যশোরে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিওভুক্তের দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের মানববন্ধন
Published: 2nd, July 2025 GMT
১৫ বছর ধরে প্রতিবন্ধী শিশুদের পাঠদান করছেন নিখিল চক্রবর্তী। তবে সরকারিভাবে তিনি কোনো বেতন–ভাতা পান না। এর ফলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন কাটছে তাঁর। যশোর, মাগুরা, নড়াইল ও ঝিনাইদহের বিভিন্ন প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদেরও একই অবস্থা। প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্তির দাবিতে আজ বুধবার তাঁরা মানববন্ধন করেছেন। এ ছাড়া একই দাবিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন।
আজ সকাল সাড়ে ১০টায় প্রেসক্লাব যশোরের সামনে যশোর, মাগুরা, নড়াইল ও ঝিনাইদহের বিভিন্ন প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে অন্তত ৬০০ শিক্ষক-কর্মচারী ও অভিভাবকেরা মানববন্ধন করেন। পরে তাঁরা জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলামের কাছে স্মারকলিপি দেন। এ সময় জেলা প্রশাসক তাঁদের আশ্বাস দেন, এটি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবেন।
নিখিল চক্রবর্তী মনিরামপুর অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। স্মারকলিপি দেওয়ার সময় তিনি বলেন, ‘১৫ বছর ধরে বিনা বেতনে প্রতিবন্ধী শিশুদের পাঠদান করে যাচ্ছি। কোনো বেতন–ভাতা সরকার থেকে পাই না। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে অত্যন্ত মানবেতর জীবন কাটছে। অন্য চাকরিতে যাওয়ার মতো বয়স ও শারীরিক সক্ষমতা নেই। প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে কাজ করার লক্ষ্যে শিক্ষকতা শুরু করেছিলাম। সরকার স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও দিচ্ছে না। এটা আমাদের জন্য অনেক কষ্টের।’
বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদ যশোর কমিটির উদ্যোগে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এ সময় শিক্ষক, কর্মচারী ও অভিভাবকেরা বিভিন্ন দাবি–সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দেন। তাঁরা বলেন, ‘দাবি মোদের একটাই, প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিও চাই’, ‘প্রতিবন্ধী অবহেলা নয়’, ‘ন্যায্য অধিকার চাই, প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অধিকার চাই’।
মানববন্ধনে সংগঠনটির যশোর শাখার সাধারণ সম্পাদক আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমরা সারা দেশে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় ও পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলোর মাধ্যমে অন্তত ১০ বছর ধরে প্রতিবন্ধী শিক্ষা, থেরাপি ও জীবন দক্ষতা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। কিন্তু প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলো স্বীকৃতি ও অনুমোদনে সরকার উদ্যোগ নিচ্ছে না।’ শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি মানা না হলে বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচি গড়ে তোলা হবে বলে জানান তিনি।
মানববন্ধনে জানানো হয়, যশোরে প্রায় ১২ হাজার প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর জীবনমান পরিবর্তন ও শিক্ষাদানে ১ হাজার ২০০ শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন। আর সারা দেশে প্রতিবন্ধীদের ১ হাজার ৭৭২টি অস্বীকৃত বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে প্রায় দুই লাখ নানা ধরনের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। এখানে শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার। এমপিওভুক্ত না হওয়ায় এসব শিক্ষক–কর্মচারী আর্থিকভাবে দুরবস্থার মধ্য দিয়ে দিনযাপন করছেন। অনেকে দীর্ঘদিন বিনা বেতনে কাজ করছেন। তাঁরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সংগঠনের যশোর জেলা শাখার সভাপতি রাজু আহমেদ, সহসভাপতি আবদুল সালাম, সহসম্পাদক মুক্তারুজ্জামান, প্রচার সম্পাদক মমতাজ খাতুন প্রমুখ। পরে তাঁরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে জেলা প্রশাসনের কার্যালয় চত্বরে যান।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চলনবিলে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার কলেজছাত্রী
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার যুবক আরিফ হোসেনের সঙ্গে রায়গঞ্জের এক কলেজছাত্রীর পরিচয় হয় ফেসবুকে। এরপর তারা প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। বেড়ানোর কথা বলে ওই কলেজছাত্রীকে গত ২১ জুন তাড়াশের হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কের পাশে চলনবিল এলাকায় ডাকেন আরিফ। সেখানে কৌশলে একজনের বাড়িতে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করা হয়। ঘটনার ছয় দিন পর ২৭ জুন আরিফের নামে তাড়াশ থানায় ধর্ষণ মামলা করেন ভুক্তভোগী।
আরিফের বাড়ি তাড়াশের মাগুড়াবিনোদ ইউনিয়নে। তাড়াশ থানার ওসি জিয়াউর রহমান সমকালকে জানান, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
সাতকানিয়ায় কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় বিয়ের কথা বলে কিশোরীকে (১৭) ধর্ষণের অভিযোগে শহিদুল ইসলাম শিহাব নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার রাতে তাকে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধর্ষণের ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা সোমবার তার বিরুদ্ধে সাতকানিয়া থানায় মামলা করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, দেড় বছর আগে শহিদুলের সঙ্গে ওই কিশোরীর পরিচয় হয়। এ সম্পর্ক পরে প্রেমে রূপ নেয়। এক পর্যায়ে তারা একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে জড়ায়। কিন্তু বিয়ের কথা বললে শহিদুল অস্বীকৃতি জানান। এ জন্য থানায় মামলা করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জে ধর্ষণ মামলায় কারাগারে পুলিশ সদস্য
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে ধর্ষণ মামলায় আইনুল হক নামের এক পুলিশ সদস্যকে মঙ্গলবার কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। এর আগে সোমবার রাতে ওই ছাত্রী বাদী হয়ে আইনুলের বিরুদ্ধে ধর্মপাশা থানায় মামলা করেন। আইনুলের বাড়ি সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায়। তিনি ধর্মপাশা থানায় কনস্টেবল হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন।
এদিকে কুমিল্লার মুরাদনগরে গৃহবধূকে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের ঘটনাসহ দেশব্যাপী অব্যাহত নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাজবাড়ীতে মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়েছে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ রাজবাড়ী জেলা শাখার উদ্যোগে বিকেলে শহরের মিলেনিয়াম মার্কেটের সামনে প্রধান সড়কে এ মানববন্ধন হয়।
(সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধির পাঠানো তথ্য)