দিনটার কথা মনে পড়লে এখনো অসুস্থ হয়ে পড়ি। আগুন থেকে বাঁচতে পাঁচতলার টয়লেটে আশ্রয় নিয়েছিলাম আমরা তিন সহকর্মী। টয়লেটের জানালা ছিল বেশ বড়। সেটা খুলে কার্নিশে গিয়ে অবস্থান নিই। পাশের ভবন থেকে একজন ১০-১২ ফুট লম্বা পানি ছিটানোর একটা নরম পাইপ আমাকে ছুড়ে দেয়। জানালার গ্রিলের সঙ্গে বেঁধে সেটা বেয়ে নিচে নামার সময় ছিঁড়ে গেল। তিনতলায় এসির আউটডোরের ওপর পড়ে গেলাম। মাথায় প্রচণ্ড বাড়ি খেয়েছি, টের পেলাম। এরপর আরেকটা কার্নিশে ধাক্কা খেয়ে একেবারে নিচে গিয়ে পড়ি। দুই দফায় ধাক্কা খেয়ে নিচে পড়ার কারণেই হয়তো প্রাণে বেঁচে যাই। প্রায় এক মাস হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। মাথায় অন্তত ২০টি সেলাই পড়েছিল। পাঁজরের হাড়ও ভেঙে গিয়েছিল।

প্রায় তিন মাস শয্যাশায়ী ছিলাম। তখন শুয়ে শুয়ে ভাবতাম, বড় কোনো বিল্ডিংয়ে আর চাকরি করব না। বড় বিল্ডিং, বদ্ধ পরিবেশে রান্না—এসব শুনলেই তখন আতঙ্ক লাগত। সেই আতঙ্ক এখনো কাটেনি। তাই তখনই সিদ্ধান্ত নিলাম, নিজেই একটা ব্যবসা শুরু করব। ওই অগ্নিদুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরা দুই সহকর্মী শাকিল আর সিয়ামকে ব্যবসার পরিকল্পনার কথা জানালাম। তাঁরাও আমার সঙ্গে যুক্ত হতে চাইলেন। তিনজনেরই যেহেতু পিৎজা বানানোর অভিজ্ঞতা আছে, তাই পিৎজার দোকানই দেব ঠিক করলাম। সব মিলিয়ে আমাদের পুঁজি এক লাখ টাকা। আমার জমানো ৫০ হাজার আর বাকি ৫০ হাজার টাকা দিলেন শাকিল আর সিয়াম। 

সাইফুল ইসলামের ‘পিৎজা ৪৮’.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ময়মনসিংহে সহকর্মীকে হত্যার দায়ে পুলিশ দম্পতির ফাঁসির আদেশ

পুলিশ সদস্যকে হত্যার দায়ে এক পুলিশ দম্পতিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ময়মনসিংহের একটি আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক হারুন-অর রশিদ।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন কনস্টেবল মো. আলাউদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী কনস্টেবল নাসরিন নেলী। আলাউদ্দিনের বাড়ি ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার ভবানীপুর এলাকায়।

মামলার সংক্ষিপ্ত নথি সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে কনস্টেবল নাসরিন নেলীর সঙ্গে সহকর্মী কনস্টেবল সাইফুল ইসলামের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর জের ধরেই ঘটে হত্যাকাণ্ড। ওই বছরের আগস্টে ময়মনসিংহ শহরের কাঁচিঝুলি এলাকায় নেলীর ভাড়া বাসায় সাইফুল ইসলামকে খুন করেন নেলী ও তাঁর স্বামী আলাউদ্দিন। হত্যার পর তাঁরা সাইফুল ইসলামের লাশ বস্তাবন্দী করে গুম করার চেষ্টা করেন। তবে নগরীর টাউন হল মোড়ে পুলিশের তল্লাশির সময় বস্তাবন্দী লাশসহ হাতেনাতে ধরা পড়েন তাঁরা।

ওই ঘটনায় নিহত সাইফুল ইসলামের মা মুলেদা বেগম ২০১৪ সালের ১৩ আগস্ট ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানায় কনস্টেবল আলাউদ্দিন, তাঁর স্ত্রী নাসরিন নেলীসহ আরও দুজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। তদন্ত ও বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আদালত আজ আসামিদের উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন।

ময়মনসিংহ আদালত পরিদর্শক পিএসএম মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, হত্যা মামলায় দুজনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লকডাউনের দিনগুলোতে ভ্যাট–যুদ্ধ
  • ময়মনসিংহে সহকর্মীকে হত্যার দায়ে পুলিশ দম্পতির ফাঁসির আদেশ
  • ময়মনসিংহে সাবেক পুলিশ ও তার স্ত্রীর মৃত্যুদণ্ড