বিডা রেজিস্ট্রেশন’ মেনুতে ক্লিক করতে হবে। এরপর যে আবেদন ফরমটি আসবে, তা ওএসএস প্ল্যাটফর্মে দেওয়া বেসিক ফরমের তথ্য অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয়ভাবে পূরণ হয়ে যাবে। নতুন আবেদন পূরণ করতে চাইলে ‘নিউ অ্যাপ্লিকেশন’ মেনুতে ক্লিক করতে হবে। আবেদন ফরম সফলভাবে পূরণের পর সাবমিট অপশনে ক্লিক করে আবেদন জমা দিতে হবে।
এ জন্য পেমেন্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ধারিত হবে। আবেদন জমা দেওয়ার আগে আপনাকে পেমেন্ট নিশ্চিত করতে হবে। সংশ্লিষ্ট আবেদনটি বিডা কর্তৃক অনুমোদনের পর আপনি ওএসএসে থাকা আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে শিল্প প্রকল্প নিবন্ধনের সনদটি সংগ্রহ ও ডাউনলোড করতে পারবেন।
শাখা বা লিয়াজোঁ বা প্রতিনিধি অফিস অনুমোদন
বিনিয়োগকারীরা বিডা থেকে বাংলাদেশে তাঁদের শাখা (ব্রাঞ্চ) বা লিয়াজোঁ বা প্রতিনিধি (রিপ্রেজেন্টেটিভ) অফিসের অনুমোদন নিতে পারবেন। বিডার ওএসএস সিস্টেম থেকে এ অনুমোদনের আবেদন করতে হবে।
এ জন্য প্রথমে ওএসএস অ্যাকাউন্টে লগইন করে ‘অফিস পারমিশন’ মেনুতে ক্লিক করতে হবে। এখান থেকে শাখা বা লিয়াজোঁ বা প্রতিনিধি অফিস খোলা, সময় বাড়ানো, পরিবর্তন বা বাতিল করার জন্য আবেদন করা যাবে। ‘নিউ অ্যাপ্লিকেশন’ অপশনে ক্লিক করে বিস্তারিত আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। প্রয়োজনীয় সব ঘর পূরণ করে আবেদন জমা দিতে হবে। আবেদন জমা দেওয়ার পর বিনিয়োগকারীরা ড্যাশবোর্ডে আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা দেখতে পারবেন। বিডা কর্তৃক অনুমোদনের পর অনুমোদনপত্র ড্যাশবোর্ডে দেখা যাবে। সেখান থেকে আপনি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
ওয়ার্ক পারমিট
বিদেশি কর্মীদের জন্য ওয়ার্ক পারমিটের জন্যও বিডাতে আবেদন করতে হবে। এ জন্য বিডার ওএসএস প্ল্যাটফর্মে লগইন করে ‘ওয়ার্ক পারমিট’ মেনুতে ক্লিক করতে হবে। এরপর একটি আবেদন ফরম আসবে, যা আগে জমা দেওয়া বেসিক ফরমের তথ্য অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয়ভাবে পূরণ হয়ে যাবে। বিনিয়োগকারীরা নতুন ওয়ার্ক পারমিট, ওয়ার্ক পারমিটের সময় বৃদ্ধি, সংশোধন বা বাতিলের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
যদি আবেদন অসম্পূর্ণ হয় অথবা তাতে ভুল তথ্য বা ভুয়া নথি থাকে, তাহলে বিডার প্রতিনিধি আবেদন গ্রহণে অস্বীকৃতি জানাতে পারবেন এবং আবেদনকারীকে সে বিষয়ে অবহিত করা হবে। আর সব ঠিক থাকলে ওএসএসের ড্যাশবোর্ড থেকে আবেদনকারী ব্যক্তি তাঁর আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা দেখতে পারবেন।
ভিসা সুপারিশ
বাংলাদেশে কাজ করা বিদেশি কর্মীদের জন্য ভিসা সুপারিশ পেতে বিডায় আবেদন করতে হয়। এ জন্য বিডার ওএসএস অ্যাকাউন্টে লগইন করে ‘ভিসা রিকমেন্ডেশন’ মেনুতে ক্লিক করুন। এরপর ওএসএসে আগে দেওয়া বেসিক ফরম অনুযায়ী আবেদন ফরম স্বয়ংক্রিয়ভাবে পূরণ হয়ে যাবে।
কর্মীদের জন্য পাঁচ ধরনের ভিসার সুপারিশ করা যায়। এগুলো হচ্ছে ই টাইপ, পিআই টাইপ, ই১ টাইপ, এথ্রি টাইপ ও অন অ্যারাইভাল ভিসা। বিনিয়োগকারীরা এর মধ্য থেকে যেটি প্রয়োজন, সেটির সুপারিশের জন্য আবেদন করতে পারবেন। নতুন ভিসা সুপারিশের পাশাপাশি ভিসা সুপারিশ সংশোধনের জন্যও আবেদন করা যাবে।
আবেদন জমা দেওয়ার আগে অবশ্যই ভিসার ধরন নিশ্চিত করতে হবে। তারপর ‘অ্যাগ্রি’ অপশনে টিক দিয়ে আবেদন ফরমটি খুলতে হবে। সফলভাবে আবেদন জমা দেওয়ার পরে তা ড্যাশবোর্ডে দেখা যাবে। আবেদন অসম্পূর্ণ থাকলে আপনি আবেদনটি সম্পাদনা করে আবার জমা দিতে পারবেন।
জমা দেওয়ার আগে অবশ্যই সেবা ফি প্রদান করতে হবে। ফি দেওয়ার পরেই কেবল আবেদনটি সফলভাবে জমা হবে। বিডা ভিসা সুপারিশ অনুমোদন করলে ইলেকট্রনিকভাবে তৈরি সার্টিফিকেট ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্টে পাঠানো হবে। একই সঙ্গে ই–মেইলেও সেটি পাঠানো হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ড র ওএসএস প ল য টফর ম অ য ক উন ট ক ল ক করত ক ল ক কর এ জন য প রব ন ন করত
এছাড়াও পড়ুন:
ইসির প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ ২২ দল, আছে ‘বাংলাদেশ বেকার সমাজ’ও
রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রাথমিক যাচাই–বাছাইয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) অন্তত ২২টি দল উত্তীর্ণ হয়েছে। দ্রুত এসব দলের কার্যক্রম মাঠপর্যায়ে তদন্তের জন্য পাঠানো হবে বলে ইসি সূত্রে জানা গেছে। এরপর নিবন্ধনের জন্য ইসি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
আজ সোমবার ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এর আগে গতকাল রোববার মাঠপর্যায়ের যাচাই–বাছাই শেষে তদন্তের জন্য প্রাথমিকভাবে ১৬টি দলের তালিকা করে কমিশন। আরও একদিনের যাচাইয়ে সোমবার এ সংখ্যা বেড়ে ২২টি হয়েছে।
গত ২২ জুন পর্যন্ত নিবন্ধন পেতে ইসিতে আবেদন করে দলগুলো। তখন প্রাথমিক বাছাইয়ে কোনো দলই শর্ত পূরণ করতে পারেনি। এরপর সবগুলো দলকে প্রয়োজনীয় ঘাটতি পূরণে ১৫ দিন সময় দেয় ইসি। ৩ আগস্ট শেষ সময় পর্যন্ত এনসিপিসহ ৮৪টি রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের শর্ত পূরণের তথ্য ইসিতে জমা দেয়। এরপর যাচাইয়ে ২২টি দল প্রাথমিকভাবে উত্তীর্ণ হয়।
যাচাই–বাছাই শেষে উত্তীর্ণ হওয়া ২২টি দল হলো– ‘ফরওয়ার্ড পার্টি, আমজনতার দল, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি), বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি), বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), মৌলিক বাংলা, বাংলাদেশ জাস্টিস এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, জাতীয় জনতা পার্টি, জনতার দল, জনতা পার্টি বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ জাতীয় লীগ, ভাসানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)–সিপিবি (এম), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ–শাহজাহান সিরাজ), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ বেকার সমাজ (বাবেস), বাংলাদেশ সলুশন পার্টি এবং নতুন বাংলাদেশ পার্টি।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘১৪৩টির মধ্যে ৮৪টি দল তথ্য ঘাটতি পূরণ করে জমা দেয়, ৫৯টি দল কোনো ধরনের সাড়া দেয়নি। এ ৮৪টি দলের মধ্যে ২২টি দলের তথ্য সঠিক রয়েছে বলে আপাতত পাওয়া গেছে। যেগুলোর মাঠ পর্যায়ে ভেরিফিকেশনের (যাচাই-বাছাই) জন্য চলে যাবে। বাকি ১২১টি দল অযোগ্য বিবেচিত হয়েছে। তাদেরকে কারণ দর্শানো নোটিশসহ আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ফেরত দেওয়া হবে।’
আইন অনুযায়ী, কোনো রাজনৈতিক দল ইসির নিবন্ধন পেতে চাইলে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটি, দেশের এক-তৃতীয়াংশ জেলা ও ১০০টি উপজেলা কমিটি এবং প্রতিটি কমিটিতে ২০০ জন ভোটারের সমর্থনের প্রমাণ থাকতে হয়। এ ছাড়া কোনো দলের কেউ অতীতে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে থাকলে বা আগের নির্বাচনের পাঁচ শতাংশ ভোট পেলেও নিবন্ধন পাওয়ার যোগ্যতা হিসেবে ধরা হয়। প্রধান এ শর্তগুলো ছাড়াও বেশ কিছু নিয়মকানুন মেনে আবেদন করতে হয় দলগুলোকে।
নিবন্ধনপ্রক্রিয়ায় দলগুলোর আবেদন পাওয়ার পর প্রাথমিক বাছাই করে কমিশন। এরপর সেই দলগুলোর তথ্যাবলি মাঠপর্যায়ে সরেজমিন তদন্ত শেষে কমিশনের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়। এরপর নির্বাচন কমিশন যদি নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তখন কারও দাবি বা আপত্তি আছে কি না, সে জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। কোনো আপত্তি এলে শুনানি করে তা নিষ্পত্তি করা হয়। আর কোনো আপত্তি না থাকলে সংশ্লিষ্ট দলগুলোকে নিবন্ধন সনদ প্রদান করা হয়। নিবন্ধন ছাড়া কোনো দলের পক্ষে নিজ প্রতীকে ভোটে প্রার্থী দেওয়ার সুযোগ থাকে না। ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের আগে এই নিবন্ধন প্রথা চালু করে ইসি। দেশে বর্তমানে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৫১টি (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগসহ)।
আরও পড়ুন‘বাংলাদেশ বেকার সমাজের’ কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছেলের বাসার ‘ড্রয়িংরুম’২৪ জুন ২০২৫