রবির ডিপিপি’র দ্রুত অনুমোদনের দাবিতে মানববন্ধন
Published: 26th, July 2025 GMT
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের (রবি) স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে ডিপিপি’র দ্রুত অনুমোদন ও পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। এর আগে, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের সব কর্মসূচি বয়কট করে।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকাল ১০টায় তারা পৃথকভাবে এ মানববন্ধন করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী অ্যাকাডেমিক ভবন-৩ এর সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্যাম্পাস নির্মাণে ডিপিপির অনুমোদন ও বাস্তবায়নে বিলম্বের বিষয়ে হতাশা ও ক্ষোভের কথা জানান।
আরো পড়ুন:
মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: আয়মানকে দাদার পাশে দাফন
নতুন বাংলাদেশে কেউ প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়: নাহিদ ইসলাম
কর্মকর্তাদের মধ্যে সহকারী রেজিস্ট্রার শেখ আল মাসুদ বলেন, “বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের রচয়িতা নোবেল বিজয়ী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামাঙ্কিত বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্যাম্পাস নির্মাণে ডিপিপি’র অনুমোদনের দাবিতে আমাদের রাজপথে দাঁড়াতে হয়েছে, এটি হতাশার। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করি।”
সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান ইয়াতসিংহ শুভ বলেন, “এ পর্যন্ত এই ডিপিপি সাতবার সংশোধন করা হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন বিভাগ যখন যে তথ্য-প্রমাণ চেয়েছে, আমরা সরবরাহ করেছি। ইতোমধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, বাংলাদেশ হাওড় ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ছাড়পত্র এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক ১০০ একর ভূমি ব্যবহারে অনাপত্তিপত্র ডিপিপি’র সঙ্গে সরবরাহ করা হয়েছে। এতকিছুর পরও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপিপি’র অনুমোদন না হওয়ায় আমাদের মনে নানা শঙ্কার জন্ম দিয়েছে। আমরা মনে করছি, এর পিছনে কোনো স্বার্থান্বেষী মহল জড়িত আছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ও অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, “আজ প্রাণের প্রতিষ্ঠান রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিক। দিনটি উদযাপনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে আজ একটি আনন্দঘন দিন হতে পারত। অথচ আমরা আজ রাজপথে অবস্থান নিয়েছি।”
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপিপি অনুমোদনে সরকারের উদাসীনতা আমাদের আজ এখানে দাঁড় করিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপিপি অনুমোদন না হওয়া পর্যন্ত আমরা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করব না। আমরা দীর্ঘ ৯ বছর ধরে ধুঁকছি, আর নয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জমিতে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে এমন টালবাহানা গ্রহণযোগ্য নয়।”
পৃথকভাবে আয়োজিত শিক্ষার্থীদের মানবন্ধনে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জাকারিয়া বলেন, “আমাদের রক্তের ওপর দিয়ে এই সরকার ক্ষমতায় এসেছে। দীর্ঘ ৯ বছর ধরে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভাড়া করা ভবনে চলছে। এটি কেবল আমাদের জন্য নয়, সমস্ত দেশের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য লজ্জার। আমরা এর আগেও রাজপথে ক্যাম্পাসের দাবি জানিয়েছি। সরকারের আশ্বাসে আমরা শ্রেণিকক্ষে ফিরে এসেছিলাম। তবে এবার সমাধান না নিয়ে রাজপথ থেকে আমরা ফিরছি না। আমাদের কর্মসূচি কঠোর থেকে কঠোরতর হবে।”
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মিরাজ বলেন, “বাংলাদেশের ব্যবস্থা হয়েছে ঠেলাগাড়ির মতো, ধাক্কা না দিলে চলে না। একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যলয়ের ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের রাস্তায় নামতে হয়, এটি সভ্য সমাজের জন্য লজ্জার। আমাদের ডিপিপি একনেকে অনুমোদন পায়নি উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসানের জন্য। একনেক সভার সকলেই ডিপিপি অনুমোদনে সম্মত হলেও তিনি জানালেন, প্রস্তাবিত প্রকল্প অঞ্চল পরিদর্শন করে তার মত জানাবেন।”
তিনি বলেন, “উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান সরেজমিনে প্রস্তাবিত প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে গেলেন এবং প্রতিবেদন জমা দিলেন। এরপর একটির পর একটি একনেক সভা পেরিয়ে যায়, আমাদের ডিপিপি এজেন্ডাভুক্ত হয় না। এর জন্য এই উপদেষ্টাই দায়ী। আমরা ডিপিপি’র অনুমোদন চাই এবং এই উপদেষ্টার পদত্যাগ চাই।”
এ সময় উপস্থিত শিক্ষার্থীরা ডিপিপি’র দ্রুত অনুমোদন ও অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের পদত্যাগ চেয়ে স্নোগান দেন।
ঢাকা/হাবিবুর/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র র উপদ ষ ট র জন য আম দ র র জপথ
এছাড়াও পড়ুন:
ডিপিপির দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি রবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের (রবি) স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে ডিপিপি’র দ্রুত অনুমোদন ও পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
রবিবার (২৭ জুলাই) সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বিসিক বাসস্ট্যান্ডে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন নাসিম উদ্দিন মালিথা পরিষদের নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, শাহজাদপুরের নেতৃবৃন্দ, শাহজাদপুর সচেতন নাগরিক ফোরামের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীগণ।
আরো পড়ুন:
সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ফল প্রকাশে ধীরগতি, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা
ঢাবির হলে অধূমপায়ীদের কক্ষে ধূমপায়ীদের সিট দেওয়া হবে না
সকাল সোয়া ১০টায় আন্দোলনকারীরা বিসিক বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে।
শাহজাদপুর শাখা জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান আজকের একনেক সভায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের ডিপিপি অনুমোদন করে ক্যাম্পাস নির্মাণের দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
শাজদাপুর সচেতন নাগরিক ফোরামের সভাপতি মির্জা হুমায়ুন বলেন, “রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের জন্য কোনো ভূমি অধিগ্রহণের দরকার নেই। রবীন্দ্রনাথের জমিতেই হবে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়। তারপরও ডিপিপি অনুমোদনে বাধা কোথায়? আমাদের দাবি, আজকের একনেক সভায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের ডিপিপি অনুমোদন করা হয়।”
মানববন্ধনে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এসএম হাসান তালুকদার, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুমন কান্তি বড়ুয়া ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমদ উপস্থিত হলে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড তাঁদের হাতে দেন।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, “অবিলম্বে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপিপির অনুমোদন ও পূর্ণ বাস্তবায়ন চাই- লেখা প্ল্যাকার্ড দেখিয়ে বলেন এই কথাই আমাদের বক্তব্য।”
পরে বেলা সোয়া ১১টায় পরবর্তী দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে সড়ক অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, আগামীকাল সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যকাডেমিক ভবন-৩ সংলগ্ন ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে প্রতীকী ক্লাস অনুষ্ঠিত হবে। একইসঙ্গে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দের মানববন্ধন চলমান থাকবে।
ঢাকা/হাবিবুর/মেহেদী