কলম্বোতে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল ঢাকায় তেমনটা নেই। সেবার ১-১ সমতায় ছিল তিন ম্যাচের সিরিজ। এবার বাংলাদেশ ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে।
পরিস্থিতি, পরিবেশ সম্পূর্ণ ভিন্ন। শ্রীলঙ্কাকে শেষ ম্যাচে হারিয়ে সিরিজ জিতেছিল লিটনের দল। পাকিস্তানকে টানা দুই ম্যাচ হারিয়ে সিরিজ নিশ্চিত হয়েছে আগেই। এবার লড়াইটা হোয়াইটওয়াশের।
গত মে-জুনে পাকিস্তান সফরে লাহোরে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ। হতশ্রী পারফরম্যান্সে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছিল। লাহোরে নিজেদের সেই ভরাডুবি পেরিয়ে মাথা উচুঁ করে ঘরের মাঠে পারফর্ম করছে বাংলাদেশ। লাহোরের বদলা ঢাকাতে নিয়ে মুখিয়ে বাংলাদেশ।
এবারের সিরিজসহ বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টিতে সিরিজ জিতেছে ১৭টি। যার ৯টিতে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করতে পেরেছে। যেখানে ১ ম্যাচের সিরিজও আছে। পাকিস্তানে আজ তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে হারাতে পারলে সংখ্যাটা দুই অঙ্কে নিয়ে যেতে পারবে বাংলাদেশ। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ৬টায় এই মিশনেই মাঠে নামবে স্বাগতিকরা।
সামনেই এশিয়া কাপ। এর আগে এটিই হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। লিটনের কাছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার শেষ সুযোগ হতে যাচ্ছে এটি। যদিও সিরিজ শুরুর আগে তিনি জানিয়েছিলেন, জয়ের ধারাবাহিকতায় থাকা, টিম কম্বিনেশনে পরিবর্তন করার কাজ করবেন না। যদিও দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে তানজিদের জায়গায় নাঈমকে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান কাজে লাগাতে পারেননি। আজও তিনি সুযোগ পাবেন এমনটাই মনে হচ্ছে। এছাড়া পেস বোলিংয়ে মোস্তাফিজুর রহমানকে বিশ্রাম রাখতে পারে টিম ম্যানেজমেন্ট। এছাড়া খুব বেশি পরিবর্তনের সুযোগ নেই। নিজেদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার থেকে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করার চ্যালেঞ্জটাই নিয়েছে দল।
দুই ম্যাচে তেমন রান হয়নি। প্রথম ম্যাচে আগে ব্যাটিং করে পাকিস্তান ১১০ রানে গুটিয়ে যায়। দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ করে ১৩৩ রান। শেষ ম্যাচে রান হবে কী না সেটা বিরাট প্রশ্নের। তবে এখন পর্যন্ত এই সিরিজে যা করেছেন শুধুই বোলাররা। যদিও দুই ম্যাচে ম্যাচ সেরার পুরস্কার পেয়েছেন দুই ব্যাটসম্যান, পারভেজ হোসেন ইমন ও জাকের আলী। উইকেট বোলারদের জন্য দুহাত ভরে দিলেও ব্যাটসম্যানদের কঠিন পরীক্ষা নিচ্ছে।
পাকিস্তানের জন্য এই ম্যাচটা বেশ মর্যাদার। তারা যা হারানোর এরই মধ্যে হারিয়েছে। শেষ ম্যাচটিও যদি হেরে যায় ষোলোকলা পূর্ণ হবে। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে রমিজ রাজা তাদের কড়া সমালোচনা করেছেন, ‘‘ম্যাচ ও সিরিজ—দুটিই পাকিস্তানের হাত থেকে ফসকে গেছে। বাংলাদেশকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। তারা আবারও পাকিস্তানকে একটা শিক্ষা দিল। কীভাবে কঠিন উইকেটে আপনার ব্যাটিং-বোলিং করা উচিত (সেটা শিখিয়েছে)।’’
বাংলাদেশের পারফরম্যান্সের বেশ প্রশংসাও করেছেন ৬২ বছর বয়সী রমিজ, ‘বাংলাদেশকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। মাঠে ভরপুর দর্শক ছিল, আত্মবিশ্বাসও ছিল তুঙ্গে। পাশাপাশি ওদের ব্যাটিং তৃপ্তিদায়ক ছিল। বিশেষ করে জাকের আলী দারুণ ব্যাটিং করেছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের সামগ্রিক পারফরম্যান্স খুবই সন্তোষজনক ছিল। পাকিস্তানকে এখন হার থেকে শিক্ষা নিতে হবে এবং এগিয়ে যাওয়ার জন্য অনেক কিছু করতে হবে।’’
টেস্ট ও ওয়ানডেতে ব্যর্থতার ভরাডুবি টি-টোয়েন্টি দল ভুলিয়ে দিয়েছে অনেকটাই। পাকিস্তানকে শেষ ম্যাচে হোয়াইটওয়াশ করতে পারলে আত্মবিশ্বাস নিশ্চিতভাবেই আরো বাড়বে। মিরপুরে সেই প্রত্যাশাতেই থাকবে পুরো বাংলাদেশ।
ঢাকা/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হ য় ইটওয় শ
এছাড়াও পড়ুন:
৪২ বছর পর নিউ জিল্যান্ডের কাছে হোয়াইটওয়াশ ইংল্যান্ড
১৯৮৩ সাল আবার মনে করাল ইংল্যান্ড। নিউ জিল্যান্ডে গিয়ে সেবার ইংল্যান্ড ৩-০ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল। ৪২ বছর পর একই অভিজ্ঞতা হলো এবার তাদের।
আগেই সিরিজ নিশ্চিত করা নিউ জিল্যান্ড এবার আরো চেপে ধরেছিল ইংল্যান্ডকে। তবুও লড়াই করে ওয়েলিংটনে অতিথিরা ২২২ রানের পুঁজি পায়। হোয়াইটওয়াশের মিশনে থাকা নিউ জিল্যান্ডের ব্যাটিং তেমন ভালো হয়নি। লো স্কোরিং ম্যাচ জমে উঠে। শেষ পর্যন্ত ৪৪.৪ ওভারে হাতে ২ উইকেট রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় কিউইরা। ১৯৮৩ সালের পর প্রথম নিউ জিল্যান্ড ইংল্যান্ডকে ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ করল।
টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ইংল্যান্ড চরম বিপর্যয়ে পড়ে। ৯৭ রানে ৬ উইকেট হারায় তারা। ১০২ রানে তাদের শেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান জস বাটলার (৩৮) আউট হন। তখন ধারণা করা হচ্ছিল অল্পতেই গুটিয়ে যাবে সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
কিন্তু সেখানে ঢাল হয়ে দাঁড়ান ব্রাইডন চার্স ও জেমি ওভারটন। দুজন ৫৮ রানের জুটি গড়েন। যেখানে ব্রাইডন আক্রমণাত্মক ক্রিকেট উপহার দিয়ে ৪ ছক্কা ও ১ চারে ৩০ বলে ৩৬ রান করেন। ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ রানের জুটি আসে তাদের ব্যাটেই।
শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে ওভারটন আউট হন ৪১তম ওভারে। ৬২ বলে ১০ চার ও ২ ছক্কায় ৬৮ রান করেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এর আগে জেমি স্মিথ (৫), বেন ডাকেট (৮), জো রুট (২) ও হ্যারি ব্রুক (৬) দ্রুত আউট হন। দলের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে দুই অঙ্কের ঘরে যেতে পারেন পাঁচ নম্বরে নামা জ্যাকব মিচেল। তবুও ১১ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি।
নিউ জিল্যান্ডের বোলিং ছিল নিয়ন্ত্রিত। ৬৪ রানে ৪ উইকেট নিয়ে সেরা ছিলেন ব্লায়ার টিকনার। ৩ উইকেট পেয়েছেন জ্যাকব টাফি। ২টি পেয়েছেন জ্যাক ফলকস।
জবাব দিতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৭৮ রান পায় কিউইরা। ডেভন কনওয়ে ৩৪ ও রাচীন রাভিন্দ্রা ৪৬ রান করেন। এরপর ছন্দ হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় স্বাগতিকরা। কিন্তু ডার্ল মিচেলের অনবদ্য ৪৪ ও শেষ দিকে মিচেল স্টানারের ২৭ রানে নিউ জিল্যান্ড লড়াইয়ে ফেরে। শেষ দিকে জ্যাক ফলকসের ১৪ ও ব্লায়ার টিকনারের ১৮ রানে নিউ জিল্যান্ডের জয় নিশ্চিত হয়।
ইংলিশদের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন ওভারটন ও স্যাম কারান।
এই সিরিজে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং একটুও ভালো হয়নি। প্রথম ম্যাচে ২২৩ ও দ্বিতীয়টিতে ১৭৫ রানে গুটিয়ে যায়। নিউ জিল্যান্ড জয় পায় যথাক্রমে ৪ ও ৫ উইকেটে। শেষ ম্যাচে খানিকটা প্রতিদ্বন্দ্বীতা গড়লেও হোয়াইটওয়াশ এড়াতে পারেনি ইংল্যান্ড।
বল হাতে ৪ উইকেট ও ব্যাটিংয়ে ১৮ রান করে ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন টিকনার। ১৭৮ রান করে সিরিজ সেরা ডার্ল মিচেল।
ঢাকা/ইয়াসিন