কাশিমপুরে ফাঁসির ৩ আসামির পালানোর চেষ্টা, রশি-বেল্ট উদ্ধার
Published: 8th, August 2025 GMT
গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনজন ফাঁসির আসামি পালানোর চেষ্টা করেছিলেন, যা নিয়ে জেল কর্তৃপক্ষ একটি মামলা করার পর বিষয়টি জানাজানি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাতে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার আসাদুর রহমান কোনাবাড়ী থানায় তিন আসামির পালানোর চেষ্টার বর্ণনা দিয়ে একটি মামলা করেন।
এজাহার অনুযায়ী, মৃত্যুদণ্ডের সাজায় বন্দি টাঙ্গাইল সদর থানার চৌবাড়িয়া এলাকার শাহাদাত হোসেন, জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থানার মাঝিনা এলাকার রনি মহন্ত ও কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী থানার দিয়াডাঙ্গা এলাকার নজরুল ইসলাম মজনু ওরফে মঞ্জু জেল থেকে পালানোর প্রস্তুতির নিয়েছিলেন।
মামলার বর্ণনা অনুযায়ী, গত ৫ আগস্ট রাত সোয়া ৮টার দিকে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে দায়িত্ব পালন করছিলেন সহকারী প্রধানরক্ষী মোখলেছুর রহমান। তিনি তমাল ভবনের নিচতলায় ১২ নম্বর কক্ষ থেকে দেয়ালে আঘাত করার শব্দ শুনতে পান।
৬ আগস্ট সকালে ওই কক্ষে তল্লাশি চালানো হয়। সেখান থেকে একটি লোহার পাত, দুই টুকরা রড, কম্বল কেটে বানানো ২৮ ফুট লম্বা একটি রশি, কম্বল দিয়ে তৈরি ২৫ ফুট লম্বা একটি বেল্ট, লোহার তৈরি দুটি আংটা, ১০ ফুট লম্বা একটি খুটিসহ বিভিন্ন উপরকরণ জব্দ করা হয়।
এসব উপকরণ কেন কক্ষে রাখা হয়েছে, তা নিয়ে সন্দেহভাজন বন্দিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে কারা কর্তৃপক্ষ। বন্দিরা বলেন, জেল থেকে পলানোর জন্য এসব উপরকরণ বানিয়েছিলেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তারা জেল থেকে পালাতেন অথবা পালানোর সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন।
কারা সূত্রে জানা গেছে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ওই তিন আসামি পালানোর অপেক্ষায় ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্টের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সুযোগ বুঝে তারা কারাগার থেকে পালিয়ে যেতেন।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সারা দেশের কারাগারগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে কারা সূত্রের খবর।
কোনাবাড়ী থানার ওসি সালাহউদ্দিন জানান, হাই সিকিউরিটি কারাগারের জেলার একটি এজাহার দায়ের করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ভোলাগঞ্জে সাদাপাথর লুট: ৬ দপ্তর ও বেলার কাছে নথি চেয়েছে দুদক
সিলেটের ভোলাগঞ্জে সাদাপাথর লুটপাটের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের খোঁজে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ নিয়ে ছয়টি সরকারি দপ্তর ও বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) কার্যালয়ের কাছে নথিপত্র চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে সংস্থাটি।
সম্প্রতি দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে পৃথকভাবে এসব চিঠি পাঠানো হয়। দুদকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
যে দপ্তরগুলোর কাছে নথি তলব করা হয়েছে, সেগুলো হলো সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়, জেলা প্রশাসন অফিস, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, কোম্পানীগঞ্জ থানা, খনিজ সম্পদ ব্যুরো ও খনিজ সম্পদ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় এবং বেলার সিলেট অফিস।
দুদক সূত্র জানায়, চিঠিগুলোয় যেসব তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ভোলাগঞ্জ এলাকায় খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি) যেসব তদন্ত করেছে, তার সত্যায়িত কপি ও তদন্ত কর্মকর্তাদের বিস্তারিত পরিচয়; কী পরিমাণ পাথর উত্তোলন বা আত্মসাৎ করা হয়েছে এবং কতটা অবশিষ্ট রয়েছে, তার তথ্য; পাথর উত্তোলনের কারণে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতির হিসাব; পাথর লুট নিয়ে বিএমডি থেকে দায়ের করা মামলার এজাহারের কপি, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার নাম ও গ্রেপ্তারকৃতদের তালিকা এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ও দায়ী সরকারি–বেসরকারি ব্যক্তিদের নাম।
আরও পড়ুনপাথর তোলায় রাজনৈতিক দলের ‘ঐকমত্য’, পরে লুট, ঘটল কীভাবে ১৪ আগস্ট ২০২৫এর আগে ৩ সেপ্টেম্বর দুদক জানিয়েছিল, ভোলাগঞ্জে সাদাপাথর লুটপাটে রাজনীতিবিদ ও সরকারি কর্মকর্তাসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলেছে। উপপরিচালক রাশেদুল হাসানের নেতৃত্বে একটি দল অনুসন্ধানের দায়িত্ব পেয়েছে।
দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, অভিযানে প্রাথমিক সত্যতা মেলায় অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। অপরাধের মাত্রা ও সংশ্লিষ্টতার ধরন বিবেচনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।