গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না হলে মানুষের কপালে অনেক দুর্ভোগ আছে: হাফিজ উদ্দিন আহমেদ
Published: 26th, July 2025 GMT
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না হলে দেশের মানুষের কপালে অনেক দুর্ভোগ আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। আজ শনিবার দুপুরে ভোলার লালমোহন উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা ও পৌর বিএনপির ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার পর দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসেছে। প্রফেসর ইউনূস দেশবরেণ্য ব্যক্তি। বিদেশে তাঁর অনেক পরিচিতি আছে। আমরা সব রাজনৈতিক দল তাঁকে সমর্থন দিয়েছি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমরা তাঁর কাছ থেকে যা আশা করেছিলাম, উপদেষ্টা পরিষদ কল্যাণকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি যাঁরা জুলাই–আগস্টে আহত হয়েছেন, হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন, তাঁদেরও উন্নয়ন করতে পারেন নাই। তাঁদেরও দেখতে যাওয়ার সময় তাঁদের নাই।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা লক্ষ করছি, আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে দেখছি, এই উপদেষ্টা পরিষদ আসন্ন নির্বাচনকে পেছানোর চেষ্টা করছে। তাদের মনের গোপন ইচ্ছা যে এই সরকার কমছে কম পাঁচ বছর থাকুক। কিন্তু এই সময়ে দেশের অর্থনীতি ক্রমেই নিচের দিকে যাচ্ছে। আহতদের চিকিৎসা পর্যন্ত দিতে পারছে না। রাত তিনটার সময় ঘোষণা দিচ্ছে, আগামীকাল পরীক্ষা স্থগিত। রাত তিনটায় কে শুনবে? কত মানুষের ভোগান্তি হয়। ছাত্রদের অভিভাবকদের কত অসুবিধা হয়, দরিদ্র অভিভাবকদের কত ধরনের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।’
সরকারের সমালোচনা করে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এরা জীবনে গ্রামে থাকে নাই, গ্রামের মানুষকে চেনে না। তাদের দুঃখকষ্ট বোঝে না। রাজনীতি সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা নেই। কোনোরকমে বসে আছে, কোনো দায়িত্ববোধ নেই। এভাবে তো একটা দেশ চলে না। নির্বাচন ছাড়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করার আর কোনো উপায় নেই। আশা করি, অতি দ্রুত, অল্প সময়ের মধ্যে, ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন দেবেন। জনগণ যাঁদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন, আমরা তাঁদের মাথা পেতে নেব। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না হলে এ দেশের মানুষের কপালে অনেক দুর্ভোগ আছে।’
পিআর পদ্ধতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘এখন দেশে সংস্কার প্রস্তাব চলছে। নানা ধরনের আঁতেলরা মনের মাধুরী মিশিয়ে সংস্কার প্রস্তাব দিয়েই যাচ্ছে। যারা এখনো বাংলাদেশ দেখে নাই, ধানগাছের তক্তা হয় কি না, বলতে পারে না। তারাও এখন একের পর এক সংস্কার প্রস্তাব দিয়ে যাচ্ছে। এই সংস্কারের একটা হলো পিআর পদ্ধতি বা আনুপাতিক হারে ভোট গ্রহণ।’
লালমোহন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক তাহারাত হাফিজের সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব শফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের রহমত উল্যাহ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীর, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক শফিউর রহমান, সদস্যসচিব রাইসুল আলম প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দ্রুত নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করুন: আকবর খান
ঢাকা-৮ আসনে দ্রুত নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান। তিনি বলেন, “ভোটের অধিকার জনগণের পবিত্র আমানত, এটি সচেতনভাবে প্রয়োগ করতে হবে।”
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা জননেতা সাইফুল হক-এর ঢাকা-৮ আসনে নির্বাচনী গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচিতে তিনি একথা বলেন।
গণসংযোগের শুরুতে ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাকের সভাপতিত্বে এক সংক্ষিপ্ত পথসভা হয়।
সেখানে আকবর খান বলেন, “নির্বাচন কমিশন ও সরকারকে অবিলম্বে ভোটের গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরিতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। গত কয়েকটি জাতীয় নির্বাচনে—২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে—ঢাকা-৮ আসনের বহু নাগরিক ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। যে তরুণের এখন বয়স ২৫ বা ২৬, তারা কখনো ভোট দিতে পারেনি, ভোট কী তা জানে না- এটি গণতন্ত্রের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়।”
তিনি আরো বলেন, “গত ১৬-১৭ বছর ধরে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি এবং আমাদের নেতা সাইফুল হক জনগণের ভোটাধিকারের আন্দোলনে রাজপথে সংগ্রাম করে আসছেন। এর জন্য জেল-জুলুম, নির্যাতন সহ্য করেও তিনি থেমে থাকেননি। ভোটাধিকার গণমানুষের দীর্ঘ লড়াই ও ত্যাগের ফসল। এই অধিকার ভুল ব্যক্তিকে নির্বাচিত করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।”
আকবর খান বলেন, “জননেতা সাইফুল হক গণমানুষের পরীক্ষিত নেতা। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের জনগণ যেন তাকে ভোট দিয়ে নিজেদের সুখ-দুঃখ, চাওয়া-পাওয়ার কথা ও দীর্ঘ বঞ্চনার ইতিহাস সংসদে তুলে ধরার সুযোগ করে দেন- এটাই আমাদের আহ্বান।”
গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচি বাংলাদেশ ব্যাংক এলাকা থেকে শুরু হয়ে মতিঝিল, কমলাপুর, ফকিরাপুল, কালভার্ট রোড হয়ে বিজয়নগরে এসে শেষ হয়। এতে শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।
কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা সিকদার হারুন মাহমুদ, মীর রেজাউল আলম, কবি জামাল সিকদার, ফাইজুর রহমান মুনির, বাবর চৌধুরী, মহানগর নেতা যুবরান আলী জুয়েল, সালাউদ্দিন, রিয়েল মাতবর, আরিফুল ইসলাম, মুজিবুল হক চুন্নু, গোলাম রাজিব, মাহমুদুল হাসান খান, ফয়েজ ইবনে জাফর, নান্টু দাস, শিবু মহন্ত ও হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
ঢাকা/এএএম/এস