মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমধ্যমে কটুক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (২৮ জুন) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বটতলা থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় সেখানে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।

অভিযোগ রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তৌফিক নাবিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মহানবী (সা.

)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন। এ অভিযোগ ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

আরো পড়ুন:

ঢাবিতে নবীনদের আবাসন সংকট নিরসনে ছাত্রশিবিরের ৪ দাবি

চবি বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তরের ফলাফল পুনর্মূল্যায়নের দাবি

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা, ‘রাসূলের অপমান, সইবে নারে মুসলমান’, ‘শাতিমের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘বিচার চাই, শাতিমের বিচার চাই’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন। 

সমাবেশে বাংলা বিভাগের ৫০তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা আজ ব্যথিত হৃদয়ে এখানে দাঁড়িয়েছি। এই কটুক্তি আমাদের মনে শতগুণে বেশি আঘাত করেছে। প্রশাসনের কাছে আমরা দাবি জানাই, রবিবারের মধ্যে তদন্ত করে দোষীর বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় আমরা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।”

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাবি শিক্ষার্থীরা ফেসবুকে নিন্দা জানিয়ে তৌফিক নাবিলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। 

সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জিয়া উদ্দিন আয়ান তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তৌফিক নাবিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)–কে নিয়ে কটূক্তি করে ইসলাম ধর্মাবলম্বী কোটি মুসলমানের হৃদয়ে গভীর আঘাত হেনেছে। এই জঘন্য আচরণ শুধু ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত নয়, বরং এটি বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”

তিনি বলেন, “আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একইসঙ্গে জোর দাবি জানাই, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন এই ছাত্রের বিরুদ্ধে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। আমরা আশা করি, প্রশাসন তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করবে, যেন দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার উপযুক্ত বিচার নিশ্চিত করা যায়। ধর্মীয় অনুভূতির অপমান কোনো মত প্রকাশের স্বাধীনতা নয়, এটি অপরাধ। এই অপরাধের বিচার হতেই হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আব্দুর রশিদ জিতু ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী কর্তৃক আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক, স্পর্শকাতর এবং আমাদের ধর্মীয় অনুভূতিকে গভীরভাবে আঘাত করেছে।”

তিনি বলেন, “আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, অবিলম্বে এই ঘটনার সত্যতা নিরূপণে নিরপেক্ষ তদন্ত করা হোক। যদি অভিযোগের ভিত্তিতে সত্যতা প্রমাণিত হয়, তাহলে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।”

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী তৌফিক নাবিল তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি এই পোস্ট করিনি। কেউ আমার নামে ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে পরিকল্পিতভাবে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ. কে. এম. রাশিদুল আলম বলেন, “বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চিঠি দিয়েছে। আমি সেটি উপাচার্য স্যারের কাছে ফরওয়ার্ড করেছি এবং তার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন, সে মোতাবেক আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ৫০তম ব য চ র আম দ র ফ সব ক

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত ম্যাচে পোস্টের নিচে মিতুলেই আস্থা কাবরেরার

ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে আগামীকাল বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। এ ম্যাচে বাংলাদেশের গোলপোস্টের নিচে থাকবেন মিতুল মারমাই। জাতীয় দলের প্রধান কোচ হাভিয়ের কাবরেরা আজ সংবাদ সম্মেলনে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন তা।

এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে চার ম্যাচেই পুরো সময় খেলেছেন মিতুল। তাঁর বিপক্ষে গোল হয়েছে সাতটি। সর্বশেষ ১৩ নভেম্বর নেপালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচেও খেলেছেন তিনি। সেই ম্যাচে শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে বাংলাদেশ ড্র করে। সমালোচনা হয়েছে মিতুলকে নিয়ে। অনেকেই ভেবেছিলেন ভারতের বিপক্ষে হয়তো পোস্টের নিচে বদল আসবে। আজ সংবাদ সম্মেলনে সে প্রশ্ন উঠতেই কাবরেরা শান্তভাবে উত্তর দিলেন, ‘না, মিতুলই খেলবে।’

ঢাকায় সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচে তাঁর বিপক্ষে গোল হয়েছিল দুটি। ম্যাচের চার দিন আগে বড় ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ পান মিতুল। সেই শোক নিয়েই মাঠে নামেন তিনি। ম্যাচ শেষে সমর্থকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘ভাই হারানোর শোক নিয়েও আমি দেশকে সেরাটা দেওয়ার দিকে মনোনিবেশ করি। চেষ্টা করেছি ম্যাচে অবদান রাখার, কিন্তু পারিনি। এ জন্য দুঃখিত ও ক্ষমা চাচ্ছি। এটা আমার জন্য সত্যিই কঠিন সময় ছিল। ভুলের জন্য আমাকে ক্ষমা করবেন। ব্যক্তিগত শোক ভুলে আবার মাঠে ফিরেছেন মিতুল। কোচও তাঁর ওপর আস্থা রাখছেন ধারাবাহিকভাবে।’

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ফুটবল দলের কোচ হাভিয়ের কাবরেরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ