সংস্কার কমিশন: ১৬টি বাস্তবায়িত, ৮৫টি চলমান
Published: 7th, August 2025 GMT
দুর্নীতি দমন ও প্রশাসনিক সংস্কারসহ বিভিন্ন খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে গঠিত ১১টি সংস্কার কমিশনের মধ্যে প্রতিটি তাদের প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জমা দিয়েছে। এসব প্রতিবেদনে উঠে আসা ১২১টি বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশের মধ্যে ১৬টি ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে, আর ৮৫টি সুপারিশ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সচিবালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টা ড.
তিনি বলেন, “১১টি সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট থেকে আইন উপদেষ্টা আশু বাস্তবায়নযোগ্য হিসেবে ১২১টি সুপারিশ চিহ্নিত করেছেন। এর মধ্যে ১৬টি পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়েছে। ৮৫টি বাস্তবায়নের কাজ চলছে। ১০টি সুপারিশ আংশিক বাস্তবায়িত হয়েছে এবং বাকি ১০টি সুপারিশ বাস্তবায়নযোগ্য কি না তা এখনো বিবেচনাধীন রয়েছে।”
আরো পড়ুন:
সচিবালয়ে প্রধান উপদেষ্টা, নজিরবিহীন নিরাপত্তা
শহীদ ও আহতদের স্মরণে সচিবালয়ে দোয়া
এর আগে সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কক্ষে উপদেষ্টা পরিষদের এ বৈঠক শুরু হয়, যা দুপুরের দিকে শেষ হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদে সচিবালয়ে এটি উপদেষ্টা পরিষদের দ্বিতীয় বৈঠক।
বৈঠক উপলক্ষে সচিবালয়ে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। প্রধান উপদেষ্টার আগমন উপলক্ষে সচিবালয়ের ১ নম্বর গেট ছাড়া সব গেট বন্ধ রাখা হয় এবং সাধারণ দর্শনার্থীদের প্রবেশ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়।
এর আগে গত বছরের ২০ নভেম্বর সচিবালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
উল্লেখ্য, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর বিভিন্ন খাতে শৃঙ্খলা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একাধিক সংস্কার কমিশন গঠন করে। দুর্নীতি দমন, জনপ্রশাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইন-শৃঙ্খলা, স্থানীয় সরকারসহ নানা বিষয়ে এসব কমিশন কাজ করে সুপারিশ প্রণয়ন করেছে।
ঢাকা/এএএম/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
পরিবেশ রক্ষায় জাতি হিসেবে আমরা ব্যর্থ হয়েছি: রিজওয়ানা হাসান
পরিবেশ রক্ষায় জাতি হিসেবে আমরা ব্যর্থ হয়েছি বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, পরিবেশ রক্ষায় আমাদের অগ্রাধিকার প্রকৃতিকেন্দ্রিক বা প্রকৃতিবান্ধব হয়নি।
বাংলাদেশের নদীগুলো ঘিরে সংকট রয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেছেন, ‘নদীগুলো মূলত জৈবিকভাবে মৃত। যখন ১৮০টি দেশের মধ্যে আপনার পরিবেশগত কার্যক্ষমতার র্যাংক ১৭৯; তখন সেটাকে ৫০ পর্যন্ত এগিয়ে নেওয়া অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। ১৭৯ থেকে ৫০, ৬০ বা ৭০-এ যাওয়া আসলেই খুব কঠিন। কিন্তু একবার আপনি এটিকে ৭০ পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারলে, সেখান থেকে দ্রুত অগ্রসর হওয়া সম্ভব। আমরা এখন ১৭৯-এ আছি, এটা দেখায়, আমরা ব্যর্থ হয়েছি, একটি জাতি হিসেবে সমষ্টিগতভাবে।’
‘রিভাইভিং ঢাকা’স রিভার্স: পলিসি অপশনস ফর সাসটেইনেবল ম্যানেজমেন্ট’ শীর্ষক নীতি সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। আজ সোমবার বেলা ১১টায় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) সিন্ডিকেট হলে এ সংলাপের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্স (এসআইপিজি)। সংলাপে নদীদূষণ নিয়ে একটি নিবন্ধ তুলে ধরা হয়। তাতে রাজধানীর নদীদূষণের কারণ, প্রতিকারসহ নানা বিষয় তুলে ধরা হয়।
উন্নয়ন চিন্তায় মৌলিক পরিবর্তন আনার ওপর জোর দেন পরিবেশ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আমরা ইকোসিস্টেম হত্যা করছি। আপনি যা হত্যা করছেন, সেটিকে আপনি জন্ম দিতে পারবেন না। আপনি সেটিকে পুনঃসৃষ্টি করতে পারবেন না। আপনি শত শত ট্যানারি কারখানা বানাতে পারবেন। আপনি আরেকটি বুড়িগঙ্গা তৈরি করতে পারবেন না।’
নদীব্যবস্থা পুনরুদ্ধার দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্ভব নয় উল্লেখ করে রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘এক-দেড় বছরের মধ্যে সমাধান খুঁজে পাওয়া আমাদের পক্ষে অসম্ভব।’ এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সরকারের আলোচনা চলছে বলেও জানান তিনি।
আজকের সংলাপে পরিবেশ উপদেষ্টা নদী রক্ষায় সরকারের কিছু কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে নদী পুনরুদ্ধার কাঠামো প্রণয়ন; নদীর তলদেশ পরিষ্কার করা, দূষক অপসারণ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা; নদীর পানি ও পরিবেশের গুণমান নিয়মিত নজরদারি এবং মানোন্নয়ন এবং পরিবেশগত সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজ করা। পাশাপাশি ভারত এবং নেপালের নদী পুনরুদ্ধারে উদাহরণ দিয়ে নদী এবং পরিবেশ রক্ষায় রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি নিশ্চিতের আহ্বান জানান তিনি।
চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন একেবারেই জরুরি কি না, এমন প্রশ্ন তুলে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘এগুলো রাজনৈতিক নেতাদের তৈরি করা হাইপ এবং আমরা শুধু শিখেছি সেই হাইপের বিপরীতে ডেলিভার করতে, যা তারা তাদের নিজস্ব অর্থনৈতিক স্বার্থে তৈরি করেছে।’ এর ফলে প্রাকৃতিক বন এবং হাতির করিডর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আজকের সংলাপে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন। এসআইপিজির পরিচালক অধ্যাপক শেখ তৌফিক এম হকের সঞ্চালনায় সংলাপে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমোডর আরিফ আহমেদ মোস্তফা প্রমুখ।