আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রথম ধাপে ৩৬টি আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে গণ অধিকার পরিষদ। এ তালিকায় দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ের নেতাও আছেন। দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এটি প্রাথমিক তালিকা, পর্যায়ক্রমে বাকি আসনগুলোতেও প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।

রাজধানীর পুরানা পল্টনে গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে এ তালিকা ঘোষণা করেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন। এ সময় দলটির সভাপতি নুরুল হক নুর, সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ঘোষিত তালিকা অনুযায়ী, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক পটুয়াখালী-৩, সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান ঝিনাইদহ-২, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ফারুক হাসান ঠাকুরগাঁও-২ এবং জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন নেত্রকোনা-২ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

এ ছাড়া দলের গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ কিশোরগঞ্জ–১, দপ্তর সম্পাদক শাকিল উজ্জামান টাঙ্গাইল-২, উচ্চতর পরিষদ সদস্য হানিফ খান রংপুর-১, শহিদুল ইসলাম পটুয়াখালী-১, নুরে এরশাদ সিদ্দিকী কুড়িগ্রাম-৩, আশরাফুল বারী হবিগঞ্জ-৩, খালিদ হাসেন খুলনা-৫ এবং কবীর হোসেনকে টাঙ্গাইল-৬ আসনের জন্য প্রার্থী করা হয়েছে।

এ তালিকায় রয়েছেন দলের সহসভাপতি ইব্রাহিম রওনক (ঢাকা-৫), গোলাম সরওয়ার খান (পাবনা-২), মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান (মুন্সিগঞ্জ-১), শফিকুল ইসলাম (কিশোরগঞ্জ-২), মীর মো.

শাহজাহান (রাজশাহী-১) ও ওয়াহেদুর রহমান (নারায়ণগঞ্জ-৩); যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুন নাহার (চট্টগ্রাম-৯), আইন সম্পাদক শেখ শওকত হোসেন (ঢাকা-১৯), সহপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সোহাগ হোসাইন (নীলফামারী-৩), শিল্প–বাণিজ্য ও বৈদেশিক বিনিয়োগবিষয়ক সহসম্পাদক মো. ইমরান খান (পিরোজপুর-৩) এবং সদস্য জাহিদুর রহমান (সিলেট-৬) ও মহিউদ্দিন ইউসুফ (বরগুনা-১)।

তালিকায় আরও রয়েছেন ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন (টাঙ্গাইল-৭), ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান ভূঁইয়া (ঢাকা-১৩), চট্রগ্রাম দক্ষিণ জেলার আহ্বায়ক এমদাদুল হাসান (চট্রগ্রাম-১২), মানিকগঞ্জ জেলার সহসভাপতি মোহাম্মদ ইলিয়াস হোছাইন (মানিকগঞ্জ-১), গাইবান্ধা জেলার সহসভাপতি মো. সুরুজ্জামান (গাইবান্ধা-৩), বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ (চট্টগ্রাম-১৪) এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মুনতাজুল ইসলাম (সাতক্ষীরা-১)।

এ তালিকায় থাকা বাকিরা হলেন আবদুজ জাহের (নোয়াখালী-৪), আবদুর রহমান (গাজীপুর-২), আবদুল কাদের (কক্সবাজার-১), রবিউল হাসান (পটুয়াখালী-৪) এবং নাছরিন আক্তার (চট্টগ্রাম-৩)।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।

এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।

এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।

সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।

আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।

শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্‌ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।

পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাকায় আওয়ামী লীগ ও দলটির অঙ্গসংগঠনের ১২ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার
  • ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের