ব্যস্ততম ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ধরে সাঁইসাঁই করে ছুটে চলে যানবাহন। এসব যানবাহনের যেসব চালক নিয়মিত সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করেন, যেন ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নের কসমচ এলাকায় এলে গতি বাড়িয়ে দেন। দ্রুত ওই এলাকাটি ছাড়তে পারলেই যেন বাঁচেন তারা। পৌরসভার ফেলা বর্জ্যের তীব্র দুর্গন্ধে আশপাশের বাতাসও যেন ভারী। 
কসমচ এলাকার ময়লার ভাগাড়ের পাশেই রয়েছে বসতবাড়ি, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মসজিদ। চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন আশপাশের বাসিন্দারা। ময়লার তীব্র গন্ধ তো আছেই, সঙ্গে আছে মশা-মাছির উপদ্রব। বাসিন্দারা নানা সময়ে এখানে ময়লা ফেলা বন্ধের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে উপজেলা ও পৌর প্রশাসনের কাছে জমাও দিয়েছেন। করেছেন লিখিত আবেদনও। কিন্তু এ পর্যন্ত মেলেনি কোনো সমাধান।
এসবি লিংকের একটি বাসের চালক মজিবুর রহমানকে ২২ জুন পাওয়া যায় কসমচ এলাকায়। তাঁর কোম্পানির বাসগুলো ঢাকা থেকে ধামরাই, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া হয়ে টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার মামুননগর পর্যন্ত চলাচল করে। মজিবুর বলেন, ‘ময়লার ভাগাড়ের পাশ দিয়ে যেতেই দুর্গন্ধ বাসের ভেতর ঢুকে পড়ে। এ সময় যাত্রীরা নাক-মুখ চেপে রাখেন। অনেক সময় আমরাও (চালক) চেপে রাখি।’ কিন্তু সবাই এই গন্ধ সহ্য করতে পারেন না জানিয়ে তিনি বলেন, অনেকে বমি করে দেন। অসুস্থ হয়ে পড়েন। দীর্ঘদিন ধরেই গন্ধের কারণে তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
পরিবহনের যাত্রী-চালকরা তো ওই এলাকা ছাড়তে পারলেই রক্ষা পান। কিন্তু স্থানীয় লোকজনের সেই উপায় নেই। কুল্লা-বান্দিমারা এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রশিদ, আওলাদ হোসেনসহ কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তারা বলেন, দুর্গন্ধের কারণে বাড়িতে থাকাই দায়। নাক-মুখ চেপে রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয়। দুর্গন্ধের কারণে অসহ্য যন্ত্রণা ভোগ করছেন। শিশুরা পড়াশোনার জন্য বিদ্যালয়ে যেতে চায় না। মসজিদে নামাজ পড়তে যেতেও অসুবিধা হয়। পৌরসভা কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের দাবি, ময়লার ভাগাড়টি যেন সরিয়ে অন্য জায়গায় নেওয়া হয়।
এই পথেই নিয়মিত যাত্রী নিয়ে চলাচল করেন অটোরিকশা চালক সোহরাব হোসেন। তিনি বলেন, ‘এখানে প্রচুর গন্ধ, মাঝেমধ্যে গন্ধের কারণে স্টিয়ারিং ধরব, নাকি নাক চেপে ধরব– তা নিয়েও দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যাই। এতে দুর্ঘটনার ভয়েও থাকি।’
সম্প্রতি গ্রামবাসীর পক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে এসব বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন আনোয়ার হোসেন সুজন। তিনি বলেন, পৌরসভার ময়লা এখানে ফেলার কারণে প্রচুর দুর্গন্ধ হয়। আশপাশের বাড়িতে মানুষের থাকতে অসুবিধা হয়। মশা-মাছি গিয়ে খাবারে বসে। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকির কথাও জানান। আনোয়ার হোসেনও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মসজিদে যেতে লোকজনের সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
ধামরাইয় পৌরসভার প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা ইউএনও মামনুন আহমেদ অনীকের ভাষ্য, পৌর এলাকার বাসা-বাড়ির ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য নিজস্ব কোনো জায়গা নেই। যে কারণে বাধ্য হয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে ফেলা হয়। তিনি ওই এলাকার লোকজনের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। ভাগাড়টি সরিয়ে নেওয়ার জন্য জায়গা খোঁজা হচ্ছে। সেটি পাওয়া গেলেই স্থানীয় লোকজনের দুর্ভোগ কমতে পারে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ল কজন র এল ক র ময়ল র প রসভ

এছাড়াও পড়ুন:

নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, নারী নিহত

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুরের রাজৈরে যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের খাদে পড়ে এক নারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) মধ্যরাতে রাজৈর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হন তারা। 

নিহত নিলুফা ইয়াসমিন নিলা (৩০) বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার রুনসী গ্রামের আবুল বাসারের স্ত্রী।

আরো পড়ুন:

গাজীপুরে ডাম্পট্রাকের ধাক্কায় অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত

অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কা, মা-মেয়ে নিহত

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুয়াকাটা থেকে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল চন্দ্রা পরিবহনের বাসটি। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের রাজৈর বাসস্ট্যান্ড পার হওয়ার পর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি সড়কের পাশের খাদে পড়ে যায়।  পরে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে নিলার মরদেহ উদ্ধার করে। আহত হন অন্তত ২০ জন। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

মাদারীপুরের মস্তফাপুর হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, বাস খাদে পড়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করা হয়। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। একজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। নিহত নারীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঢাকা/বেলাল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ