চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগে নিয়োগ পাওয়া দুই শিক্ষকের ডোপ টেস্টে (মাদক পরীক্ষা) পজিটিভ এসেছে। অর্থাৎ ওই দুই শিক্ষকের শরীরে মাদকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এতে তাঁদের নিয়োগ বাতিল হতে পারে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

আজ বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু তৈয়ব। জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ওই দুই প্রার্থী গতকাল বুধবার চিকিৎসা কেন্দ্রে ডোপ টেস্ট দিয়েছিলেন। তাঁদের ফলাফল পজিটিভ এসেছে। তাঁদের ইউরিনে ক্যানাবাইনয়েডস পাওয়া গেছে। অর্থাৎ গাঁজা জাতীয় মাদকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এটি তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, চলতি ৪ আগস্ট নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের তিন পদের বিপরীতে পরীক্ষা হয়েছিল। এতে প্রায় ৫০ জন প্রার্থী অংশ নিয়েছিলেন। তিন ধাপের এই পরীক্ষার পর তিনজন প্রার্থীকে চূড়ান্ত করেছিল কর্তৃপক্ষ। পরে গত শুক্রবার সিন্ডিকেটে এ নিয়োগের অনুমোদন হয়। নিয়মানুযায়ী নিয়োগ অনুমোদন হওয়ার পর চিকিৎসা সনদ দিয়ে প্রার্থীরা নিয়োগপ্রাপ্ত বিভাগে শিক্ষক পদে যোগদান করতে পারেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো পদে যোগদান করতে চিকিৎসা সনদের পাশাপাশি মাদক পরীক্ষার ফলাফলও দিতে হয়। এই নিয়ম সম্প্রতি চালু হয়েছে। এ পরীক্ষায় এ দুই প্রার্থীর ফলাফল পজিটিভ এসেছে। তবে দুই প্রার্থীকে আবারও মাদক পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনে যুক্ত একাধিক শিক্ষক।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ডোপ টেস্টে পজিটিভ আসার বিষয়টি তাঁরা শুনেছেন। পজিটিভ আসা কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো পদে যোগদান করতে পারবেন না। সেই হিসেবে ওই দুই প্রার্থীকে বাদ দেওয়া হবে।

তবে মাদকসংশ্লিষ্টতার এই অভিযোগ অস্বীকার করেন দুজনই। একজন আজ রাতে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগ থেকে মেধাতালিকায় প্রথম হয়েছেন। নিয়োগ পরীক্ষায়ও ১ নম্বর হয়েছেন। তিনি মাদক গ্রহণ করেন না। এটা ভুল।

অভিযোগ অস্বীকার করে অপরজন প্রথম আলোকে বলেন, এটা হতেই পারে না। তিনি জীবনেও মাদক নেননি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়কে চ্যালেঞ্জ করে আবারও পরীক্ষা দেবেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম আল ক পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতে থাকা লালনের গানের পাণ্ডুলিপি ফেরত চাইলেন কুষ্টিয়ার ডিসি

কুষ্টিয়ার আশ্রম থেকে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ৩১৪টি গানের মূল পাণ্ডুলিপি ভারতের কলকাতায় নিয়ে গিয়েছিলেন শিলাইদহের তৎকালীন জমিদার বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।  ঐতিহাসিক সেই গানের পাণ্ডুলিপি বর্তমানে দেশটির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার ভোলপুর শহরে অবস্থিত শান্তি নিকেতন রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পাণ্ডুলিপি ফেরত আনার দাবি জানাচ্ছিলেন লালন ভক্ত, অনুরাগী, অনুসারী ও গবেষকরা। তবে তা ফেরত পাওয়া যায়নি। 

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার লালন একাডেমিতে পাণ্ডুলিপিগুলো ফেরত চেয়েছেন। এ জন্য সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে লিখিত আবেদন দিয়েছেন তিনি। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) এ আবেদন পাঠানো হয়েছে।

লিখিত আবেদনে ডিসি উল্লেখ করেছেন, কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াস্থ লালন আশ্রম থেকে লালন শাহের গানের একটি খাতা কলকাতায় নিয়ে গিয়েছিলেন কুষ্টিয়ার শিলাইদহের তৎকালীন জমিদার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। যা বর্তমানে শান্তি নিকেতনে সংরক্ষিত আছে। প্রায় ১৩৫ বছরের পুরোনো উক্ত খাতায় লালন শাহের ৩১৪টি গান রয়েছে। ইতোপূর্বে শান্তি নিকেতন থেকে লালন শাহের গানের পাণ্ডুলিপির একটি অনুলিপি প্রেরণ করা হলেও, মূল পাণ্ডুলিপি সেখানেই রয়ে গেছে। 

প্রতি বছর লালন তিরোধান দিবস ও লালন স্মরণোৎসব উপলক্ষে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াস্থ লালন একাডেমিতে লক্ষ লক্ষ দেশ-বিদেশি লালন ভক্ত, অনুরাগী, অনুসারী ও লালন গবেষকদের আগমন ঘটে। তাদের সবার পক্ষ থেকে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের গানের মূল পাণ্ডুলিপি শান্তি নিকেতন থেকে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াস্থ লালন একাডেমিতে ফেরত আনার দাবি উঠেছে। তদুপরি সরকার ১৭ অক্টোবর লালন তিরোধান দিবসকে ‘ক’ শ্রেণির দিবস হিসেবে ঘোষণা এবং জাতীয়ভাবে পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় লালন তিরোধান দিবসের গুরুত্ব আরো বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভক্ত, অনুরাগী, অনুসারী ও লালন গবেষকদের দাবির প্রেক্ষিতে লালন গবেষণার কাজে ব্যবহারের জন্য ফকির লালন শাহের গানের মূল পাণ্ডুলিপি শান্তি নিকেতন থেকে সংগ্রহ করে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াস্থ লালন একাডেমিতে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। 

এমতাবস্থায় বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের গানের মূল পাণ্ডুলিপি শান্তি নিকেতন থেকে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াস্থ লালন একাডেমিতে ফেরত এনে সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন বলেন, “লালনের ৩১৪টি গানের মূল পাণ্ডুলিপি ফেরত আনার জন্য আমরা সার্বিকভাবে চেষ্টা করছি। আমরা কলকাতা থেকে সেগুলো দ্রুত কুষ্টিয়ায় ফেরত আনতে চাই। এ জন্য সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।” 

ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ