সাংবাদিক হত্যার বিচার দাবিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও মানবাধিকার সংগঠনের বিবৃতি
Published: 9th, August 2025 GMT
গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনসহ দুই দিনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঁচ ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় নিন্দা ও বিচারের দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সাংবাদিক ও মানবাধিকার সংগঠন। একই সঙ্গে এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে তারা। শুক্রবার পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ও বিবৃতিতে এসব দাবি জানানো হয়।
গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে স্থানীয় সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে (৩৮) কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তুহিন দৈনিক প্রতিদিনের কাগজে গাজীপুরের নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করতেন।
জনগণের নিরাপত্তা রক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার দাবি জানিয়ে গণসংহতি আন্দোলনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গত দুই দিনে পঞ্চগড়, গাজীপুর, নাটোর, মৌলভীবাজার ও সিলেটে পাঁচজনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে, যা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতির বহিঃপ্রকাশ। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যর্থতা। এই ব্যর্থতার দায় সরকার এড়াতে পারে না। অবিলম্বে হত্যাকাণ্ডগুলোর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।’
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘সাংবাদিক আসাদুজ্জামানকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, তাতে আমরা স্তম্ভিত। জুলাই অভ্যুত্থানের পরের বাংলাদেশেও এ রকম নৃশংসতা দেখতে হবে, তা কল্পনাও করা যায় না। সাংবাদিকদের নিরাপত্তা রক্ষায় সামগ্রিকভাবে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধী ও তাদের পেছনে থাকা রাজনৈতিক শক্তিকে আইনের আওতায় আনতে ব্যর্থ হলে গাজীপুরের পুরো পুলিশ ও প্রশাসনকে প্রত্যাহার করতে হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ‘সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতা গণতন্ত্র ও সুশাসনের জন্য বিপজ্জনক সংকেত। মনে রাখতে হবে, চব্বিশের জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের যে পরিণতি, নানা চাপের মধ্যেও তা এগিয়ে নিতে পেরেছেন এই সাহসী সাংবাদিকেরাই। ফলে সাংবাদিকদের ওপর এমন বর্বর হামলা কেবল ব্যক্তি নয়, বরং মুক্ত সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের অধিকারের ওপর সরাসরি আঘাত।’
এ ঘটনায় পুরো সাংবাদিক সমাজ নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে উল্লেখ করে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি সাজ্জাদ আলম খান ও সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘প্রকাশ্য দিবালোকে একজন সাংবাদিককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় পুরো দেশবাসী হতবাক। একটি সভ্য রাষ্ট্রে এমন হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ ঘটনা সাংবাদিকদের নিরাপত্তাহীনতার মুখোমুখি করেছে। গোটা সাংবাদিক সমাজ নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন।’
ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি জানিয়ে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এটি দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তার ওপর সরাসরি হামলা। এ ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রক শ র ওপর ঘটন য় এ ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
তীব্র অপুষ্টিতে ১২ হাজার শিশু
ফিলিস্তিনের গাজায় খাদ্যসংকটের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী শিশুরা। ইসরায়েলের অবরোধের কারণে খাবার না পেয়ে শিশুমৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে। জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) হিসাবে, গাজায় এখন পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় ১২ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে। আর চলতি বছরের শুরু থেকে অনাহারে মৃত্যু হয়েছে ৯৯ ফিলিস্তিনির। তাঁদের মধ্যে ৩৫ জনই শিশু।
শিশুদের দীর্ঘস্থায়ী অপুষ্টি নিয়ে সতর্ক করে জাতিসংঘ বলেছে, গাজায় পাঁচ বছরের নিচের ২ লাখ ৯০ হাজার শিশুর মধ্যে মাত্র ৮ হাজার ৭০০ শিশুকে প্রয়োজনীয় খাবার ও পুষ্টি উপকরণ সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে ডব্লিউএইচওর সদর দপ্তরে মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেন, জুলাই মাসে গাজায় পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় ১২ হাজার শিশুকে শনাক্ত করা হয়েছে, যারা তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে। এখন পর্যন্ত সংগ্রহ করা তথ্য অনুযায়ী, এটিই এক মাসে সর্বোচ্চসংখ্যক শিশুর অনাহারে থাকার ঘটনা।
তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস