বেইলি রোড অগ্নিকাণ্ডে আহত দোকানকর্মী নিজেই এখন তিন পিৎজা দোকানের মালিক
Published: 9th, August 2025 GMT
দিনটার কথা মনে পড়লে এখনো অসুস্থ হয়ে পড়ি। আগুন থেকে বাঁচতে পাঁচতলার টয়লেটে আশ্রয় নিয়েছিলাম আমরা তিন সহকর্মী। টয়লেটের জানালা ছিল বেশ বড়। সেটা খুলে কার্নিশে গিয়ে অবস্থান নিই। পাশের ভবন থেকে একজন ১০-১২ ফুট লম্বা পানি ছিটানোর একটা নরম পাইপ আমাকে ছুড়ে দেয়। জানালার গ্রিলের সঙ্গে বেঁধে সেটা বেয়ে নিচে নামার সময় ছিঁড়ে গেল। তিনতলায় এসির আউটডোরের ওপর পড়ে গেলাম। মাথায় প্রচণ্ড বাড়ি খেয়েছি, টের পেলাম। এরপর আরেকটা কার্নিশে ধাক্কা খেয়ে একেবারে নিচে গিয়ে পড়ি। দুই দফায় ধাক্কা খেয়ে নিচে পড়ার কারণেই হয়তো প্রাণে বেঁচে যাই। প্রায় এক মাস হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। মাথায় অন্তত ২০টি সেলাই পড়েছিল। পাঁজরের হাড়ও ভেঙে গিয়েছিল।
প্রায় তিন মাস শয্যাশায়ী ছিলাম। তখন শুয়ে শুয়ে ভাবতাম, বড় কোনো বিল্ডিংয়ে আর চাকরি করব না। বড় বিল্ডিং, বদ্ধ পরিবেশে রান্না—এসব শুনলেই তখন আতঙ্ক লাগত। সেই আতঙ্ক এখনো কাটেনি। তাই তখনই সিদ্ধান্ত নিলাম, নিজেই একটা ব্যবসা শুরু করব। ওই অগ্নিদুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরা দুই সহকর্মী শাকিল আর সিয়ামকে ব্যবসার পরিকল্পনার কথা জানালাম। তাঁরাও আমার সঙ্গে যুক্ত হতে চাইলেন। তিনজনেরই যেহেতু পিৎজা বানানোর অভিজ্ঞতা আছে, তাই পিৎজার দোকানই দেব ঠিক করলাম। সব মিলিয়ে আমাদের পুঁজি এক লাখ টাকা। আমার জমানো ৫০ হাজার আর বাকি ৫০ হাজার টাকা দিলেন শাকিল আর সিয়াম।
সাইফুল ইসলামের ‘পিৎজা ৪৮’.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকায় ইবির ২ শিক্ষক
বিশ্বসেরা ২ শতাংশ গবেষকদের তালিকায় বার্ষিক গবেষণা মূল্যায়ন ক্যাটাগরিতে স্থান পেয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দুইজন শিক্ষক।
তারা হলেন- বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান এবং কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান।
আরো পড়ুন:
রাবি উপ-উপাচার্যসহ শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
শোকজের সুযোগ না দিয়ে চাকরিচ্যুত করার দাবি ইবি অধ্যাপকের
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) আমেরিকার বিখ্যাত স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির মেটা রিসার্চ ইনোভেশন সেন্টারের (মেট্রিকস) এর গবেষক জন পিএ ইয়োনিডিস গবেষণা প্রকাশনার উপর ভিত্তি করে এলসিভিয়ার জার্নালে এই তালিকা প্রকাশ করেন।
এতে গবেষকদের প্রকাশনা, এইচ-ইনডেক্স, সাইটেশন ও অন্যান্য সূচকগুলো বিশ্লেষণ করে সেরা গবেষকদের তালিকাটি প্রস্তুত করা হয়। ওই প্রতিবেদনটিতে বিজ্ঞানীদের ২২টি বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্র এবং ১৭৪টি উপ-ক্ষেত্রে শ্রেণিবদ্ধ করে এ তালিকায় দুটি ধাপে সেরা গবেষক নির্ধারণ করা হয়েছে। এর একটি হল পুরো পেশাগত জীবনের ওপর, আরেকটি শুধু এক বছরের গবেষণা কর্মের ওপর।
গুগল স্কলারের তথ্য অনুযায়ী ড. মিজানুর রহমানের সাইটেশন সংখ্যা ৩ হাজার ৮৬টি এবং ড. হাবিবুর রহমানের সাইটেশন সংখ্যা ২ হাজার ৩৩৪টি।
এ অর্জনের বিষয়ে অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, “বিশ্বের শীর্ষ ২ শতাংশ গবেষকের তালিকায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি জায়গা থেকে আমার নাম আসাটা আমার জন্য সত্যিই অনেক আনন্দের ও গর্বের বিষয়। একইসঙ্গে এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এবং আমার বায়োটেকনোলজি বিভাগের জন্যও আনন্দের বলেই আমি মনে করি। এটি কেবল আমার একার অর্জন নয়, আমার সহকর্মী এবং শিক্ষার্থীদেরও অর্জন। আমি যেন এ সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারি এজন্য সবার দোয়া ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।”
সিএসই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান বলেন, “স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় (যুক্তরাষ্ট্র) এবং এলসেভিয়ার কর্তৃক প্রকাশিত বিশ্বের শীর্ষ ২ শতাংশ বিজ্ঞানীর তালিকায় স্থান পাওয়া শুধু আমার ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং এটি আমার বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশের জন্য একটি সম্মানের বিষয়। এটি প্রমাণ করে যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশ থেকেও বিশ্বমানের গবেষণা করা সম্ভব।”
তিনি বলেন, “এ স্বীকৃতির জন্য আমি সর্বপ্রথম আমার আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। পাশাপাশি আমার পরিবার, সহকর্মী, গবেষণা সহযোগী এবং শিক্ষার্থীদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে আরো উজ্জ্বলভাবে উপস্থাপন করতে ভবিষ্যতেও গবেষণা কার্যক্রমে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে চাই।”
স্ট্যানফোর্ড–এলসেভিয়ার টপ ২ শতাংশ বিজ্ঞানীদের তালিকা হলো বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত এক মানদণ্ড, যেখানে গবেষকদের অসাধারণ উদ্ধৃতি প্রভাব এবং দীর্ঘমেয়াদি একাডেমিক অবদানকে গুরুত্ব দিয়ে স্থান দেওয়া হয়। এলসেভিয়ার প্রতিবছর প্রায় ২ হাজারের বেশি জার্নাল প্রকাশ করে। প্রকাশিত জার্নালে নিবন্ধের সংখ্যা ২ লাখ ৫০ হাজারের বেশি এবং এর আর্কাইভে ৭০ লাখের বেশি প্রকাশনা রয়েছে।
ঢাকা/তানিম/মেহেদী